দুর্যোগ মোকাবেলা তরুণদের এগিয়ে আসতে হবে

হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ মুকতার হোসেন

হরিরামপুর উপজেলা লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নে স্বেচছা-সেবকটিমের ৩০জন সদস্য নিয়ে ২দিনব্যাপি ‘দুর্যোগ ঝুঁকি হ্রাস ব্যবস্থাপনা বিষয়ক প্রশিক্ষণ কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। উক্ত প্রশিক্ষণ কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের জলবায়ু স্বেচ্ছাসেবক টিমের সদস্য, যাদের মধ্যে রয়েছে স্কুল, কলেজের শিক্ষার্থী, এলাকার সামাজিক সংগঠনের সাথে যুক্ত যুবকরা, কেজি স্কুল, প্রাইমারি স্কুল ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ। বারসিক’র উদ্যোগে সম্প্রতি প্রশিক্ষণ কর্মশালাটি অনুষ্ঠিত হয় হরিরামপুরের লেছড়াগঞ্জের নটাখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ে। প্রশিক্ষণে অংশগ্রহনকারীরা দুর্যোগ, ঝুঁকি, আপদ, বিপদাপন্নতা, সক্ষতা বিষয়ে ধারণা অর্জন করেন।

হরিরামপুর উপজেলার মধ্যে লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়ন একটি দুর্যোগপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। প্রতিবছর বন্যা, খরা, অতিবৃষ্টি, বজ্রপাত, নদীভাঙনসহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক হয়। দুর্যোগের ফলে ফসল, রাস্তাঘাট, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গরু, ছাগলের ক্ষয়ক্ষতিসহ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এই সকল জানমাল ও সম্পদের ক্ষয়ক্ষতির কিভাবে কমিয়ে এলাকার সম্পদকে রক্ষা করা যায়, এই বিষয়ে সামনে রেখে প্রশিক্ষণ করা হয়।

IMG_20190306_110700
দু’দিনব্যাপী কর্মশালায় অংশগ্রহণকারীরা তাদের নিজ এলাকার কি ধরনের বর্তমান ও বিগত সময়ে কি ধরনের দুর্যোগ, ঝুঁকি সংঘটিত হয়েছে সেগুলো নিয়ে আলোচনা করেন। দুর্যোগুগলোর কারণে কি ধরনের ক্ষতি হয়েছে এবং সেই দুর্যোগ মোকাবেলার জন্য এলাকাবাসী কি ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল সেগুলোও অংশগ্রহণকারীরা ৩টি দলের কাজ ও উপস্থাপনার মাধ্যমে তুলে ধরেন।

দলীয় কাজের আলোচনায় যেসব দুর্যোগগুলো এলাকায় সংঘটিত হয় সেগুলো হলো বন্যা, নদী ভাঙন, অতিবৃষ্টি, বজ্রপাত, নদীনালা ও খালবিলে পানি কম। আলোচনায় দুর্যোগের ফলে যেসব ক্ষতি হয় সেগুলো হলো ফসলের ক্ষতি, রাস্তাঘাট, গাছপালাসহ মানুষের প্রাণহানি ঘটে। এ সকল দুর্যোগ মোকাবেলায় এলাকার জনগোষ্ঠী ভাঙা রাস্তায় বাঁশের সাকো নির্মাণ করেন, বৃক্ষ, তাল গাছ রোপণ ও খেঁজুর বীজ বপন করেন, স্কুলে সচেতনমূলক আলোচনা সভা এবং দুর্যোগ প্রস্তুতি দিবসসহ নানা ধরনের কর্মসূচি করে আসছেন বলে দলীয় আলোচনা ও উপস্থাপনায় বলা হয়।

আলোচনায় অংশগ্রহন করেন লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলমাজ মাতবর, স্বাস্থ্য সহকারী আকতার হোসেন এবং নটাখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন এবং বারসিক হরিরামপুর কর্মকর্তা। এই প্রসঙ্গে লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলমাজ মাতবর বলেন, ‘লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়ন একটি দুর্যোগপ্রবণ এলাকা হিসেবে চিহ্নিত। যদি আগামীতে কোন ধরনের দুর্যোগ/ঝুঁকি আসে তাহলে সমাজের সকল শ্রেণীর মানুষের সহযোগিতায় তা মোকাবেলা করতে হবে। যাতে আমাদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম হয়। এ ক্ষেত্রে যুবকদের বিশেষ ভূমিকা রাখতে হবে।’

IMG_20190306_110826
স্বাস্থ্য সহাকারী আকতার হোসেন বলেন, ‘দুর্যোগের সময় নারী, শিশু এবং বয়ষ্কদের আগে প্রাধান্য দিয়ে নিরাপদ স্থানে নিতে হবে। বিশেষ করে নারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমাদের সহযোগিতা করতে হবে। বন্যার আগে, বন্যা চলাকালীন এবং পরবর্তীতে আমাদের পূর্ব প্রস্ততি থাকতে হবে। যেকোন দুর্যোগের পূর্বে আমাদের সচেতন থাকতে হবে।’

প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেন আলোচনায় বলেন, ‘এলাকার তরুণ যুবক, শিক্ষার্থী, শিক্ষকসহ সবাইকে নিয়ে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দুর্যোগ বিষয়ে সচেতনমূলক আলোচনা করতে হবে। দুর্যোগ আপদ, ঝুঁকি, বজ্রপাতে কি করণীয় এই বিষয়ে শিক্ষার্থীদের ক্লাসে আলোচনা করতে হবে।’

পাটগ্রামচর জলবায়ু সেচ্ছা-সেবক টিমের সভাপতি লুৎফর রহমান বলেন, ‘ইউনিয়ন পরিষদে দুর্যোগ কমিটিকে সক্রিয় করা এবং স্বেচ্ছাসেবক টিমের সদস্যকে সেই কমিটিতে যুক্ত করতে হবে। ইউনিয়নে পরিষদের যখন বাজেট হয় তখন এলাকার সমস্যাগুলো আলোকে বরাদ্দ দেওয়ার বিষয়টি টিমের সদস্যরা তুলে ধরবেন।’

happy wheels 2

Comments