সাম্প্রতিক পোস্ট

আমরাই প্রতিরোধ করব বাল্য বিবাহ

হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ থেকে মুকতার হোসেন

মানিকগঞ্জ হরিরামপুর উপজেলার চরাঞ্চল লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের নটাখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ে সম্প্রতি বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ বিষয়ক প্রচারণামূলক ক্যাম্পইন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ক্যাম্পইনে অংশগ্রহণ করে নটাখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭০০ শিক্ষার্থী, শিক্ষক, লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ ইমাম সোনামিয়া, এলাকার তরুণ যুবক, স্বেচ্ছা-সেবকটিমের সদস্য, এনজিও প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন পেশার মানুষ।

IMG_20190418_12ff
বারসিক’র সহযোগিতায় ক্যাম্পইনটি আয়োজন করে আলোর পথে সংগঠন, ওপেন ফ্রেন্ডস ক্লাব (মাদক বিরোধী সংগঠন) ঘিওর, পাটগ্রামচরের স্বেচ্ছা-সেবকটিম। ক্যাম্পইন অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা ‘বাল্য বিবাহকে লাল কার্ড’, ‘আর নয় নারী প্রতি বৈষম্য’, ‘১৮ বছরের বছরের নিচে কারো বিয়ে নয়’, ছেলে মেয়ে বিভেদ নয়’, ‘সবাইকে স্কুলে পাঠাই’, ‘মাদককে না বলুন’, ‘মাদকের বিরুদ্ধে সোচ্চার গড়ে তুলি’ নানান প্ল্যাকার্ড, ফেসটুন, ব্যানার, লিফলেট নিয়ে নটাখোলা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে নটাখোলা বাজার পর্যন্ত র‌্যালি পদক্ষিণ করে।

IMG_20190418_12kkk
র‌্যালি শেষে নটাখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ে হল রুমে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়ন ইউপি চেয়ারম্যান সৈয়দ হোসেন ইমাম সোনামিয়া। আলোচনায় তিনি বলেন, ‘আমার কাছে অনেক মেয়ের অভিভাবক অপ্রাপ্ত বয়স্ক ১৮ বছরের নিচে যাদের বয়স তাদের বিয়ের অনুমতি নেওয়ার জন্য আসে। আমি তাদের সরাসরি বলে দিয়েছি তাদের বিষয়ে আমি কোন ধরনের সুপারিশ করতে পারব না এবং কোন পরিবার যদি আমাকে দাওয়াত দেন সেখানে আমি অংশগ্রহণ করব না। চরাঞ্চলে নারী শিক্ষার্থীদের সরকার বিনামূল্যে বই পুস্তক দিচ্ছে, উপবৃত্তি প্রদান করছে। তাদের আর পিছিয়ে থাকলে চলবে না।’ তিনি আরও বলেন, ‘লেখাপড়া করার পাশাপাশি খেলাধুলা করা, যাতে কোন তরুণ মাদকে আসক্ত না হয়। সে বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতন হওয়া উচিত।’

IMG_20190418ss
নটাখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ‘বাল্য বিবাহ দেওয়ার নারীদের স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ে। মেয়েরাও যে লেখাপড়া করে সমাজের উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে সে বিষয়ে অভিভাবকদের সচেতনত হতে হবে। তাহলে চরাঞ্চলে বাল্য বিবাহের হার কমে যাবে।’ ওপেন ফ্রেন্ডস ক্লাবের সভাপতি মিজানুর রহমসান বলেন, ‘বাল্য বিবাহ এবং মাদক বর্তমান সমাজের ব্যাধি। ব্যাধিকে দূর করতে না পারলে আমাদের অগ্রযাত্রায় আমরা পিছিয়ে পড়ব।’ নটাখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী সুমাইয়া আক্তার বলেন, ‘আমাদেরকেই ভূমিকা নিতে হবে বাল্য বিবাহ প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে। বাবা মাকে আমাদের বুঝাতে হবে আমরাও লেখাপড়া করে বড় হতে চাই। আমাদের অল্প বয়সে বিয়ে দিয়ে জীবনের স্বপ্নকে যেন পিছিয়ে না দেয়। এক্ষেত্রে স্কুল, কলেজ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনগুলোসহ সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’

আলোচনায় আরও অংশগ্রহণ করেন নটাখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন, ওপেন ফ্রেন্ডস ক্লাবের সভাপতি মিজানুর রহমান হৃদয়, আলোর পথের সংঠনের সানি রহমান মিন্টু, বারসিক’র কর্মকর্তা শিমুল কুমার ও মুকতার হোসেন।

happy wheels 2

Comments