নারীর ক্ষমতায়ন ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন

মানিকগঞ্জ থেকে মো.নজরুল ইসলাম

প্রেম ও বিদ্রোহের কবি কাজী নজরুল ইসলাম তার নারী কবিতায় বলেন- ‘জগতে যত বড় বড় জয় বড় বড় অভিযান, মাতা ভগ্নি ও বধুদের ত্যাগে হইয়াছে তা মহিয়ান। নারী জাগরণের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া বলেন- অন্ততপক্ষে বালিকাদিগকে প্রাথমিক শিক্ষা দিতেই হইবে। শিক্ষা অর্থে আমি প্রকৃত সুশিক্ষার কথাই বলি; গোটা কতক পুস্তক পাঠ করিতে বা দু’ছত্র কবিতা লিখিতে পারা শিক্ষা নয়। আমি চাই সেই শিক্ষা যাহা তাহাদিগকে আদর্শ কন্যা, আদর্শ ভগিনী,আদর্শ গৃহিনী এবং আদর্শ মাতা রুপে গঠিত করিবে।

ভূমিকা

আমরা জানি মানবইতিহাস তথা মানব সমাজের সূচনালগ্নে থেকেই নারী-পুরুষের একসঙ্গে পথচলা ও বসবাস। শত বাধা বিপত্তি ও প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে আজও সেটি অক্ষুন্ন রয়েছে। সভ্যতার বিকাশে নারী পুরুষ একে অপরের সহযোগী,সহযোদ্ধা ও সহকর্মী হয়ে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও সমাজ রুপান্তরে নারী পুরুষ তাদের ক্ষমতায়নের বিকাশ ঘটাচ্ছে এবং পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্রে নানাভাবে অবদান রাখছে। নব নব আবিস্কারের মাধ্যমে,শোষণ বঞ্চনায় বিদ্রোহ করে তারা সভ্যতার আলো জালিয়েছে একের পর এক। বিশ্বে প্রায় সারে সাতশ কোটি মানুষের মধ্যে এখনো অর্ধেক নারী। তাই আমরা জোর গলায় বলতে পারি বিশ্বের রাজনৈতিক অর্থনৈতিক,সামাজিক, সাংস্কৃতিক উন্নয়নে নারী পুরুষের ভূমিকা সমান ও ক্ষেত্রবিশেস অধিক। বস্তুত নারী সমাজই পারে ধর্মীয় সামাজিক কুসংস্কার রুখে দিয়ে নারী পুরুষের সম্মিলনে দেশের অর্থনৈতিক সামাজিক রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক উন্নয়ন তথা নারীর ক্ষমতায়নকে আরো শক্তিশালী ও টেকসই করতে। আমরা আরো জানি, প্রাচীনকাল থেকেই আমাদের দেশে প্রচলিত আছে যে,সংসার সুখের হয় রমনীর গুণে’। মানবসমাজে নারী ও পুরুষ পরস্পরিক নির্ভরশীলতায় স্বমহিমায় টিকে আছে। সভ্যতার শুরুতে ধর্মীয় ও সামাজিক কুসংস্কার তথা অন্ধকার সমাজে নারীকে গৃহসামগ্রীর কল্যাণার্থে বিবেচনা করা হইতো। নারীকে তাদের স্বামী কিংবা পরিবারের কৃতদাসী হিসেবে ব্যবহার করা হতো। নারী শিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়নের কথা কেউ ভাবতই না বললেই চলে। পরিবার তাদের কন্যা সন্তানের বিয়ে দিয়েই দায় মুক্ত হতেন। ঘরে বাইরে হরেক রকমের নির্যাতনের কোন রকম প্রতিবাদ করতে পারতেন না। সভ্যতার ক্রমবিকাশে নারী শিক্ষা ও নারীর ক্ষমতায়নের ইর্ষনীয় পরিবর্তন ঘটলেও নারীজাতি এখনো পুরুষতান্ত্রিক কাঠামো থেকে শতভাগ মুক্ত হইতে পারেনি।

