দুর্যোগে আমরা প্রস্তুত থাকি

শ্যামনগর, সাতক্ষীরা থেকে চম্পা রানী মল্লিক

বারসিক’র উদ্যোগে সম্প্রতি মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের বড়ভেটখালী গ্রামে ‘বড়ভেটখালী বনজীবী উন্নয়ন সংগঠনে’ দুর্যোগের আগে ও পরবর্তী প্রস্তুতি নিয়ে করণীয় বিষয়ক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভাতে ১৪ জন নারী ও ৩ জন পুরুষ উপস্থিত ছিলেন।

1 (3)
সভায় সেলিনা বেগম (৬০) বলেন, দুর্যোগ বলতে আমরা বুঝি, হঠাৎ হঠাৎ যে ঝড়, বৃষ্টি, বন্যা আসে এটাই।’ নিমাই মন্ডল (৪৮) বলেন, ‘দুর্যোগ হল একটা দুর্ঘটনা। কারণ দুর্যোগ যখন আসে তখন আমাদের দুর্ঘটনাই ঘটে। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের এলাকায় যেসব দুর্যোগগুলো হয় তা হল-ঝড়, বন্যা, আইলা, ফণি, সিডর, হারিকেন ঝড়, ওয়াবদা ভাঙন, বুলবুল প্রভৃতি। এই দুর্যোগ হওয়ার আগেই আগাম তথ্য ও সতর্কবাণী আমরা পাই। যেসব মাধ্যমে পাই তা হল, রেডিও এর সংবাদ শুনে, টিভিতে খবর শুনে, এলাকায় মাইকিং শুনে ও মসজিদের মোয়াজ্জেম এর মাধ্যমে। এছাড়া ও আমাদের ছেলে মেয়েরা মোবাইলে ম্যাসেজের মাধ্যমে জেনে আমাদেরকে জানায়।’

অন্যদিকে ঝড়ি রানী (৫৫) বলেন, ‘আমরা এখানে সবাই বনে মাছ কাঁকড়া ধরে সংসার চালাই, আমাদের মুল্যবান তেমন কিছুই নেই, না সোনা, না অনেক টাকা। তবুও দুর্যোগে আমরা কিছু আগাম প্রস্তুতি নিয়ে থাকি। এই সংবাদ জানার পরে আতংকে জিনিসপত্র গুছাই, কিছু শুকনো খাবার- মুড়ি, চিড়া, বিস্কুট কিনে নেই এবং খাবার পানি ও বোতলে ভরে রাখি। এছাড়া ও মূল্যবান কাগজপত্র গুলো পলিথিনে ভরে রাখি।’

2 (2)
সভায় অংশগ্রহনকারীরা জানান, দুর্যোগের সময় তাদের কেউ কেউ আশ্রয়কেন্দ্রে যায় আবার কেউ কেউ যাদের ঘর ভালো সেখানে অবস্থান করেন। এছাড়া ও এ সময় কেউ কেউ আবার মনের জোর ও বিশ্বাস নিয়ে চার পাঁচটা পরিবারের লোকজন একসাথে এক ঘরে থাকেন এবং চাল শক্ত করে ধরে রাখেন। তারা জানান, দুর্যোগে যে ক্ষয়ক্ষতি হয় তা তারা সবাই পুষিয়ে নিতে পারেন না, কেউ কেউ সরকারি অনুদান পায়, কিন্তু বাকি সবাইকে ঋণ করে, খুব কষ্টর মাধ্যমে এই বিপদ কাটিয়ে উঠা লাগে তাদের।

অংশগ্রহনকারীদের মধ্যে অনেকেই খুব গুরুত্বের সাথে জনান, দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি সমস্যায় পড়ে প্রতিবন্ধীরা। কারণ কিছু কিছু প্রতিবন্ধী আছে যারা অন্য কারো সাহায্য ছাড়া চলতে পারে না। এছাড়া বুড়ো মানুষদেরও বেশি সমস্যা হয়। কারণ তাদেরকেও সাথে নিয়ে যাওয়া, আসা লাগে। তবে তারা আগাম প্রস্তুতি নেন ও সতর্কবার্তা পান বলে দুর্যোগে সবসময় প্রস্তুত থাকেন।

happy wheels 2

Comments