বরেন্দ্রের উন্নয়ন হোক তরুণ ও প্রবীণ সমন্বয়ে
:: রাজশাহী (বরেন্দ্র) প্রতিনিধি
আমরা তরুণ, আমরা যুবা। আমরাই পারি আমাদের বরেন্দ্র অঞ্চলকে সকল প্রাণের জন্য নিরাপদ ও বাসযোগ্য করে গড়ে তুলতে। গত ১২ ডিসেম্বর ‘আমার বরেন্দ্র, আমার উন্নয়ন’ এই স্লোগানকে সামনে রেখে তানোর উপজেলা চত্বরে চার জেলা ও ছয়টি উপজেলার তরুণদের সমন্বয়ে আয়োজিত বরেন্দ্র অঞ্চলের যুব সমাবেশে বরেন্দ্র এলাকার তরুণরা উপরোক্ত প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। বারসিক’র উদ্যোগে আয়োজিত এ সমাবেশে বর্ণাঢ্য র্যালি এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনায় বিভিন্ন যুব ও প্রবীণ সংগঠনের সদস্যরা তাঁদের বর্তমানের করণীয় ও আগামীর ভাবনা নিয়ে নিজস্ব মতামত তুলে ধরেন। বিভিন্ন শ্রেণি ও জনগোষ্ঠীর তরুণ ও প্রবীণ প্রতিনিধিরা বলেন, ‘বরেন্দ্রের উন্নয়ন হোক তরুণ ও প্রবীণদের সমন্বয়ে।’
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তানোর উপজেলা জাতীয় পরিবেশ পদক প্রাপ্ত আর্দশ কৃষক মো. ইউসুফ মোল্লা, জাতীয় কৃষিপদক প্রাপ্ত আর্দশ কৃষক নূর মোহাম্মদ, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক অভিজিৎ রায়, তানোসপরি সভাপতি অসীম কুমার সরকার, স্বপ্নচারী যুব সংগঠনের সভাপতি মো. রুবেল হোসেন, স্বপ্ন আশার আলো যুব সংগঠনের সভাপতি সবজুল হোসেন, বারসিক সমন্বয়কারী এবিএম তৌহিদুল আলম, সহযোগী সমন্বয়কারী মো. এরশাদ আলীসহ বারসিক বরেন্দ্র অঞ্চলের কর্মকর্তাবৃন্দ। অনুষ্ঠানে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, গাইবান্ধা এবং নওগাঁ জেলার ৬টি উপজেলার শতাধিক যুবক ও প্রবীণ ব্যক্তিরা অংশগ্রহণ করে বরেন্দ্র অঞ্চলের উন্নয়ন করার জন্য তাদের নিজস্ব মতামত ও সুপারিশ ব্যক্ত করেন।
তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ মুনীরুজ্জামান ভূঁঞা আনুষ্ঠানিকভাবে যুব সমাবেশটি উদ্বোধন করার পর বরেন্দ্র অঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে আগত তরুণরা বরেন্দ্র অঞ্চলকে উন্নয়ন করার জন্য এবং এই অঞ্চলকে সব ধরনের প্রাণ ও প্রকৃতির জন্য বাসযোগ্য করে তোলার জন্য তাদের করুণীয় এবং চলমান উদ্যোগগুলো তুলে ধরেন। তারা বলেন, “আমরা, তরুণরা থেমে নেই, আমরা আমাদের গ্রামকে নিরক্ষরমুক্ত করার জন্য কাজ করছি, আমাদের গ্রামের সনাতন ধর্মালম্বীদের সৎকারের জায়গার জন্যে কাজ করছি, নিজেদের এলাকার হারিয়ে যাওয়া খেলাধুলাগুলো আবার চর্চার মাধ্যমে ফিরে আনার জন্য চেষ্টা করছি।” তারা বলেন, “আমরা গ্রামের পুকুরে বিষ প্রয়োগে বাধা দিয়েছি। আমরা বিষমুক্ত খাবারের জন্যে লড়াই করছি। আমরা আমাদের শিব নদী দখল ও দূষণমুক্ত করতে নানাভাবে তদ্বির করছি। আমরা আমাদের প্রাকৃতিক খাদ্য সম্ভার রক্ষায় স্কুল কলেজ এবং কৃষক সংগঠনে সচেনতামূলক আলোচনা করছি। গ্রামের দরিদ্র এবং মেধাবী শিক্ষার্থীরা যাতে তাদের লেখাপড়া চালিয়ে যেতে পারে সে জন্য যৌথভাবে সহায়তা করছি। এলাকার খাল-খাড়ি খননে সরকারি এবং বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সাথে সংলাপ করছি।” সমাবেশে বরেন্দ্র এলাকার উন্নয়নের জন্য সামগ্রিকভাবে কাজ ও অবদান রাখার জন্য বিভিন্ন জেলা থেকে আগত তরুণরা একটি সমন্বিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছেন। তাদের কর্মপরিকল্পনায় প্রাণ-প্রকৃতি এবং প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষাসহ পরিবেশ, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অঙ্গনে যে ধরনের সমস্যা রয়েছে সে সব সমস্যাগুলো সমাধনের বিভিন্ন ধরনের কর্মসূচি পালন করবে।