সভ্যতার ক্রমবিকাশে নারী

মানবসভ্যতার আজকের যে চুড়ান্ত বিকাশ সাধন তার পেছনে লক্ষ লক্ষ বছরের মানবজাতির কঠোর শ্রম ও সাধনা রয়েছে। কৃষিকাজের সভ্যতার প্রথম বীজ বপন করেছিলো নারী এবং পুরুষ রেখেছিলো সহযোগী ভূমিকা। যুগের পরিবর্তনের সাথে সাথে নারী আরো সক্রিয় হয়েছে সমাজ ও সভ্যতার বিকাশে হয়েছে তারা কল্যানের মূর্ত প্রতিক। আমরা উন্নত বিশে^র দিকে তাকালে দেখতে পাই যে, ইউরোপ ও আমেরিকার দেশগুলোতে নারীকে আরো উন্নত মর্যাদা দিয়েছে। তারা নারী পুরুষ সম্মিলনে কলকারখানায় উৎপাদন ও গবেষণায় কাজেও একসাথে হাতে হাত রেখে কাজ করছেন। কৃষি ও

শিল্পখাতে নারী সমাজের ভূমিকা

বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। প্রধানত কৃষির উপর ভিত্তি করেই গড়ে উঠেছে আমাদের অর্থনীতি। আমরা জানি সভ্যতার শুরুতেই কৃষির গোড়াপত্তন করেন নারীরা। বীজ বুনে যে ফসল উৎপাদন করা সম্ভব সেটি নারীই প্রথম আবিস্কার করেন। স্বামী সন্তানের কৃষি কাজে সমানতালে কাজ করছে কৃষাণী বধু। আমরা এখনো নারীকে একজন কৃষাণী হিসাবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি ও গৃহস্থলী কাজে শ্রমের মজুরি দিতে পারিনি। পরিবার সংসার সামাল দিয়েও একজন কৃষক বধু বাড়ির আশেপাশে পালানে পতিত জমিতে শাকসবজি আবাদ করে, হাঁস মুরগি, গবাদি পশু পালন করে তারা পরিবারের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখছেন। কৃষিতেই শিল্পের প্রধান কাচামাল তৈরী হয়; সেখানেও নারী সামনের সারিতে। বাংলাদেশের এখন প্রধান শিল্প পেশাক শিল্প। পোশাক শিল্পের উন্নয়নে এবং জাতীয় অর্থনীতিতে প্রবৃদ্ধি অর্জনে দিন রাত কঠোর পরিশ্রম করে আসছেন আমাদের নারী সমাজ। বর্তমানে পোশাক শিল্প থেকে সরকারের বৈদেশিক মুদ্রা আসে ৫৬-৬২%। এই পোশাক শিল্পের প্রধান চালিকাশক্তি নারী এবং কাখানায় কর্মে নিয়োজিত ৮৫ ভাগই নারী শ্রমিক দিন রাত নিরলসভাবে কাজ করছেন। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের আরেকটি গুরুত্বপুর্ণ শাখা হলো ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প। আমাদের দেশে অসংখ্য ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প রয়েছে। এইসকল ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের কাজের সাথে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত রয়েছে আমাদের নারী সমাজ। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের মধ্যে রয়েছে তাত ,কারু ও বয়ন শিল্প ইত্যদি। এছাড়াও তারা ঘরে বসে তৈরী করে বাঁশ বেতের বিভিন্ন আসবাব ও খেলনা,মাটির তৈরী বাসন কোসন,খেলনা, এছারাও নকশি কাথা,শীতল পাটি; যেটি আমাদের জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপুর্ণ ভূমিকা পালন করছেন। সমস্যা হলো বর্তমানের আধুনিক প্রযুক্তির যুগে প্লাষ্টিকের জগতে এসব ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প অনেকটাই বিলুপ্তির পথে যেতে বসেছে। নারী পুরুষ সম্মিলিতভাবেই লোকায়ত এই সংস্কৃতিকে সংরক্ষণে এগিয়ে আসতে হবে। ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে এবং নারী সমাজকে এইসকল কাজে আরো এগিয়ে আসতে হবে তবেই জাতীয় অর্থনীতিতে নতুন করে আরো অবদান রাখা সম্ভব হবে।

