মানিকগঞ্জে ঐতিহ্য হারাতে বসেছে খেজুর রস

আব্দুর রাজ্জাক, মানিকগঞ্জ ॥

 

একটু একটু করে জেকে বসেছে শীত। গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের প্রতীক খেজুর গাছ থেকে রস সংগ্রহ করতে ব্যস্ত সময় পার করছে মানিকগঞ্জের গাছিরা। নবান্ন উৎসবে গ্রামের ঘরে ঘরে পিঠা-পায়েস তৈরিতে খেজুর রসের যেমনি জুড়ি নেই, তেমনি গাছিরাও ব্যস্ত খেজুর গাছের বুক চিরে ফোটা ফোটা রস বের করতে।

মানিকগঞ্জে শীতের ঐতিহ্য ছিল মিষ্টি খেজুরের রস। মাত্র এক যুগের ব্যবধানে শীতের ঐতিহ্য রসের ঘ্রান এখন ভুলতে বসেছে মানুষ। রসের পায়েস আর পিঠা পুলিএখন শুধূই স্মৃতি। শীতে গ্রাম্য হাটে হাটে খেজুর গুড়ের মনমাতানো সেই ঘ্রান আর পাওয়া যায় না। মৌসুমে গাছীদের না পাওয়া, নতুন করে গাছ না লাগানোয় ঐতিহ্যবাহী খেজুর গাছ এখন প্রায় বিলুপ্তির পথে। যে হারে খেজুর গাছ নিধন হচ্ছে, সে তুলনায় রোপণ করা হয় না। গ্রামের মাঠে আর মেঠো পথের ধারে কিছু গাছ দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হয়ে। গ্রাম বাংলায় ঐতিহ্য খেজুর রসের যে সু-প্রিয়তা ছিল তা ক্রমেই কমে যাচ্ছে আর হারিয়ে যাচ্ছে খেজুর রসের সু-খ্যাতি।

IMG_20191216_010334

সরেজমিনে ঘিওর উপজেলার কালাচাঁদপুর গ্রামে গিয়ে দেখা যায় আব্দুল মুন্নাফ নামে এক গাছি খেজুরের গাছ থেকে রস সংগ্রহ করার জন্য গাছের বুক পরিষ্কার করতে। তিনি জানান, আগে খেজুরের রসের চাহিদা ব্যাপক ছিল। এমনকি দুপুর থেকে গাছ ছিলতে ছিলতে সন্ধ্যা পেরিয়ে যেত। সেই রস বিক্রি করে ও গুড় তৈরি করে সংসার চালাতাম। এখন তেমন কোন গাছ না থাকায় ২/৪টি গাছ ছিলে যে রস বের হয় তা বিক্রি করে কোন ভাবেই সংসার চলে না। তবুও কিছু গাছি নিজেদের অতীতের পেশা টিকিয়ে রাখতে জোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।

রসনা তৃপ্তির উপকরণ সুমিষ্ট রসের জন্যই নয়, জীবনের প্রয়োজনে আর প্রকৃতির ভারসাম্য ও বাংলার ঐতিহ্য রক্ষায় ব্যাপকভাবে খেজুর গাছ রোপণ করা দরকার এমন আকুতি অনেকের।

 

happy wheels 2

Comments