মানিকগঞ্জে বয়োঃসন্ধিকালীন প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত

মানিকগঞ্জ থেকে মো. নজরুল ইসলাম, আছিয়া এবং রিনা আক্তার

বয়োঃসন্ধিকালীন প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার বিষয়ে সচেতনতা ও সেবা সরবারহের জন্য সরকারি কার্যক্রমকে আরো বেগবান করার লক্ষ্যে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করে যাচ্ছে নিরলসভাবে। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক মানিকগঞ্জ জেলায় বিভিন্ন গ্রামে কৈশরকালীন প্রজনন স্বাস্থ্য ও নারীর স্বাস্থ্যগত ধারণা বিষয়ে সচেতনতামূলক কাজ করে আসছে।

40978501_680598915651287_541940120165548032_n
তারই ধারাবাহিকতায় গত ৪ ও ৬ সেপ্টেম্বর মানিকগঞ্জ জেলার সিংগাইর উপজেলার বায়রা ইউনিয়নের সানাইল গ্রামে ও সিংগাইর পৌরসভার আজিমপুর গ্রামের সমাজসেবক মো. রফিকুল ইসলাম ও মো. নুরু মোল্লার বাড়ির উঠানে কৈশরকালীন প্রজনন স্বাস্থ্য ও নারীর স্বাস্থ্যগত ধারণা বিষয়ক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে। কর্মশালায় নূরজাহান বেগম ও মুক্তা বেগমের সভাপতিত্বে ওই এলাকার নারীর সমস্যা ও প্রজননস্বাস্থ্য বিষয়ে স্বাগত বক্তব্য রাখেন বায়রা ইউনিয়নের সংরক্ষিত মহিলা সদস্য ঝর্ণা বেগম ও সিংগাইর পৌরসভার সংরক্ষিত কাউন্সিলর পারুল আক্তার। প্রশিক্ষক হিসেবে ভূমিকা পালন করেন বায়রা ইউনিয়ন সহকারী পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা খালেদা আক্তার ও সিংগাইর পৌরসভা সহকারী পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা জিয়াসমিন সুলতানা। এছাড়াও সহায়কের ভূমিকা পালন করেন বারসিক মাঠ সহায়ক আছিয়া আক্তার ও রিনা আক্তার প্রমুখ।

41046541_2161619467497857_2174155085670514688_n
কর্মশালায় অংশগ্রহণকারী ও সহায়কের মতামতের ভিত্তিতে প্রজনন সংক্রান্ত কিছু বিষয়ে ভালো ধারণা ও সবাইকে নিয়ে সচেতন হওয়ার প্রত্যয় করেন করেন নারীরা। অংশগ্রহণকারীরা গর্ভজনিত কারণে কোন কিশোরী বা নারীর জীবন ঝুঁিকপুর্ণ দিবেন না, এবং কাউকে জোর জবরদস্তি করে গর্বধারণ, বন্ধ্যাত্বকরণ ও গর্ভপাত করতে দেবেন না।
উল্লেখ্য. বিশ্বে উচ্চ মাত্রার শিশু বিবাহপ্রবণ দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। এদেশে ৬৫% কন্যাশিশুর ১৮ তম জন্মদিন পার হওযার আগেই বিয়ে হয়ে যায় এবং ২৯% বিয়ে হয় ১৫ বছরের আগেই। শিশুবিবাহ শিশুকে মৌলিক মানবাধিকার থেকে বঞ্চিত করে এবং তাদের জীবন জীবিকাকে জটিল ও কঠিন করে তোলে। কারণ অধিকাংশ শিশুর কৈশোরকালীন যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য অধিকার বিষয়ে পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই। এসব কিশোর কিশোরীদের নিজেদের জীবনে বয়োঃসন্ধিকাল না আসা পর্যন্ত বয়োঃসন্ধিকালের সাথে সম্পৃক্ত পরিবর্তনগুলো সম্পর্কে তেমন কিছুই জানা থাকে না। এছাড়া, মানব জীবনের অপরিহার্য বিষয় প্রজননতন্ত্র ও তার সুরক্ষা সর্ম্পকে ও তাদের ধারণা নেই বললেই চলে। যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা না থাকার কারণে বেশিরভাগ বাল্যবিবাহের শিকার কন্যাশিশুদের জীবন হয়ে ওঠে দুর্বিসহ। বাল্যবিবাহ কেবলমাত্র কন্যাশিশুর শিক্ষা নেতৃত্ব ও দক্ষতা সৃষ্টিতেই ব্যাঘাত ঘটায় না উপরোন্ত শিশুর প্রজনন স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি বয়ে আনে। গর্ভপাত মাতৃমৃত্যু, ঋতুজনিত জটিলতা এসবই বাল্যবিবাহের অন্যতম ফলাফল। যে কারণে অধিকাংশ শিশুই এক পর্যায়ে সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। যার মাশুল গুণতে হয় নারী-পুরুষ নির্বিশেষে আমাদের সকলকে এবং প্রজন্মান্তর ধরে।

happy wheels 2

Comments