নারীর ক্ষমতায়ন

ইংরেজীতে (ওমেন্স ইমপাওয়ারমেন্ট) হলো নারীর ক্ষমতায়নের প্রক্রিয়া। নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে তার নিয়ন্ত্রণের অধিকার, ভোগ করার ক্ষমতা এবং সম্পদ,আয় এবং তাদের নিজস্ব সময়ের থেকে উপকার লাভ করার সাথে সমস্যা মোকাবিলা এবং তাদের অর্থনৈতিক অবস্থান তথা সুস্থতার উন্নতি করার ক্ষমতাকে বুঝায়। ক্ষমতায়নের ভিন্ন মাত্রা থাকলেও নারীর ক্ষমতয়ন প্রক্রিয়া আরো উন্নত স্তরের কথা বলে- নারীর ক্ষমতায়নের কথা বলতে ক্ষমতায়নের অর্থ সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়া বাইরের মানুষেরা নারীদেরকে গ্রহণ করা এবং তাঁদের অনুমতি দেয়া। এই রাজনৈতিক গঠন ও আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্ত এবং অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে একটি আয় উপার্জনের দক্ষতার উপর জোড় দেয়া হয়। যেটি অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের অংশগ্রহণকে সক্ষম করে। বিকল্পভাবে এই নারীদের জন্য লিঙ্গ ভূমিকা সঙ্গায়িত করার প্রক্রিয়ায় তাদের পরিচিত বিকল্পসমুহের মধ্যে থেকে বেছে নেয়ার ক্ষমতা লাভ করার অনুমতি দেয়। কিন্তু এই ধরনের ক্ষমতা থেকে তাদেরকে আলাদা করা হয়েছে। আমরা আরো বলতে পারি যে, ক্ষমতায়ন বা স্বাবলম্ভিকরণ এগুলো যুগের তুলনায় আলাদা আবার, ক্ষমতায়ন একটি প্রক্রিয়া,কোন বস্তু নয়। নারীর ক্ষমতায়ন উন্নয়ন এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন বর্তমান সময়ের আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু। নারীর ক্ষমতায়নের ধারণা গ্রহণ করলে এমন কার্যসূচি এবং নীতি বাস্তবায়নের ফলে গোটা দেশের ব্যবসায়ীক সম্প্রদায় এবং গোষ্ঠী উপকৃত হয়ে যায়। নারীর ক্ষমতায়ন একটি সমাজের উন্নতির জন্য প্রয়োজনীয়, কারণ এটি উন্নয়নের জন্য উপলব্ধ মানবসম্পদের গুণমান এবং পরিমান উভয়কেই বাড়িয়ে তোলে।

অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন

অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নে নারী সংস্থা,অপ্রাতিষ্ঠানিক সরকারি কার্যসূচিতে প্রবেশাধিকার,ঘরে বাইরে গতিশীলতা, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ব্যি করে। একটি অভিযোগ হলো নারীদের জন্য বেশি অপ্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার সুযোগগুলো সরবারহ করা যেটি ঘরে বাইরে উচ্চ দর দাম করতে সুযোগ দিতে পারে। তাঁদের ঘরের বাইরে বেশি মজুরিতে বেশি প্রবেশাধিকার থাকবে; এবং ফলস্বরুপ নারীদের চাকরি পাওয়াটি সহজ করে দিবে। সম্পতির উত্তরাধিকার এবং ভূমির অধিকারগুলোতে নারীর ক্ষমতাকে শক্তিশালী করা নারীদের অর্থনৈতিকভাবে ক্ষমতায়নের অন্য একটি পদ্ধতি। সম্পদে নারীর মালিকানা রয়েছে এটি বুঝে নিতে হলে পুরুষের পাশাপাশি নারীকেও সোচ্চার ভূমিকা পালন করতে হবে। তারা এটি দাবি করলে পরিবার ও সমাজে তাদের মর্যদা বৃদ্ধি পাবে তারা দর দাম করার সুযোগ পাবে। এছাড়াও তারা অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং অপ্রাতিষ্ঠানিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের জন্য বেশি করে সুযোগ অর্জন করতে পারবে। কর্মসংস্থানের বাজারে নারীর ক্ষমতায়নের প্রতিযোগীতা একটি বিশাল প্রভাব ফেলে। কর্মসংস্থানই নারীর ক্ষমতায়নের প্রধান মাধ্যম। তাই ঘরে বাইরে নারীকে উদ্যোক্তা হয়ে কাজ করতে হবে এবং সচেতন মহলের কাজ হবে নারীকে ঘরে বাইরে কাজের সুযোগ সৃষ্টি করা প্রতিবন্ধকতা দূর করে উৎসাহ প্রদান করা। অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন না হলে নারী তার রাজনৈতিক ক্ষমতায়নে প্রবেশ করতে পারবে না এবং সামগ্রীক উন্নয়নও ঘটবে না।

তাই আমরা বিশ্বাস করি অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন সৃষ্টির মধ্যেই নিহিত রয়েছে নারীর লিঙ্গ সমতা এবং রাজনৈতিক স্বাধীনতা এবং রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার কাঠামোতে প্রবেশ করা। আবার বর্তমান সরকারের যুগান্তকারি পদক্ষেপ ডিজিটাল দক্ষতা স্থানীয় সরকারের সাথে নারীদের জড়িত হওয়া এবং তাদের সম্প্রদায়ের মধ্যে তাদের সিদ্ধান্ত গ্রহণ ক্ষমতা বাড়িয়ে তুলতে পারে। ডিজিটাল দক্ষতা সম্পন্ন নারীরা স্থানীয় সমস্যাগুলির বিষয়ে তাদের কন্ঠস্বর শুনতে এবং তাদের সম্প্রদায়ের উপর প্রভাব ফেলতে পারে। এছারাও ডিজিটাল দক্ষতা নারীদের রাজনৈতিক আন্দোলনে অংশ নিতে আরো সক্ষম করে গড়ে তুলতে সহযোগীতা করবে। নারীর ক্ষমতায়নের প্রতিবন্ধকায় আমরা বলতে পারি নারীর অর্থনৈতিক রাজনৈতিক ক্ষমতায়ন এবং ইকুইটির প্রতিবন্ধকতা অনেকগুলি সাংস্কৃতিক মানদন্ড দ্বারা আবদ্ধ। অনেক নারী ঘরে বাইরে নানা ধরনের নির্যতান ও প্রতিবন্ধকাতার স্বীকার হলেও তারা কেবল অনুভব করে কিন্তু যথাযথ কর্তৃপক্ষের কাছে অভিযোগ করেন না। তারা পুরুষতান্ত্রিক সমাজে পুরুষের নেতিবাচক আচরণের শিকার হলেও অধিকাংশ নারী সেটি মানিয়ে নিয়েছেন। গবেষণায় পাওয়া যায় কর্মক্ষেত্রে পুরুষের তুলনায় নারীরা বেশি বাধার সম্মুখিন হয়। লিঙ্গ সম্পর্কীত বাধাগুলির মধ্যে যৌন হয়রানি, ধর্ষণ ও হত্যার খবর হরহামেশাই পাওয়া যাচ্ছে। বৈশ্বিক মহমারী করোনাকালে ঘরে বাইরে নারী নির্যাতন বাল্য বিবাহের মাত্রাকে আরো কয়েকগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। গ্রাম ও শহরের মধ্যবিত্ত নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবারগুলোতে ঠুনকো কথাকে কেন্দ্র করে বিবাহ বিচ্ছেদের মতোন অসংখ্য ঘটনা ঘটছে। প্রযুক্তি আসক্তি এবং নিম্নমানের প্রলোভনে বাল্যবিবাহের মাত্রা কয়েকগুন বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈশ্বিক মহামারীকালে নারীর শিক্ষা স্বাধীনাত অধিকারসহ রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নকে হ্রাস করেছে। আমরা নারী পুরুষ একসঙ্গে এই সংকটকাল মোকাবিলায় কাজ করতে চাই। পরিশেষে

