প্রকৃতি ও বৈচিত্র্য সুরক্ষায় প্রতিবেশীয় বনায়ন উদ্যোগ
:: সাতক্ষীরা থেকে মননজয় মন্ডল::
সাতক্ষীরা জেলার উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলার ১০নং আটুলিয়া ইউনিয়নের বিড়ালক্ষ্মী গ্রামটি জনবহুল ও সুপ্রাচীন। খোলপেটুয়া নদীর তীর ঘেঁষা গ্রামটির নানামুখী সমস্যার মধ্যে নদী ভাঙন এ এলাকার মানুষের নিত্যসঙ্গী। নদী ভাঙন রোধ, নানা ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা, জ্বালানি সংকট নিরসন ও পরিবেশ/প্রতিবেশের ভারসাম্য সুরক্ষাসহ জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সম্প্রতি বিড়ালক্ষ্মী গ্রামের স্থানীয় জনগণ, বারসিক, উপজেলা সামাজিক বনায়ন অধিদপ্তর ও স্থানীয় সরকার এর যৌথ উদ্যোগে খোলপেটুয়া নদীর চরে কেওড়া, গোলপাতা, বাইন, কাঁকড়া, হরখোজা, পশুর ও খলিশা প্রভৃতি ম্যানগ্রোভ প্রজাতির ১০০০টি চারা রোপণ করা হয়। এ সময় স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ডা. এ কে এম আব্দুল হামিদ, ইউপি সদস্য মাজিদা বেগম, আটুলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগ এর সভাপতি কামরুল ইসলাম, ফরেষ্টার পিরামিন ইসহাক এবং বারসিক কর্মকর্তা বাবলু জোয়ারদার, রামকৃষ্ণ জোয়ারদার ও মননজয় মন্ডল সহ অর্ধ শতাধিক নারী পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় প্রজাতির বৃক্ষরোপণে অংশগ্রহণ করে বক্তারা বলেন, “আমাদের সমন্বিত উদ্যোগে এই বনায়ন রক্ষা করতে হবে। এই বন আমাদের প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা যেমন রক্ষা করবে, নদী ভাঙন রোধ করবে তেমনিভাবে জ্বালানি সংকট নিরসনসহ প্রাণবৈচিত্র্য সংরক্ষণ ও জলবায়ু দুর্যোগের হাত আমাদের রক্ষা করবে।” এছাড়া এই উদ্যোগের ফলে উপকূলী এলাকায় সবুজ বেষ্টনী তৈরিসহ প্রাণবৈচিত্র্য সুরক্ষা হবে বলে তারা মনে করেন।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা, বৈশ্বিক উষ্ণতা কমানো সর্বোপরি প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে বৃক্ষ সম্পদ ও বনায়নের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। দিনে দিনে জলবায়ু প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একটি অন্যতম প্রধান দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বাংলাদেশের নানাবিধ প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যে উপকূলীয় এলাকার নদীভাঙন একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সমস্যা। নদী ভাঙন রোধে স্থানভেদে স্থানীয় জনগোষ্ঠী নানামুখী উদ্যোগ গ্রহণ করে থাকে। স্থানীয় প্রজাতির বৃক্ষ রোপণটিও জনগোষ্ঠীর অন্যতম উদ্যোগ।