নারীরা গ্রামীণ স্থাপত্যশিল্পকে টিকিয়ে রেখেছেন

রাজশাহী থেকে সুলতানা খাতুন 

গ্রামীণ নারীরা সংসারের প্রয়োজনে স্থাপত্য শিল্পকে টিকিয়ে রেখেছেন বলছিলেন শাহেদা বেগম (৪২)। তিনি বলেন, ‘মুরগির কুঠি, যাঁতা, বসনা, মাটির কুঠি, ঢেঁকি, ছিকা ইত্যাদি তৈরি ও  ব্যবহার আমরা এটি ধরে রেখেছি।’

রাজশাহীর পবা উপজেলার বিলধর্মপুর নারী সংগঠনের ‍উদ্যোগে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত একটি সভায় এ কথা বলেছেন শাহেদা বেগম। সভায় গ্রামীণ ঐতিহ্য, স্থাপত্য শিল্প সংরক্ষণ ও এর ব্যবহার বৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা করা হয়। সভায় ৩৫ জন নারী অংশগ্রহণ করেন। আলোচনায় গ্রামীণ স্থাপত্য জ্ঞান কার মধ্যে এখনও আছে এবং কার বাড়িতে কি কি স্থাপত্য শিল্প বর্তমানে আছে সভায় তা উপস্থাপন করা হয়। 

সভায় রুনা বেগম (৩৫) বলেন, ‘আমাদের বাড়িতে যাঁতা রয়েছে যা ডাল, চাল, সাতু পিসার কাজে ব্যবহার করা হয়। এছাড়া মুরগির কুঠি, বসনা কুচা বসানোর কাজে লাগে। এই গ্রামের প্রায় বাড়িতে নারীদের তৈরি করা হাত পাখা,পাটি, হাতে সেলাই করা কাথা, ছিকা, ঢেঁকি, কাঠ দিয়ে তৈরি টাক ইত্যাদি ব্যবহার রয়েছে।’  আমেনা বেগম (৫৭) বলেন, ‘বড় বড় মাটির কুঠিতে আমরা ধান, গমসহ বিভিন্ন ধরনের বীজ রাখি, ধান ভাঙিয়ে সেখানে চালও সংরক্ষণ করে রাখা হয়। কুঠিতে কাঁথা, চাদর, কাপুর রোদে ভালো করে শুকিয়ে মুখ বন্ধ করে মাটি দিয়ে লেপে দিই। এই কুঠিতে অনেক কিছু রাখা যায়। বাড়িতে আগুন ধরলেও এই কুঠি নিরাপদ থাকে।‘

এই গ্রামের নারীদের মতো অন্য গ্রামগুলোও গ্রামীণ স্থাপত্যকলার বিষয়টি নতুন প্রজন্মরা জানুক এবং তা রক্ষার জন্য উদ্যোগ নিক এমনটিই চাচ্ছে এই নারী সংগঠনটি।

পবা উপজেলার দর্শনপাড় ইউনিয়নের বিলধর্মপুর একটি গ্রাম। এই গ্রামে ২০২০ সাল থেকে বারসিক বিভিন্ন ধরনের পরামর্শ, সহযোগিতা ও উন্নয়নমূলক কাজ করে আসছে। এখানকার জনগোষ্ঠীর চাহিদা অনুযায়ী এখানে বিলধর্মপুর নারী সংগঠন নামে একটি সংগঠন করা হয়।নারীরা সংসারে পুরুষের পাশাপাশি বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করে থাকে। পুরুষ যেমন ঘরের বাইরে কাজ করে তেমনি সংসারের বিভিন্ন ধরনের কাজ নারীরা করে থাকে।

happy wheels 2

Comments