আমরা বলতে পারি যে, বাল্য বিবাহ, নারী নির্যাতন, যৌতুক, বিাবহ বিচ্ছেদ,পরকিয়া, হত্যা ধর্ষণসহ সকল প্রকার সামাজিক সহিংসতা রুখে দিতে নারী পুরুষককে একযোগে কাজ করতে হবে। সকল প্রকার প্রতিবন্ধকতা ও বাধা বিপত্তি অতিক্রম করতে করণীয় বিষয়গুলোকে আমরা এভাবে বলতে পারি- নারী সমাজকে শিক্ষিত করে গড়ে তুলতে হবে এবং ধর্মীয় ও সামাজিক কুসংস্কার মুক্ত থাকতে হবে। বিজ্ঞানভিত্তিক সাংস্কৃতিক চর্চায় অংশগ্রহণ করতে হবে। কর্মমুখী শিক্ষা দিয়ে রাষ্ট্রকে দক্ষ জনবল তৈরীতে কাজ করতে হবে। অর্থনৈতিক উন্নয়নমূলক প্রতিটি শাখার উৎপাদনকাজে নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে হবে। নারী পুরুষে বৈষম্য হ্রাসে এবং নিরাপত্তা দিতে সরকারকে সঠিক ভূমিকা পালন করতে হবে। গৃহস্থালী কাজে শ্রমের মর্যাদা ও মজুরী দিতে হবে। কারখানাসহ সকল প্রকার উৎপাদনমুখী শ্রমের সঠিক মূল্যায়ন করতে হবে। পরিবার সমাজ ও রাষ্ট্রে নারীর ক্ষমতায়ন ও অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হলে সমাজের সকল স্তরে জেন্ডার সংবেদনশীল আচরণ করতে হবে। নারীবান্ধব ইতিবাচক দুষ্টিভঙ্গির প্রয়োগ ঘটাতে এবং জোরালো ভূমিকা রাখতে আন্দোলন সংগ্রাম জোরষভর করতে হবে। একথা আমাদের ভুললে চলবে না যে নারী পুরুষের যৌথ কর্মপ্রচেষ্টায় দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন সাধিত হয়। নারীবান্ধব বহুত্ববাদি সাংস্কৃতিক জাগরণ ঘটাতেই হবে এবং সামাজিক ন্যায়্যতার সমাজ বিনির্মাণে একসাথে গাইতে হবে- ‘সেদিন উপস্থিত হয়েছে আজি, চুড়ি পড়া ছেড়ে নারী ধরেছে হাতুড়ি।পুরুষ নারীতে মিলে,শিল্পের বীজ বুনেছে সভ্যতার দেহে।

তথ্যসূত্র:  প্রফেসর আলাউদ্দিন আল আজাদ,ড. মনন অধিকারি,রুহুল আমিন বাবুল রচিত – উচ্চতর বাংলা ভাষারীতি,পৃষ্ঠা- ৩৪০,৪৬ • তোষামদ ও রাজনীতির ভাষা,মুহাম্মদ আব্দুল হাই • গুগল,উইকিপিডিয়া • বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস,সুকুমার সেন • শরৎ রচনাবলী,সপ্তম ও অষ্টম খন্ড • ছন্দ- রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর

happy wheels 2

Comments