‘সোলার ভিলেজ’-এ আলোকিত ধূমঘাট গ্রাম

:: সাতক্ষীরা থেকে মননজয় মন্ডল

Untitsgfaledসাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার ৮নং ঈশ্বরীপুর ইউনিয়নের ধুমঘাট গ্রামটি এখন নবায়নযোগ্য জ্বালানির আলোয় আলোকিত। এই গ্রামটি বিদ্যুৎ সংযোগের বাইরে অবস্থিত। বিদ্যুৎ সংযোগবিহীন প্রান্তিক জনপদের কিছু কিছু পরিবার সোলার হোম সিস্টেম ব্যবহারের মাধ্যমে সৌর শক্তি ব্যবহার করলেও প্রায় অধিকাংশ পরিবার কেরোসিন পোড়ানোর মাধ্যমে আলোক শক্তি ব্যবহার করেন। তবে সোলার ভিলেজ প্রকল্পের মাধ্যমে এই গ্রামটি আজ আলোকিত।

ধুমঘাট গ্রামটিকে সৌরশক্তির আলোয় আলোকিত করার উদ্যোগটি খুব বেশিদিনের নয়। মূলত ‘সোলার ভিলেজ’নামক প্রকল্পের আওতায় এই পুরো গ্রামকে সৌরশক্তির মাধ্যমে আলোকিত করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার ও বেসরকারি সংস্থাগুলো। সম্প্রতি সাতক্ষীরা জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত একটি সভায় জেলা প্রশাসক নাজমুল আহসান ধুমঘাট গ্রামে ‘সোলার ভিলেজ’স্থাপনের ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, “বিদ্যুতের উপর চাপ কমানো এবং প্রত্যন্ত এলাকায় বিদ্যুৎবিহীন গ্রামে বিদ্যুৎ সুবিধা পৌছে দেওয়ার লক্ষ্যে ‘সোলার ভিলেজ’করা হবে। সেই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে ধুমঘাট গ্রামে সোলার ভিলেজ স্থাপন করা হয়।

বর্তমানে এ প্রকল্পের আওতায় ১১২টি পরিবারের মাঝে একটি করে ৩০ ওয়াটের সোলার সিস্টেম সহযোগিতা করা হয়। সরকারি ও বেসরকারি সমন্বিত উদ্যোগে প্রত্যন্ত জনপদের বিদ্যুৎবিহীন গ্রামে বিদ্যুৎ পৌছে দেওয়ার লক্ষ্যে ধূমঘাট গ্রামটিকে সোলার ভিলেজ করার মাধ্যমে বিদ্যুতের উপর চাপ কমবে একই সাথে নবায়নযোগ্য শক্তি ব্যবহারে মানুষের আগ্রহ ও উদ্দীপনা বৃদ্ধি পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

Untitsgfadvledএর আগে এই বছরের ২২ এপ্রিল শ্যামনগর উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরির হলরুমে নবায়নযোগ্য জ্বালানি বিষয়ক সংলাপ ও মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা বারসিক এর আয়োজনে অনুষ্ঠিত এই সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে শ্যামনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু সায়েদ মো. মনজুর আলম বলেন, “ধীরে ধীরে পৃথিবীতে অনবায়নযোগ্য জ্বালানি ফুরিয়ে যাচ্ছে। সরকার নবায়নযোগ্য জ্বালানির ব্যবহার বৃদ্ধির জন্য কাজ করছে। সূর্য শক্তিকে আমাদের ব্যবহার করতে হবে। জেলা ও উপজেলা প্রশাসন উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলার ধুমঘাট গ্রামটিকে সোলার ভিলেজ তৈরি করার পরিকল্পনা করছে। তিনি ‘সোলার ভিলেজ’প্রকল্পকে বাস্তবায়ন করতে সকলকে সহযোগিতা করার জন্য আহবান জানান।” মূলত এই আলোচনা ও চেষ্টার ধারাবাহিকতায় ধুমঘাট গ্রামে ‘সোলার ভিলেজ’স্থাপিত হয়েছে এবং উপকৃত হয়েছে এই গ্রামের ১১২টি পরিবার। এভাবে পর্যায়ক্রমে উপজেলার অন্যান্য বিদ্যুৎবিহীন গ্রামে সোলার ভিলেজ স্থাপনের মাধ্যমে জ্বালানি বিষয়ক সমস্যা দূর করা এবং বিদ্যুতের ওপর চাপ কমানো হবে।

দারিদ্র্য বিমোচন এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের জন্য অত্যাবশ্যক উপাদানসমূহের অন্যতম হলো জ্বালানি। গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ১৬ অনুচ্ছেদে বর্ণনা আছে, ‘‘গ্রাম ও শহরের জীবনযাত্রার মানের বৈষম্য ক্রমাগতভাবে দূর করার উদ্দেশ্যে গ্রামাঞ্চলে বৈদ্যুতীকরণ ও উন্নয়নের জন্য রাষ্ট্র কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করিবে”। সরকার ২০২০ সালের মধ্যে পর্যায়ক্রমে সমগ্র বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সেবা পৌঁছানোর জন্য ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা তৈরি করেছে। সোলার বিদ্যুৎ সম্ভাবনাকে বাস্তবায়ন করতে ২০০৩ সাল থেকে বিভিন্ন কোম্পানি কাজ করে আসছে। এরমধ্যে রয়েছে সরকারের প্রতিষ্ঠান ইডকল এবং অন্যান্য বেসরকারি সংস্থাগুলো।

happy wheels 2

Comments