লিগ্যাল এইডের উদ্দেশ্য মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি করা নয়

বারসিকনিউজ প্রতিনিধি, মানিকগঞ্জ

“গরিব দুঃখীর মামলার ব্যয়, বাংলাদেশ সরকার দেয়” এ শ্লোগানকে সামনে রেখে সম্প্রতি মানিকগঞ্জ জেলা, উপজেলা ও ইউনিয়ন লিগ্যাল এইড কমিটির সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সিংগাইর উপজেলা চেয়ারম্যান আবিদুর রহমান খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমন্বয় সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন মানিকগঞ্জ জেলার বিজ্ঞ জেলা ও দায়রা জজ মো. মিজানুর রহমান খান। এছাড়া উক্ত সমন্বয় সভায় উপস্থিত ছিলেন হাছিনা রৌশন জাহান, বিজ্ঞ বিচারক, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, শারমিন নিগার, বিজ্ঞ চীপ জ্যুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট, রওশন জাহান, জেলা লিগ্যাল এইড অফিসার, মেহের উদ্দিন, এডিএম, আতাউর রহমান, সভাপতি, জেলা আইনজীবি সমিতি, সিংগাইর উপজেলা ভাইচ চেয়ারম্যান আনোয়ারা খাতুন, সিংগাইর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. যুবায়ের, উপজেলা ও ইউনিয়ন লিগ্যাল এইড কমিটির সদস্যবৃন্দ এবং বারসিক এর আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল রায় প্রমুখ।

IMG_20171026_162105

দুস্থ মানুষকে আইনি সহায়তা প্রদানে লিগ্যাল এইড কমিটির করনীয় বিষয়সমুহ নিয়ে সমন্বয় সভায় আলোচনা করা হয়। সেখানে লিগ্যাল এইড কমিটি কার্যকর রাখার বিষয়ে কিছু সীমাবদ্ধতার বিষয়গুলো তুলে ধরেন বিভিন্ন পর্যায়ের বক্তাগণ। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মিজানুর রহমান খান বলেন, “আমরা সকলেই সাংবিধানিক কারণে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ। তাই দায়িত্ব অবহেলা করার কোন সুযোগ নাই। তবে লিগ্যাল এইডের উদ্দেশ্য মামলার সংখ্যা বৃদ্ধি করা নয়। মূলত: জনগণের সাংবিধানিক অধিকার নিশ্চিত করা। তাই ২০১১ সালে উপজেলা এবং ইউনিয়ন পর্যায়ে যে সব লিগ্যাল এইড কমিটি হয়েছে সে সব কমিটি প্রতিমাসে একটি করে সভা করবেন এবং বিচার প্রার্থীদের অভিযোগ সংগ্রহ, তা জেলা লিগ্যাল এইড কমিটির নিকট প্রেরণ, আইনগত সহায়তার বিষয়টি জনগণকে অবহিত করা ও সচেতন করা।”

IMG_20171026_162924
ক্তাদের আলোচনার প্রেক্ষিতে জেলা লিগ্যাল এইউ অফিসার রওশন জাহান বলেন, “বাংলাদেশ সরকার ২০০০ সালের ২৬ জানুয়ারি আর্থিকভাবে অসচ্ছল, সহায় সম্বলহীন এবং নানাবিধ আর্থসামাজিক কারণে অসমর্থ্য বিচার প্রার্থী জনগণকে আইনগত সহায়তা প্রধানের আইন প্রনয়ন করেন। এর ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে উপজেলা এবং ইউনিয়ন লিগ্যাল এইড কমিটি গঠন করে এক লাখ টাকার নিচে বার্ষিক আয়ের বাংলাদেশের নাগরিকদের আইনগত সহায়তা প্রদান করে আসছে। আইনগত সহায়তা প্রদানের জন্য নিয়োগ দেওয়া হয়েছে জেলা পর্যায়ে প্যানেল আইনজীবী। তিনি বলেন, “আইনগত সেবা গ্রহণকারীর ব্যক্তির পছন্দমত আইনজীবী নিয়োগের মাধ্যমে জনগণকে আইনি সেবা প্রদান করা হয়ে থাকে। নিযুক্ত আইনজীবীর বিরুদ্ধে কোন ধরনের অবহেলার অভিযোগ আসলে জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের পক্ষ থেকে সঙ্গে সঙ্গে আইনজীবী পরিবর্তন করা হয়ে থাকে। তাছাড়া প্যানেল আইনজীবিদের উৎসাহিত পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে এবং বেতন ভাতা বৃদ্ধির সুপারিশ করা হয়েছে।”

IMG_20171026_170932

উপজেলা নির্বাহী অফিসার যুবায়ের বলেন, “লিগ্যাল এইড সেবার ফিডব্যাক থাকা প্রয়োজন অনুভব করছি। তাছাড়া ইউনিয়ন পর্যায় থেকে অনলাইনের মাধ্যমে আইনগত সেবার অভিযোগ ফরম পূরণের কোন উদ্যোগ নেওয়া যায় কিনা”? সিংগাইর উপজেলা চেয়ারম্যান আবিদুর রহমান খান বলেন, “সাধারণ উকিল এবং প্যানেল উকিলদের বেতনভাতার পার্থক্য আছে। সেক্ষেত্রে তাদের দায়িত্ব অবহেলোর সুযোগ রয়েছে।”

তালিবপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান রমজান আলী বলেন, “প্যানেল আইনজীবী দ্বারা জনগণ হয়রানি হয়ে থাকে। তাছাড়া উপজেলা পর্যায়ে বিচারিক সেবা সম্প্রসারিত করা যায় কিনা? লিগ্যাল এইড কমিটি পরিচালনার জন্য উপজেলা ইউনিয়ন পর্যায়ে কোন ফান্ড নাই। সেক্ষেত্রে কমিটি কার্যকর করা কষ্টকর।”

happy wheels 2

Comments