জনউদ্যোগে হরিনা খেয়া ঘাটে নির্মিত হলো যাত্রী ছাউনী
হরিরামপুর মানিকগঞ্জ থেকে মুকতার হোসেন
মানিকগঞ্জ জেলার হরিরামপুর উপজেলার দূর্যোগপ্রবণ সুতালড়ী, আজিমনগড় ও লেছড়াগঞ্জ ৩টি ইউনিয়নের মানুষের যাতায়াতের সুবিধার জন্য জনউদ্যোগে হরিণা ঘাটে নির্মিত হয়েছে টিনের যাত্রী ছাউনি ঘর। এলাকার মানুষ ও খেয়াঘাটের মাঝি, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং সমাজসেবক-এর সম্মিলিত উদ্যোগেই এ ছাউনী ঘরটি নির্মিত হয়েছে। যাত্রীরা বর্তমানে নিরাপদে এই ছাউনী ঘরে বিশ্রাম নিতে পারেন এবং প্রয়োজন হলে প্রাকৃতিক কাজ সারতে পারেন।
হরিরামপুর উপজেলার অর্ন্তগত সুতালড়ী, আজিমনগড় ও লেছড়াগঞ্জ ৩টি ইউনিয়নে বন্যা, খরা, নদী ভাঙন, ঝড়বৃষ্টি এবং বিভিন্ন প্রাকৃতিক দূর্যোগ নিত্যনৈমত্তিক ব্যাপার। এই তিনটি ইউনিয়নের বিভিন্ন পেশার মানুষ তথা শিক্ষক, ব্যবসায়ী, কৃষক, চাকুরিজীবী, শিক্ষার্থীকে প্রতিদিন এক ঘণ্টার ইঞ্জিনচালিত নৌকা করে নদী পার হয়ে পরবর্তীতে বিভিন্ন যন্ত্রযানে হরিরামপুর উপজেলা এবং মানিকগঞ্জ শহরে যেতে হয় তাদের প্রয়োজনী কাজ সেরে নিতে। কিন্তু কোন যাত্রী ছাউনী না থাকায় যাত্রাবিরতিতে তাদের চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। উপরোন্তু ঝড়-বৃষ্টির দিনে তাদের দুর্ভোগ চরমে উঠে।
এই পরিপ্রেক্ষিতে লেছড়াগঞ্জ চর উন্নয়ন কৃষক সংগঠন, এলাকার মানুষ ও খেয়াঘাটের মাঝি, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তি এবং সমাজসেবক-এর সহযোগিতায় স্থানীয় জনগোষ্ঠীর উদ্যোগে টিনের ছাউনী ঘর নির্মিত হয়। এ টিনের ছাউনি ঘর নির্মাণের পেছনে অনেক মানুষের অবদান ও উদ্যোগ রয়েছে। এর মধ্যে সমাজসেবক মো. জুবায়ের হোসেন নিজ অর্থায়নে যাত্রী ছাউনি নির্মাণে সহযোগিতা করেন। এভাবে প্রায় ৫০, ০০০ (পঞ্চাশ হাজার) টাকা ব্যয়ে হরিণা খেয়া ঘাটে ১৬ হাত দৈর্ঘ্য এবং ৮ হাত প্রস্থ টিনের যাত্রী ছাউনী, একটি পাকা ল্যাট্রিন নির্মিত হয়। এছাড়া একটি পুরাতন টিউবওয়েলও সংস্কার করা হয়। ঘরটি নির্মাণ কাজে এলাকার মাুনষ খেয়া ঘাটের মাঝি, ঘরের ভিটায় মাটি কাটা, খাসখুটি গাড়া এবং অন্যান্য কাজে স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে সহযোগিতা করেন। এই প্রসঙ্গে সমাজসেবক জুবায়ের হোসেন বলেন, “চরের মানুষের জন্য স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও জীবনমান উন্নয়নে কাজ করে যাবো।” যাত্রী ছাউনী বিষয়ে পাটগ্রাম চরের সিদ্দিক হোসনে (৪০) বলেন, “যাত্রী ছাউনী দেওয়ার ফলে এখন নারী-পুরুষ সবাই ঝড় বৃষ্টিতে, বর্ষা মৌসুসে সবাই প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত হতে রক্ষা পাবে। এখানে তারা বিশ্রামও নিতে পারেন এবং প্রয়োজনে প্রাকৃতিক কাজ সেরে নিতে পারেন।”
উল্লেখ্য যে, তিনটি ইউনিয়নের মানুষ প্রতিদিন সকাল ৬ ছয়টা থেকে বিকাল ৫.৩০ পর্যন্ত প্রতি ঘণ্টায় মোট ১০টি নৌকা করে নদী পার হয়ে পাটগ্রামচর হরিণাঘাট থেকে উঠে আন্ধারমানিক হরিরামপুর খেয়াঘাটে এসে নামতে হয়। প্রতিদিন এসব পথচারী মানুষ খেয়া ঘাটে নির্দিষ্ট কোন বসার কোন স্থান না থাকায় এলোমেলোভাবে ঘুরাঘুরি করতে হয়; যা নারী ও ছোট শিশুদের জন্য খুবই কষ্টদায়ক। নদীর ঘাট নিকটবর্তী ঘরবাড়ি না থাকার কারণে এসব মানুষদের প্রাকৃতিক কাজ সারতে বেশ সমস্যা হয়। তাছাড়া, বৈশাখ ও জ্যৈষ্ঠ মাসের ঝড়-বৃষ্টির সময় তাদেরকে আরও বেশি সমস্যায় পড়তে হয়। এসব মানুষের যাতায়াত এবং নিরাপদ বসার জন্য একটি যাত্রী ছাউনির প্রয়োজন। কিন্তু নানা বাহানায় এটি নির্মিত হচ্ছে না।