সংস্কার হলে সাঁথিয়ার ক্ষেতুপাড়া জমিদার বাড়িটি পর্যটন কেন্দ্র হতে পারে
জালাল উদ্দিন, সাঁথিয়া, পাবনা থেকে
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার ঐতিহাসিক ক্ষেতুপাড়া জমিদার বাড়িটি দীর্ঘদিন সংস্কার না করায় ভেঙ্গে চুড়ে লতাপাতায় ছেয়ে গেছে। বর্তমানে বাড়িটি ধ্বংসের দ্বার প্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছে। অথচ ১০ বিঘা জমির উপর তৈরি এই বাড়িটি সংস্কার করলে এখানে গড়ে উঠতে পারে পর্যটন কেন্দ্র।
জনশ্রুতি রয়েছে, আজ থেকে প্রায় ৩শ’ বছর আগে ভারত থেকে নব কুমার নামে এক জমিদার এ দেশে এসে সাঁথিয়া উপজেলার ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নের গোলাবাড়ি গ্রামে অবস্থান নেন। সেখানে তিনি একটি বাড়ি নির্মাণ করে ১৫৪টি তৌজি নিয়ে তার জমিদারিত্ব পরিচালনা করতে থাকেন।
জমিদার নব কুমার রায় মারা যাবার পর তাঁর একমাত্র পুত্র পার্বতী চরণ রায় ৬০ বছর এখানে জমিদারী করেন। জমিদার নব কুমার সম্বন্ধে তেমন কিছু জানা না গেলেও তার একমাত্র পুত্র পার্বতী চরণ রায় সম্বন্ধে জানা যায়, তিনি ভারতের কাশীতে বিয়ে করেন। বিবাহিত জীবনে চারপুত্র সন্তানের জনক ছিলেন তিনি। পুত্রগণ হলেন হেমন্ত রায়, রামাচরণ রায়, শ্যামা চরণ রায় এবং বামা চরণ রায়। পার্বতী চরণ রায় মারা যাবার পর তিন পুত্র ভারতে চলে গেলেও এক পুত্র শ্যামা চরণ রায় সাঁথিয়াতেই থেকে যান। শ্যামা চরণ রায় মারা যাবার পর তার একমাত্র পুত্র দীপক কুমার রায় সংসারের দায়িত্বভার গ্রহণ করেন।
এক পর্যায়ে দীপক কুমার রায় জমিদার বাড়িটি বিক্রয় করার ঘোষণা দিলে বর্তমানে সিরাজগঞ্জ জেলার শাহজাদপুরের সন্ধ্যা রানী বাড়িটি ক্রয় করেন। বর্তমানে বাড়িটিতে সন্ধ্যারানী ও তার স্বামী জ্ঞানেন্দ্রনাথ তালুকদারের ৪ পুত্র উত্তম কুমার তালুকদার, গৌতম কুমার তালুকদার, অরুন কুমার তালুকদার এবং অলক কুমার তালুকদার বসবাস করছেন। জানা যায়, সন্ধারানী বাড়িটি ক্রয় করার পর ১৯৩৮ সালে একবার বাড়িটি সংস্কার করা হয়েছিল। বর্তমানে বাড়িটিতে বসবাসকারীরা অর্থাভাবে বাড়িটি সংস্কার করতে পারছেননা।
বাড়িটি সংস্কার করা না হলে অচিরেই হারিয়ে যাবে ঐতিহাসিক এই জমিদার বাড়িটির শেষ চিহ্নটুকু এবং হারিয়ে যাবে সম্ভাবনাময় এই পর্যটন কেন্দ্রটি। উল্লেখ্য, এই জমিদার বংশের অন্যতম প্রাণ পুরুষ শ্যামা চরণ রায় একজন বিদ্যানুরাগী ও সমাজ সেবক ছিলেন। তিনি বর্তমান সাঁথিয়া উপজেলা সদরের সাঁথিয়া পাইলট উচ্চ বিদ্যালয়, সাঁথিয়া কামিল মাদ্রাসাসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জায়গা দান সহ অনেক সেবামূলক কাজ করে গেছেন।