পাহাড়ি ঢলের বালি পাথরে কবলিত কৃষকের জমি

কলমাকান্দা নেত্রকোনা থেকে গুঞ্জন রেমা
কলমাকান্দা উপজেলার রংছাতি ইউনিয়নের চন্দ্রডিঙ্গা, শিংকাটা, হাতিবেড় ও বেতগড়া গ্রামের পাহাড় পাদদেশীয় এলাকায় একরের পর একর জমি আবারো পাহাড় ধস ও ঢলের পানিতে আসা বালি পাথরে ঢাকা পড়েছে। ফলে দুশ্চিন্তায় কৃষক। এসব বালি পাথরে পাহাড়ি ছড়াগুলোও প্রায় ভরাট হয়ে গেছে। হাতিবেড় ছড়া গতিপথ পরিবর্তন করে কৃষকের জমির উপর দিয়ে চলে গেছে।


প্রতিবছরই পাহাড়ি ঢলের সাথে বালি পাথর চলে আসে। তবে এ বছর ব্যাপক ভাবে বালি পাথর চলে আসে ফলে ছড়া ভরাট হয়ে পানি উপচে পড়ে আবাদী জমিগুলোতে। ফলে আবাদী জমিগুলো বালি পাথরে ঢাকা পড়ে যায়।
২০১৩ সালে প্রতিবেশী রাস্ট্র ভারতের পাহাড় কেটে রাস্তা ও বিএসএফ ক্যাম্প নির্মাণের ফলে পাহাড়ি ঢলের সাথে চলে এসেছিল বালি পাথর ও লোনা মাটি। ফলে অনেক আবাদী জমি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। ছড়ার ভরাট হয়ে গিয়েছিল। মানুষের আবাদী জমি অনাবাদী জমিতে পরিণত হয়েছিল ফলে অর্থিক দিক থেকে এখানকার মানুষ অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে পড়েছিল। সেগুলো কাটিয়ে উঠার জন্য মানুষ আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। কিছু জমি এখন চাষের আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছিল।


কিন্তু এ বছর ফের এর পুনরাবৃত্তি ঘটলো। তবে এবছর প্রতিবেশী রাস্ট্রের অবকাঠামো উন্নয়ন নয়। এ বছর পাহাড় ধসের কারণে ঢলের সাথে চলে আসে বালি পাথর ঝোপ ঝাড়। ফলে এ বছর আবারো ব্যাপক আকারে আবাদী জমি অনাবাদী জমিতে পরিণত হয়েছে। ফলে কৃষক পড়েছেন মহা বিপদে। এই বিপদ থেকে উত্তরণের কোন উপায় জানা নেই এখানকার কৃষকদের। কিছু কৃষক বীজতলা প্রস্তুত করে বীজ বপন করে দিয়েছিলেন কিন্তু সেসব বীজতলাগুলো এখন বালি পাথরের নিচে। সুনীল ¤্রং তিনি বীজ তলা প্রস্তুত করে ধান ভিজিয়ে রেখেছিলেন বপন করার জন্য কিন্তু পরের দিনই পাহাড়ি ঢলে বীজতলা বালুতে ঢাকা পড়ে যায়। এখন বীজ তলা করার জন্যও তিনি জায়গা পাচ্ছেন না।


অন্যদিকে সাবিনা রেমা ৪ একর জমিতে ধান চাষ করার জন্য ৪০ কেজি ধান বীজ বপন করেছিলেন কিন্তু পাহাড়ি ঢলে আসা বালী পাথরে সব বীজ তলা ঢাকা পড়ে গেছে। তার ৪ একর জমি বালুতে ঢাকা পড়ে এখন খেলার মাঠে পরিণত হয়ে গেছে। সাবিনা রেমা বলেন, ‘আমার সব জমিতেই এখন বালু আর পাথর এখন আমি ধানবীজ বপন করে কি করবো।’ সুবিমল ¤্রং এর আবাদী জমিও বালু পাথরে ঢাকা পড়েছে। তার ভাষ্যমতে, “হাতিবের এবং শিংকাটা আমাগো বড় ছদানের জমি একদম শেষ’’। পাহাড়ি ঢলে আসা বালি পাথর দ্বারা রংছাতি, খারনৈ ও লেঙ্গুরা ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী এলাকায় অনেক জমি বালি-পাথরে নষ্ট হয়ে গেছে। জমি উচ্চতা বেড়ে গেছে। দূর থেকে দেখলে বালুচর মনে হয়। ফলে এখানকার গ্রামীণ অর্থনীতি কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে বোঝা মুশকিল।

happy wheels 2

Comments