বিষখালী নদীর ভাঙন রোধের দাবি
:: দেবদাস মজুমদার, বিশেষ প্রতিনিধি, উপকূল অঞ্চল
নদী উপকূলের জীবন। জীবিকারও উৎস নদী। নদীর বিশাল জলরাশি যখন ফুঁসে ওঠে তখন তীর ভাঙে। নদীর তীর ভাঙা জীবনে দুর্দশার সীমা থাকে না। নদীর প্লাবণে উপকূলের কৃষিজমি, ঘর বসতি বিলীন হলে মানুষ বিপন্ন। লবণ পানির আগ্রাসনে জলাবদ্ধ মাঠের ফসল মরে। যুগ যুগ ধরেই ভাঙছে নদীর তীর। নদী কেন্দ্রিক জীবনে এ এক বিপন্ন জীবনের খেলা। নদীর ভাঙন থেকে বাঁচতে বিপন্ন মানুষকে প্রকৃতির কাছে সমর্পিত থাকতে হয়। নদীর জলধারার ওপর শাসন চলে না। ভিটে মাটি তবু বাঁচাতে হবে। ফসল বাঁচাতে হবে। তাই মানুষের দাবি চলে রাষ্ট্রের কাছে। আর প্রকৃতির কাছে প্রার্থনা ।
বরগুনার বামনাা বিষখালী নদী তীরবর্তী রামনা ইউনিয়নে তীব্র নদী ভাঙনের কবল হতে কৃষিজমি ও মানুষের বসতি সুরক্ষার দাবিতে এলাকাবাসী মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে। সেই সাথে ভাঙন কবলিত স্থানে বিপন্ন কৃষকরা দুই হাত তুলে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা জানিয়েছেন। নদী ভাঙন রোধে বিপন্ন এলাকাকবাসী গত ২৫ নভেম্বর এ কর্মসূচি পালন করে।
বিষখালী নদী তীরের রামনা ইউনিয়নবাসীর উদ্যোগে ভাঙন কবলিত স্থানে ঘন্টাব্যাপী অনুষ্ঠিত মানববন্ধনে দুই সহস্রাধিক গ্রামবাসী মানববন্ধনে অংশ নেন। এ সময় বিপন্ন কৃষকরা ভাঙন রোধ ও জমির ফসলে জলোচ্ছ্বাস ও লবণের আগ্রাসনের হাত থেকে রেহাই পেতে নদী তীরে প্রার্থনা জানায়।
মানববন্ধন শেষে রামনা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নজরুল ইসলাম জমাদ্দারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তব্য দেন বামনা উপজেলা চেয়ারম্যান সাইতুল ইসলাম লিটু, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান গোলাম ফেরদৌস সাব্বির তালুকদার, নারী ভাইস চেয়ারম্যান নাজমুন্নাহার নাজু, ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর হোসেন মোল্লা প্রমূখ।
সভায় বক্তারা বিষখালী নদীর অব্যাহত ভাঙন হতে রামনা জনপদ ও মানুষের জীবন সুরক্ষার দাবি জানান।
উল্লেখ্য বরগুনার বামনা উপজেলার বিষখালী নদী তীরের রামনা এলকা কয়েকযুগ ধরে নদী ভাঙনে বিপর্যস্ত। গত কয়েকদিন ধরে ভাঙনের তীব্রতা আশংকজসক হারে বৃদ্ধি পাওয়ায় এলাবাসী আতংকিত হয়ে পড়েছেন।
রামনা গ্রামের জেলে মো. শাহ আলম জানান, ভাঙন রোধে এ যাবৎ কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। ইতিমধ্যে নদী ভাঙনে রামনা গ্রামের ১২০০ একর কৃষিজমি ও ৫০০ বসত বাড়ি নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। গত কয়েকদিন ধরে নদীর ভাঙনের তীব্রতা বৃদ্ধি পাওয়ায় রামনা গ্রামের এক কিলোমিটার বেড়িবাঁধের অর্ধেকাংশ নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। রামনা বেড়ি বাঁধটি যে কোন মূহুর্তে পুরো ধসে গিয়ে পাঁটি গ্রামে জলোচ্ছাসের আশংকা দেখা দিয়েছে।
এ বিষয়ে বরগুনা পানি উন্নয়ন বোর্ডে প্রকৌশলী মো এস.এম শহীদুল ইসলাম বলেন, “ভাঙন কবলিত এলাকা সম্প্রতি পরিদর্শন করে একটি প্রকল্প প্রস্তাবনা উর্ধ্বতন বরাবরে পাঠানো হয়েছে। তবে প্রকল্পটি অনুমোদন হয়নি। ফলে ভাঙন রোধে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না।”