‘আমাদের পিঠার নাম, ঐতিহ্য হারানো যাবে না’- অধ্যাপক মতীন্দ্র চন্দ্র সরকার

‘আমাদের পিঠার নাম, ঐতিহ্য হারানো যাবে না’- অধ্যাপক মতীন্দ্র চন্দ্র সরকার

নেত্রকোনা থেকে মো. অহিদুর রহমান

গ্রামীণ মানুষের জীবনে পিঠা একটি বিশেষ স্থান দখল করে আছে। পিঠা বানানো ও সবার মাঝে বিতরণ একটি আনন্দ, একটি উৎসব, একটি পার্বণে পরিণত হয়েছে গ্রামবাংলায়। মূলত শীতকালেই পিঠা তৈরির প্রবণতা বেশি দেখা যায়। পিঠা তৈরির নানান উপলক্ষ্যও রয়েছে গ্রামে। বস্তুত নবান্নের পরপরই ঘরেঘরে চলে পিঠার নাড়াচড়া। গ্রামের নারীদের মনে জাগে পিঠা বানানোর পালাও! তবে পিঠা বানানোর উপলক্ষ্য হিসেবে জামাই, নতুন জামাই, বেয়াই ও বেয়ানসহ অন্যান্য আত্মীয়স্বজন আগমণকেও ধরা যায়। নেত্রকোণায় গ্রামীণ মানুষেরা প্রতিবছরই নবান্নের শেষে বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরি করে থাকেন।

pitha-2
এই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি নেত্রকোনা অঞ্চলের গ্রামীণ নারীরা তাদের জ্ঞান, দক্ষতা ওঅভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন ধরনের পিঠা তৈরি করেন। তৈরি পিঠা নিয়ে তারা নেত্রকোনা জেলার মালনি রোডে ইন্দ্রমোহন বিদ্যাপিঠের আয়োজনে ও সমকাল সুহৃদ সমাবেশের সহায়তায় দিনব্যাপী পিঠা উৎসবে তাদের তৈরি পিঠা প্রদর্শন করেন। পিঠা উৎসবে উপস্থিত ছিলেন বুদ্ধিজীবী অধ্যাপক মতীন্দ্র চন্দ্র সরকার, এনটির সাংবাদিক ভজন দাস, বিটিভির সাংবাদিক শিমুল মিল্কী, সাংবাদিক লাভলু পাল, বারসিক’র আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. অহিদুর রহমান, মগড়া একাডেমির পরিচালক সুস্তির সরকার প্রমূখ। পিঠা উৎসবে হরেক রকমের পিঠার প্রদর্শনী দেখে প্রধান অতিথির ভাষণে মতীন্দ্র সরকার বলেন, “আমাদের পিঠার একটা সংস্কৃতি আছে। মাসভিত্তিক, মৌসুমভিত্তিক নারীরা পিঠা বানান এবং পর্ব পালন করেন। পিঠা দোকানে পাওয়া যায় না, পিঠা তৈরি করতে হয়। নারীরা আপনা থেকেই তা শিখে। আমাদের পিঠার নাম, ঐতিহ্য হারানো যাবে না।”

মেলায় ২১ জন নারী পিঠা প্রদর্শন করেন। প্রদর্শিত পিঠাগুলোর মধ্যে রয়েছে ভাপা, পুলি, নকশী, মেরা, পোয়া, পাটিসাপটা, গোলাপ, তেলের, সয়াই, মেরা, কড়কইরা, কাটা, শিরকাটা, পাপড়, সিংগারা, সেমাই পিঠা, লালপুলি, তিলপিঠা, লুচি, পাপড়া, সোয়াই, কলা পিঠা উল্লেখযোগ্য। পিঠার বৈচিত্র্যতা দেখে দর্শকরাও মুগ্ধ। অনুষ্ঠান শেষে সবাই একসাথে পিঠা খেয়ে, বিনিময় করে আনন্দে উৎসবে মেতে উঠেন।

happy wheels 2

Comments