রাজশাহীর কারিগর পাড়া গ্রামকে শতভাগ ভার্মিকম্পোস্ট উৎপাদন ও ব্যবহারকারি গ্রাম ঘোষণা

রাজশাহী থেকে ব্রজেন্দ্রনাথ
রাজশাহীর পবা উপজেলার বড়গাছি-কারিগর পাড়াকে শতভাগ ভার্মী কম্পোস্ট উৎপাদন ও ব্যবহারকারি গ্রাম ঘোষণা করা হয়েছে। উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক, কারিগর পাড়া নারী উন্নয়ন সংগঠন এবং পবা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের যৌথ আয়োজনে বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০২২ উপলক্ষে গতকাল সকালে টেকসই পরিবেশবান্ধব কৃষি ব্যবস্থা বিষয়ক আলোচনা ও মতবিনিময় অনুষ্ঠিত হয়।


অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ও বিশেষজ্ঞ আলোক হিসেবে বক্তব্য রাখেন পবা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপজেলা কৃষি অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমাদের রাসায়নিক সারের বদলে আমাদের জৈব সারের উপর বেশি জোর দিতে হবে, রাসায়নিক সার আমদানি করতে সরকারকে প্রচুর টাকা ভর্তূকি দিতে হয়। ভার্মিকম্পোস্ট এর মধ্যে সকল সারের উপাদান আছে। তাই আলাদা করে অন্যকোন সার প্রয়োগ করার দরকার নেই। এর ফলে ফসল উৎপাদনে খরচও কম হবে এবং পরিবেশও রক্ষা হবে।”


আলোচনা অনুষ্ঠানে পরিবেশ ও কৃষি নিয়ে মাঠ পর্যায়ে তথ্য তুলে ধরেন বারসিক’র গবেষক ও আঞ্চলিক সমন্বয়কারি মো. শহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘আমাদের মাননীয় প্রধান মন্ত্রী টেকসই উন্নয়নের জন্য প্রকৃতি ভিত্তিক সমাধানে উপর জোর দিতে বলেছেন। সেই লক্ষ্যে আমরা কৃষকদের মধ্যে নিজস্ব সম্পদ ও প্রকৃতিভিত্তিক কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সহায়কের ভূমিকা পালন করছি। কৃষকদের নিজস্ব জ্ঞান এবং তথ্যগুলো বিনিময়ে সহায়তা করে থাকি। যাতে কৃষক তাঁদের নিজস্ব সম্পদ ব্যবহার করে পরিবেশবান্ধব কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারে। এর ফলে কৃষি হবে টেকসই এবং পরিবেশবান্ধব।’


অনুষ্ঠানে বড়গাছি কৃষক ঐক্যের সাধারণ সম্পাদক জব্বার আলীর সভাপতিত্বে আরো বক্তব্য রাখেন ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদনকারি কৃষাণী বিলকিস বেগম। তিনি বলেন, ‘আমি ২০১৭ সাল থেকে ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন করি। এটি বিক্রি করেই আমার সংসার চলে। আমার প্রতিমাসে ভার্মি কম্পোস্ট থেকে আয় হয় গড়ে বারো হাজার টাকা।’ এছাড়াও এই সারের উপকারি দিকগুলো নিয়ে কথা বলেন কৃষাণী মমেনা বেগম, কৃষক সুলতান আহমেদ, বারসিকের কৃষি কর্মকর্তা অমৃত কুমার সরকার, ব্রজেন্দ্রনাথ সহ প্রমূখ ব্যক্তিবর্গ।


আলোচনা শেষে শতাধিক কৃষক কৃষিাণীর অংশগ্রহণে বড়গাছি-কারিগর পাড়া গ্রামকে শতভাগ ভার্মি কম্পোস্ট উৎপাদন ও ব্যবহারকারি গ্রাম ঘোষণা করেন পবা উপজেলার কৃষি অফিসার মো. শফিকুল ইসলাম।
উল্লেখ যে, বড়গাছি-কাড়িপাড়া গ্রামে ৩৬ জন কৃষক-কৃষাণী ভার্মী কম্পোস্ট উৎপাদন করেন। একই সাথে গ্রামের সকল কৃষক পরিবার এই ভার্মী কম্পোস্ট সার ব্যবহার করছেন। দীর্ঘ প্রায় সাত বছর থেকে ধীরে ধীরে ভার্মী কম্পোস্ট সার তৈরী ও উৎপাদন বৃদ্ধি পেয়েছে।

happy wheels 2

Comments