মানুষের মধ্যকার ভেদাভেদ দূর হোক

মানিকগঞ্জ থেকে নজরুল ইসলাম, কমল চন্দ্র দত্ত ও ঋতু রবিদাস

‘বিশ্ব বর্ণবাদ বিলোপ দিবসে জাতি ও ধর্মগত বৈষম্য নিরসনের ডাক’-এই শ্লোগানকে সামনে রেখে প্রতিবছরের ন্যায় এই বছরও বিশে^ পালিত হচ্ছে ‘বর্ণবাদ বৈষম্য বিলোপ দিবস’। তারই ধারাবাহিকতায় বারসিক সহযোগিতায় ‘পশ্চিম দাশড়া রবিদাস নারী উন্নয়ন সংগঠন’ এর উদ্যোগে গতকাল এ সভা আয়োজনের মাধ্যমে দিবসটি পালিত হয়েছে। সভায় তৃতীয় লিঙ্গের নেত্রী আলোমতির সভাপতিত্বে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা মানবাধিকার ফোরামের সভাপতি এ্যাড. দীপক কুমার ঘোষ, হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আশুতোষ রায়, এডওয়ার্ড জামান, নারী নেত্রী জাহানারা বেগম এবং বারসিক আঞ্চলিক সমন্বয়কারী বিমল রায়, গাজী শাহাদাৎ হোসেন বাদল প্রমুখ।


আলোচনায় বর্ণবাদ বৈষম্য বিলোপ দিবস সম্পর্কে ধারণাপত্র পাঠ করেন কমল চন্দ্র দত্ত। বক্তারা জানান, পৃথিবীর কোন জায়গায় যেন এই জাত প্রথা, বর্ণ প্রথা না থাকে। সমাজে আমরা সবাই ্একে অপরের উপর নির্ভরশীল। কেউ কাউকে ছাড়া চলতে পারবে না। মানুষে মানুষে বিভেদ ভেদাভেদ কোন দেশকেই সুখ শান্তি দিতে পারেনি। আমরা এমন এক দেশ গড়তে চাই যেখানে হরিজন, রবিদাস, মণিঋষি, বেদে, লৌহকারসহ সব ধরনের মানুষ এক কাতারে থাকতে পারে এবং দেশের সার্বিক উন্নয়নে সহযোগিতা করতে পারে। তাই আমাদের নিজেদের পরিবর্তন করতে হবে। এক্ষেত্রে শিক্ষার কোন বিকল্প নেই। কারণ একজন শিক্ষিত জাতিই পারে দেশ ও সমাজকে বদলে দিতে।


উল্লেখ্য, ১৯৬০ সালের ২১ শে মার্চ দক্ষিণ আফ্রিকার শার্পভিলে রাষ্ট্রের বর্ণবাদী আইন পাসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ মিছিলে পুলিশের গুলিতে নিহত হন ৬৯ জন ও আহত হন ১৮০ জন মানুষ। এই হত্যাকান্ডের পর বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলন তীব্র হয়ে উঠে। ওই বর্বর হত্যাকা-ের দিনটিকেই ১৯৬৬ সালে আন্তর্জাতিক বর্ণ বৈষম্য বিলোপ দিবস হিসেবে ঘোষণা করে জাতিসংঘ। সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলনের পুরোধা নেলসন ম্যান্ডেলাকে গ্রেফতার করা হয়, বিচারে তার যাবজ্জীবন কারাবাস হয়। তবুও এই বর্ণবাদ বিরোধী আন্দোলন অব্যাহত থাকে। দীর্ঘ ২৭ বছর পর তাকে মুক্তি দেওয়া হয়। নেলসন ম্যান্ডেলা বিচারের সময় আদালতে বলেছিলেন, ‘আমি এমন এক দক্ষিণ আফ্রিকার স্বপ্ন দেখি, যেখানে সব জাতি, সব বর্ণের মানুষ সমান সুযোগ নিয়ে এক সঙ্গে থাকতে পারবো।’

happy wheels 2

Comments