করোনার মহামারিতে কিশোরীদের উদ্যোগ

ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই চলছে এমন প্রচার ও প্রচারণা

নেত্রকোনা থেকে রুখসানা রুমী:
‘আতংক নয়, সচেতন হই’ এই শ্লোগানে সামনে রেখে নেত্রকোনা সদর উপজেলা বড় কাইলাটি গ্রামে শিকড় কিশোরী সংগঠন গত ২৪ মার্চ থেকে শুরু কওে আজ পর্যন্ত নিজ গ্রামে করোনা ভাইরাস বিষয়ে সচেতনতামূলক আলোচনা সভা, লিফলেট বিতরণ, মাইকিং করে আসছে। এছাড়া তারা করোনা ভাইরাসের লক্ষণ ও প্রতিরোধ করণীয় বিষয়ে সচেতনতমূলক কাজ ও নিজ এলাকার মানুষজনকে হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার বিষয়েও স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে প্রচার ও প্রচারণার মাধ্যমে সচেতন করেছে। অন্যদিকে এই কিশোরীরাই অসহায় ও দরিদ্র লোকজনকে ১০০টি মাস্ক ও হ্যান্ডওয়াশ ও সাবান বিতরণ করেছে। এলাকার অরঙ্গবাদ উদয় যুব সংগঠন আর কিশোরী সংগঠন এই ২টি সংগঠনের সদস্যা ১০০ টাকা করে চাঁদা তুলে ২৬ হাজার টাকা সংগ্রহ করে এসব সামগ্রী কিনে বিতরণ করেছে। গ্রামের মানুষের অসচেতনতা কিশোরীদের চোখে ধরা পড়ে। তারা সবাই মিলে উদ্যোগ নেয় যে এলাকার মানুষের মধ্যে করোনা ভাইরাস নিয়ে সচেতনতা তৈরি করতে হবে। কিশোরীরা মোবাইলে যোগাযোগ করে বারসিক কর্মকর্তা ও কাইলাটি ইউনিয়নের চেয়াম্যানের সাথে এ বিষয়ে আলোচনা করে। তাদের পরামর্শ নিয়ে যুবক ও কিশোরীরা বাজারের মাইকিং করে এবং বড়কাইলাটি বাজার এবং বটতলা বাজারে তারা নিজেরা সামাজিক দূরুত্ব রেখে চিহ্ন তৈরি করে। তাদের দেওয়া চিহ্ন অনুসারে বাজারে যারা বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করেন তারা সেটা অনুসরণ করেই মাছ, তরকারি, শুকটি,পান সুপারির পসরা সাজিয়ে রাখেন। ক্রেতারা এসে সেটা ক্রয় করেন। এতে করে ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে গাদাগাদি হয় না। কিশোরীরা ও যুবকদের পরামর্শ এখন সবাই সামাজিক দূরুত্ব রেখে বাজার করছেন। কিশোরী ও যুবকদের এই উদ্যোগ প্রশংসিত হয়েছে। বর্তমানে করোনা ভাইরাস সর্ম্পকে গ্রামবাসীরা আগের চেয়ে অনেক সচেতন। বাইরে গেলে তারা সবাই মাস্ক পড়ছেন, অযথা ঘুরাঘুরি কমে গেছে তাদের মধ্যে।
কিশোরীদের স্কুল, কলেজ বন্ধ থাকায় তারা বাড়ি চারপাশে বৈচিত্র্যময় সবজি চাষ শুরু করেছে। চাষকৃত ফসলের মধ্যে রয়েছে মিষ্টিকুমড়া, কুমড়া, লালশাক, পুইশাক, চিচিঙ্গা, ডাটা, পালন শাক, করলা ইত্যাদি। কিশোরী ও যুবকরা তাদেও চাষকৃত সবজিগুলো এলাকার অসহায় মানুষদের মধ্যে বিতরণ করেছে। নিজেরা বাজারে বিক্রি না করে গ্রামের মানুষের ঘরে পৌছে দিয়েছে।
উল্লেখ্য যে, নেত্রকোনায় বড়কাইলাটি গ্রামে একটি বাজার আছে। সেখানে শহরের অনেক মানুষ বাজার করতে আসেন কিন্তু তারা সামাজিক দূরুত্ব বজায় না রেখে বাজার করছেন, দোকানপাট খোলা রাখছেন। নিরাপত্তাহীনভাবে ঘুরছেন। আবার ব্যবসার সাথে যারা জড়িত তারা অনিরাপদে ব্যবসা করছেন। মাছ কিনতে গেলে অনেক মানুষ একসাথে জড় হচ্ছেন। তাদের ভিতরে কোন করোনার ভয় নেই, তারা অবাধে চলা ফেরা করছেন। তবে যুবক ও কিশোরীদের উদ্যোগে তারা এখন সচেতন হয়েছেন।

happy wheels 2

Comments