ঘিওরে ঘন কুয়াশায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে ধানের বীজতলা

আব্দুর রাজ্জাক, ঘিওর (মানিকগঞ্জ)

ক্রমাগত তীব্র শীত ও ঘন কুয়াশায় মানিকগঞ্জে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে বোরো ধানের বীজতলা। তাই চলতি বোরো মৌসুমে ধানের আবাদ নিয়ে শঙ্কিত এখানকার কৃষকেরা। ঘন কুয়াশায় বোরো ধানের বীজতলায় চারাগুলো রং হলুদ হয়ে পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট কৃষকরা জানান, ঘন কুয়াশায় বীজ তলায় এক ধরনের আঠার মত আবরণ তৈরি হয়। এই আঠার কারণে পাতা পুড়ে বিবর্ণ হয়ে যাচ্ছে। বীজতলায় সবসময় পানি ধরে রেখেও রক্ষা করা যাচ্ছে না এই সমস্যাকে। ফলে চলতি ঘিওরে ছয় হাজার ৫১০ হেক্টর ও দৌলতপুরে সাত হাজার ৮১ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হলেও আবাদ নিয়ে বেশ আশংকায় রয়েছেন কৃষকরা।

উপজেলার রাথুরা গ্রামের কৃষক কবির খান জানান, এবার জমিতে ৩০ কেজি বীজ বপন করেছিলাম। কিন্তু কুয়াশা ও শীতের কারণে প্রায় সব চারা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন বাজার থেকে বিঘা প্রতি প্রায় এক হাজার টাকা খরচ করে আবাদ করতে হবে। একইরকম অভিজ্ঞতার কথা বলেন সিংজুরী ইউনিয়নের কৃষক রঞ্জিত মন্ডল। তিনি বলেন, ‘আমি ৬ বিঘা জমির জন্য ৫০ কেজি ব্রি-২৮ জাতের ধানবীজ বীজ তলা বপন করেছিলাম। এখন যে অবস্থা তাতে অর্ধেক ভালো চারা পাবো কিনা সন্দেহ আছে। শেষ পর্যন্ত বাজার থেকে কেনা বীজ দিয়েই জমি আবাদ করতে হবে।”

উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, শীতে বীজ তলায় চারা দেরিতে বাড়ে, বোরো মৌসুমে ধানের চারা ৩০ থেকে ৪০ দিনের মধ্যে জমিতে লাগালে ভালো ফসল পাওয়া যায়। শীতের কারণে বীজ তলার চারা বয়স বেশি হয়ে যাচ্ছে। ৫০-৬০ দিনের বেশি বয়সী চারা লাগালে ভাল ফলন পাওয়া যাবে না। আবার জমিতে লাগানোর পর পর্যাপ্ত রোদ না পেলেও গাছ মরে যাবে।”

জেলা কৃষি অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আশরাফ উজ্জামান বলেন, ‘শীতের কারণে অনেকের জমির বীজতলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ সময় জমিতে পানি ধরে রাখা, সকালে শিশির ধুয়ে দেওয়া ও সাদা পলিথিন দিয়ে চারা ঢেকে রাখার পরামর্শ দিয়েছি। এলাকার অনকে কৃষকই এই পদ্ধতি ব্যবহার করছে।’

happy wheels 2

Comments