ফুল চাষ একটি পানি সাশ্রয়ী ও লাভজনক কৃষিজ ফসল

রাজশাহী থেকে ব্রজেন্দ্র নাথ
‘ফুল চাষ পানি সাশ্রয়ী এবং একটি লাভজনক ফসল।’ কথাটি বলেছেন জিয়া শিশু পার্কের মোঃ রঙ্গিল আলী (৪০)। তিনি বলেন, ফুল চাষের আগে ধান চাষ করতাম। কিন্তু দেখেছি ধান চাষ করতে গিয়ে শ্রম, কীটনাশক ও পানি, জমি লীজ এবং চাষাবাদ বাবদ খরচ ও উৎপাদনসহ প্রায় সমান সমান হয়ে যায়। কিন্তু গাদা ফুল লাগানোর ৭৫দিন পর থেকে আরো ৭৫দিন মানে আড়াই মাস পর্যন্ত ফুল বিক্রি করতে পারা যায়।’


রঙ্গিল আলী গাঁদা ও গ্যালোডিয়া ফুল চাষ করেন। গাদাফুল ফুলের চারা অনেকে বাইরের দেশ থেকে আনেন আবার কেউ কেউ দেশের মধ্যেই চারা ক্রয় করে জমিতে লাগান। নিজেই চারা তৈরি করা একটু কঠিন বলে তিনি জানান। গাঁদাফুল রোপণ করতে এক বিঘা জমিতে সাত হাজার চারা লাগে আর গ্যালোডিয়া এক বিঘায় ৫ হাজার বীজ লাগে যাে বাজার মূল্য আড়াই হাজার টাকা। তবে গ্যালোডিয়ার বীজ একবার কিনলে দুই বছর আর কিনতে হয় না। কারণ এটা পিঁয়াজের মতো বীজগুলো ফুল তুলে নেওয়ার পর গাছের গোড়ার অংশ কেটে সংরক্ষণে রাখলে আর নষ্ট হয় না। এই ফুল এটেঁল দোআঁশ মাটিতে ভালো হয় ।

মূলত অক্টোবর মাসের শেষের দিকে এই গাঁদা ও গ্যালোডিয়া ফুলের চারা ও বীজ রোপণ করতে হয় । এই ফুল চাষ সবচেয়ে সহজ যা সবজি চাষের মতোই যতœ নিতে হয়। তবে পানি সেচ ২০ দিন পর পর দিতে হয়। মোঃ রঙ্গিল আলী আরো বলেন, ‘একবিঘা গাদা চাষ করলে সেখান থেকে আড়াই মাসে ৩ লাখ গাঁদা ফুল পাওয়া যায়। পাইকারি মূল্যে এক হাজার ফুলের দাম পাঁচ শত (৫০০ টাকা) টাকা । সেক্ষেত্রে ৩ লাখ ফুলের দাম হচ্ছে দেড় লাখ টাকা! এ পরিমাণ ফুল উৎপাদন করতে সর্বমোট ৪০ হাজার টাকার খরচ হয় (জমি, বীজ, সার, পানিসহ অন্যান্য খরচ) বলে জানান রঙ্গিল আলী।

এই প্রসঙ্গে রঙ্গিল আলী বলেন, ‘আমি এই বছর ২ বিঘা গাঁদাফুল ও এক বিঘা জমিতে গ্যালোডিয়া ফুল চাষ করেছি । ফুল চাষের পাশাপাশি কলা এবং পেঁপে চাষ করি। বিগত ১০ বছর ধরে ফুল চাষ করে আসছি কিন্তু কোন বছরই লোকসানের শিকার হইনি।’ তিনি আরও বলেন, ‘এই কৃষি ফসল চাষ করতে এই জন্যই ভালো লাগে এটা খরাকারীন ফসল। রোদ বৃষ্টির কোন ধরনের ঝামেলা পোহাতে হয়না। ফুল তোলার সময় আলাদা একটা মজা পাওয়া যায় এবং শহর থেকে অনেকে এই ফুলগুলো দেখতে আসে। এতে বেশ ভালো লাগে।’

happy wheels 2

Comments