বাঁশের তৈরী পণ্যে ফিরেছে সংসারে সুদিন

রাজশাহী থেকে আয়েশা তাবাসসুম

বাঁশ এক জতীয় ঘাস এ তথ্য আমরা সকলেই কম বেশি জানি। বর্তমানে বাঁশের তৈরী পণ্যে ঘর গৃহস্থালি ও হস্ত শিল্প সামগ্রী দেশের গন্ডি ছাড়িয়ে বিদেশেও যাচ্ছে। বাঁশের সলা দিয়ে বিভিন্ন ঝুড়ি, কুলা, খাঁচা সহ নানান ধরনের সামগ্রী গ্রামে ও শহরে দেখতে পাওয়া যায়। এই বাঁশের তৈরি পণ্যে সামগ্রী বিক্রি করে সংসারে সুদিন এনেছেন মোঃ রিয়াজ উদ্দিন (৫০), সাথে খেজুর পাতার পাটি বুনিয়ে বিক্রির মাধ্যমে সংসারে আর্থিক সহযোগিতা করছেন তার স্ত্রী রহিমা বিবি (৪২)।

যুগ যুগ ধরে আমাদের দেশে বাঁশের তৈরী বিভিন্ন পণ্যের ব্যবহার হয়ে আসছে। সাংসারিক জীবনে ও সৌখিন বিভিন্ন পণ্য সামগ্রী তৈরীতে বাঁশ শিল্পের কোন জুড়ি নেই। গ্রাম ও শহর সব জায়গাতে বাঁশের তৈরী পণ্যের চাহিদা পরিলক্ষিত হয়। মোঃ রিয়াজ উদ্দিন প্রায় ২০ বছর ধরে বাঁশ শিল্পের সাথে জড়িত। প্রথমে বাঁশের পণ্য নিজেদের প্রয়োজনে তৈরী করতেন। পরবর্তীতে তিনি প্রতিবেশীদের কাছে এমনকি বর্তমানে তিনি বাজারে বিক্রি করছেন এ বাঁশের পণ্য সামগ্রী। অবসর সময়ে তিনি বাড়ির আঙিনায় বসে তৈরী করেন, ঝুড়ি, চালন,কুলা, ডালা, চাড়ি, পাখা,ইত্যাদিসহ গৃহস্থালি বিভিন্ন পণ্য। তার স্ত্রী ঘরের কাজের ফাঁকে স্বামীকে সাহায্যের পাশাপাশি নিজে বুনেন খেজুর পাতার পাটি।

এ পণ্য সামগ্রি তৈরী করতে তিনি বাঁশ ঝাড় থেকে বাঁশ ও বাঁশের কঞ্চি সংগ্রহ করেন তারপর সেগুলো কেটে ফালি করে রোদে শুকাতে দেন। এরপর দা দিয়ে চেরাই করে চটা ফালি তৈরী করেন আর এ চটা ফালি দিয়েই তৈরী করেন বাঁশের পণ্য সামগ্রী। (২-৩) কঞ্চি দিয়ে তিনি একটি বড় সাইজের ঝুড়ি তৈরী করেন।

বাঁশের তৈরী এসব পণ্য নানা কাজে ব্যবহার হয়। বাশের তৈরী এসব পণ্য সামগ্রীগুলোকে মজবুত ও টেকসই করার জন্য তল্লাবাঁশ ও কঞ্চি ব্যবহার করেন। তিনি জানান তল্লাবাঁশ ব্যবহার করলে পণ্য সামগ্রী গুলো অনেক দিন ধরে ব্যবহার উপযোগী থাকে। একটি মাঝারি সাইজের ঝাকা তৈরীতে তার ২-৩ ঘণ্টা সময় লাগে। তার স্ত্রী রহিমা বিবি (৪২) খেজুর পাতায় বিভিন্ন ধরনের রং করে নানান ধরনের নকশায় পাটি তৈরী করেন। গ্রামীণ উৎসব ও মেলাতে এখনো বাঁশের তৈরী খোল, চাটাই, দোলনা, খোলই, মোড়া বুকসেল্ফ ইত্যাদি চোখে পড়ে। তবে আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিন দিন বাঁশের তৈরী পণ্যের চাহিদা কমেই যাচ্ছে। তবে জীবন জীবিকার তাগিদে এ পেশাকে ধরে রেখেছেন বলে জানান তিনি।

happy wheels 2

Comments