প্রকৃতির প্রতিটি সম্পদই গুরুত্বপূর্ণ

শ্যামনগর, সাতক্ষীরা থেকে বিশ্বজিৎ মন্ডল ও বিধান মধু

বারসিক’র সহায়তায় শ্যামনগর উপজেলার কাশিমাড়ি ইউনিয়নের জয়নগর কৃষি নারী সংগঠনের উদ্যোগে গত ২৩ সেপ্টেম্বর গোবিন্দপুর গ্রামে উপকূলীয় এলাকায় বর্ষা মৌসুমের খাদ্যজাত উদ্ভিদ বৈচিত্র্যের প্রদর্শনী মেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মেলায় জয়নগর ও গোবিন্দপুর গ্রামের কৃষক-কৃষাণী, শিক্ষার্থী, শিক্ষক, ব্যবসায়ী, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, স্বেচ্ছাসেবক টিম সিডিও প্রতিনিধি ও বারসিক কর্মকর্তা বৃন্দ অংশগ্রহণ করেন।

প্রদর্শনী মেলায় জয়নগর গ্রামের কৃষাণী রোজিনা বেগম ও সুমা পারভীন এবং গোবিন্দপুর গ্রামের সোভা রানী মন্ডল ৩ জনেই এলাকার বিভিন্ন স্থান থেকে বর্ষা মৌসুমের প্রায় ১৪০ ধরনের খাদ্যজাত উদ্ভিদ বৈচিত্র্য প্রদর্শন করেন। এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে তারা উপকূলীয় এলাকায় শুধু বর্ষা মৌসুমে কি ধরনের খাদ্যজাত উদ্ভিদ বৈচিত্র্য আছে যেমন ফল, সবজি, ফুল, অচাষকৃত নানান ধরনের উদ্ভিদ সেগুলো কিভাবে টিকে আছে, এগুলোর প্রাপ্তিস্থান, কি পরিমাণে আছে, কমে যাওয়ার কারণ, এগুলো সংগ্রহ ও সংরক্ষণ এবং কিভাবে তা সম্প্রসারণ করা যায় তা বর্ণনা করেন।

বর্ণনা পরবর্তী সময়ে বারসিক কমকর্তা বিশ^জিৎ মন্ডলের সঞ্চালনায় এক সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। আলোচনা সভায় বক্তব্য রাখেন জয়নগর কৃষি নারী সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রোজিনা বেগম, কৃষক হাবিবুর রহমান, প্রবীণ ব্যক্তি দিপদ মন্ডল, কৃষাণী সুমা পারভীন, সিডিও কাশিমাড়ি ইউনিটের সদস্য শিক্ষার্থী মরিয়ম ও বারসিক’র বিশ^জিৎ মন্ডল ও বিধান মধু।

প্রদর্শনী মেলায় অংশগ্রহকারীরা বলেন, ‘আমরা উপকূলীয় এলাকার মানুষ। আমাদের এখানে যেমন লবণাক্ততার মাত্রা বেশি তেমনি এখানে ঘন ঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগ লেগেই আছে। এই লবণাক্ততা ও দুর্যোগের কারণে দিনে দিনে আমাদের এলাকার প্রাকৃতিক সম্পদ কমতে শুরু করেছে। তারই মধ্যে দিয়ে আমরা এখনো অনেক সম্পদ টিকিয়ে রেখেছি বহু সংগ্রামের মধ্যে দিয়ে। এ জন্য আমাদের আরো বেশি করে সচেতন হতে হবে। আমাদের পরবর্তী প্রজন্মের কাছে এসকল উদ্ভিদ বৈচিত্র্যের ব্যবহার, পরিচিতি এবং গুণাবলী সম্পর্কে ধারণা প্রদানের জন্য এরকম মেলা খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’

তারা আরো জানান, ‘আজকের এ মেলার মাধ্যমে বর্ষা মৌসুমের আমাদের এলাকাতে কত ধরনের উদ্ভিবৈচিত্র্য আছে যা আমারা খাবার হিসাবে ব্যবহার করি তা জানতে পারলাম। আমাদের প্রতিটি পরিবারের খাদ্য ও পুষ্টি চাহিদা পূরণে এসকল উদ্ভিদ প্রতিনিয়ত ব্যবহার করতে হয়।’

অন্য অংশগ্রহণকারীররা জানান, ‘আজ আমরা এখানে শুধু খাদ্য হিসাবে ব্যবহার করা উদ্ভিদ বৈচিত্র্য দেখতে পারছি। এগুলোর পাশাপাশি এখনো অসংখ্য উদ্ভিদ বৈচিত্র্য আছে যেগুলো ঔষধি হিসাবে ব্যবহার করা হয়। পৃথিবীতে এরকম অসংখ্য সম্পদে ভরপুর আছে। সেগুলো আমরা চিনে-জেনে ও শুনে নানান কাজে ব্যবহার করবো। প্রকৃতির প্রতিটি সম্পদই গুরুত্বপূর্ণ।’

happy wheels 2

Comments