রাস্তার পাশে পতিত স্থানে অল্পনা রানীর পুষ্টি কানন

রাস্তার পাশে পতিত স্থানে অল্পনা রানীর পুষ্টি কানন

সাতক্ষীরার শ্যামনগর থেকে গাজী আল ইমরান

শ্যামনগর উপজেলার রাজা প্রতাপাদিত্যের রাজধানী খ্যাত ধুমঘাটের চাষীরা পূর্বকাল থেকেই ফষল চাষে অবদান রেখে চলেছে। সেই অবদানের একজন সারথী ধুমঘাট অন্তাখালীর কৃষাণী অল্পনা রানী মিস্ত্রী। দীর্ঘদিন যাবত কৃষির সাথে রয়েছে তার নিবিড় সম্পর্ক। অল্পনা রানী তার বসতভিটায় জৈব পদ্ধতিতে হরেক রকমের সবজি চাষের মাধ্যমে নিজের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে এলাকার বিভিন্ন বাজারের বিক্রির মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করে থাকেন।

1 (1)

গত দু’বছর আগ থেকে নিজের ভিটা বাড়ির পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বারসিক’র পরামর্শে তাঁর বাড়ির সামনের পতিত জায়গায় বারসিক’র সহযোগিতায় স্থানীয় জাতের শিম গবেষণার প্লট তৈরি করেন। প্রথম বছরেই লাভবান হন সংগ্রামী কৃষাণী অল্পনা রানী। এরপর থেকে একই স্থানে বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষে লাভবান হচ্ছেন তিনি। রাস্তার পাশে পাঁচ ফিট চওড়া এবং একশ ফিট লম্বা জায়গায় চাষ করে থাকেন অল্পনা রানী মিস্ত্রী। সাজ সকালে ভোরের সূর্য উকি দেওয়ার সাথে সাথে কথা হয় বঙ্গবন্ধু কৃষি পদক প্রাপ্ত জয়িতা প্রাপ্ত কৃষাণী অল্পনা রানীর সাথে। দীর্ঘক্ষণ কথা হয় তার বাড়ির আঙিনায় বিভিন্ন সবজি বাগানে দাঁড়িয়ে।

1 (3)

অল্পনা রানীর সাথে কথা বলাকালীন সময়ে তিনি কৃষির মাধ্যমে তার সফলতার গল্প শোনান। তিনি বলেন, ‘এই কৃষি কাজকে ভালোবেসেই আমি শ্রেষ্ঠ উদ্যোগী নারী হিসেবে পেয়েছি জয়িতা পুরষ্কার, সফল নারী হিসেবে অর্জন করেছি বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রষ্ঠিানের পক্ষ থেকে সম্মাননা।’ সর্বশেষ তিনি গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে গ্রহণ করেন বঙ্গবন্ধু কৃষি পদক। এটি তাঁর জীবনের এটি সবচেয়ে শ্রেষ্ঠ পাওয়া বলে তিনি ব্যক্ত করেন।

1 (4)

অল্পনা রানী বলেন, ‘রাস্তার পাশে সবজি চাষে আমার পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে আরো বিক্রি করতে পারছি। জায়গাটি পতিত অবস্থায় পড়েছিল। বারসিক শ্যামনগর রিসোর্স সেন্টারের পরামর্শে আমি আমি জায়গাটিতে শিমের গবেষণা প্লট শুরু করি। এরপর থেকে এখানে লাউ, বরবটি, ঝিঙে, তুরুল, মিষ্টি কুমড়া, ডাটা শাকসহ বিভিন্ন ধরনের চাষ করি।’ বর্তমানে তিনি তার পুকুরের পাড়সহ বিভিন্ন পড়ে থাকা জায়গাগুলো বাণিজ্যিক হিসেবে চাষের স্বপ্ন দেখছেন এবং চাষ করছেন। অল্পনা রানী বলেন, ‘আমার দেখে এলাকার অনেকেই তাদের বাড়ির পাশের পতিত স্থানে সবজি চাষ শুরু করেছেন। আগ্রহীরা তার বাগান পরিদর্শন করেন এবং উদ্যোগী হয়ে উঠেছেন অনেকেই। অল্পনা রানী এই অঞ্চলের সংগ্রামী নারীদের অনুপ্রেরণা হিসেবেই পরিচিতি লাভ করেছেন।

happy wheels 2

Comments