নিরাপদ খাদ্য ও সঠিক পুষ্টিতে সুস্থ জীবন

নেত্রকোনা থেকে রোখসানা রুমি
‘প্রতি ইঞ্চি মাটি গড়বো সবুজ ঘাঁটি’-এই স্লোগানকে সামনে রেখে বারসিক’র উদ্যোগে নেত্রকোনা অঞ্চলে ১০০টি পুষ্টিবাড়ি তৈরি হয়েছে। পুষ্টি বাড়ির আওতায় কৃষাণীরা যাতে নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন করতে পারে সেজন্য বারসিক তাদেরকে কারিগরি সহযোগিতা, পরামর্শ, বীজসহ অন্যান্য সহযোগিতা প্রদান করে আসছে।


জাতীয় পুষ্টি সপ্তাহ উপলক্ষে দরুণবালি ,মৌজেবালি, ফচিকা গ্রামে কিশোরী সংগঠনের উদোগে আবুল কালামের বাড়িতে পুষ্টি সপ্তাহে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। এবারে প্রতিপাদ্য নিধারণ করা হয়েছে সঠিক পুষ্টিতে সুস্থ জীবন। আলোচনা অংশগ্রহণ করেন পুষ্টিবাড়ি প্রতিনিধি গ্রামের কৃষাণীরা। কৃষাণীরা তাদের বাড়ির উঠান ফাঁকা জায়গায় বিভিন্ন শাকসবজি চাষ করে সবুজে সমৃদ্ধ করেছেন এবং তদের নিজেদের পরিবারের চাহিদা পূরণ করেছেন। এছাড়া অতিরিক্ত শাকসবজি বিক্রির মাধ্যমে সংসারের আয় বৃদ্ধি করেছেন। শুধু তাই নয়; পুষ্টিবাড়ির প্রত্যেক সদস্য তাদের আশেপাশের বাড়িতেও বীজ বিনিময় করে প্রতিবেশিদের নিরাপদ সবজি চাষে আগৃহী করে তুলেছেন।


পুষ্টি বাড়ির প্রতিনিধি ঝুমা আক্তার বলেন, ‘বৈচিত্র্যময় নিরাপদ শাকসবজি খেতে হবে। বীজ নিজে সংরক্ষণ করতে হবে। আমি অনেক বীজ জমিতে চাষ করেছি এবং সেগুলো সংরক্ষণ করেছি। আজ স্থানীয় ৫ জাতের সবজি বীজ বিতরণ করেছি ১০ জন কৃষাণীর মধো।’ লাবণী আক্তার বলেন, ‘গর্ভবতী নারীদের পুিষ্টকর খাবার দিতে হবে শিশু জন্মে একঘণ্টা মধ্যে শাল দুধ দিতে হবে। শিশু ২ বছর বয়স পর্যন্ত মায়ের দুধের পাশাপাশি বাড়তি খাবার দিতে হবে। কিশোর কিশোরা পুষ্টিকর খাবারে উৎসাহিত করতে হবে।’

আলোচনা শেষে ৫ জন গর্ভবতী নারী পেশার, ওজন মেপে দেওয়া হয়এবং পুষ্টিকর খাবার দেওয়া হয়। ৩টি পুষ্টিবাড়ি পরিদর্শন করা হয় পরামর্শ দেওয়া হয়।


উল্লেখ্য যে, বাংলাদেশে প্রতি ৬ জন মানুষের মধ্যে একজন অপুষ্টির শিকার। ৫ বছরের কম বয়সী ৩৬ শতাংশ খর্বকায় (উচ্চতা কম), ৩৩ শতাংশ কৃশকায় (ওজন কম)। জন্মের সময় শিশুর ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় কম হলে তারা খর্বাকৃতি ও কৃশকায় হয়ে বেড়ে ওঠে; অনেক শিশুর অকালমৃত্যু ঘটে। স্বাভাবিকের চেয়ে কম ওজনের শিশু জন্মের হার একটা সময় কমতে শুরু করেছিল, কিন্তু এখন তা আবার বাড়ছে বলে বিভিন্ন পরিসংখ্যানে বলা হচ্ছে। প্রসূতি মা অপুষ্টির শিকার হলে সন্তানের জন্মের সময় ওজন কম হয়ে থাকে। মায়ের অপুষ্টির কারণে সদ্যোজাত শিশুর বুকের দুধ প্রাপ্তি অনিশ্চিত হতে পারে; বাংলাদেশে ৪৫ শতাংশ শিশু জন্মের পর প্রথম ৬ মাস শুধু বুকের দুধ পায় না। ২২ শতাংশ কিশোরীর উচ্চতা কম। এ ছাড়া নারীদের মধ্যে রক্তস্বল্পতার হারও অনেক বেশি। তবে কয়েক দশকে বাংলাদেশে পুষ্টি পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে। মানুষের গড় আয়ু বেড়েছে, মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার কমেছে, সামগ্রিকভাবে স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়েছে।

happy wheels 2

Comments