অচাষকৃত শাক আনতে এখন অনেক দূর যেতে হয়

রাজশাহী থেকে অমৃত সরকার
রাজশাহীর তানোর উপজেলার বাঁধাইড় ইউনিয়নটি সব থেকে খরাপ্রবণ এবং পানি সংকটাপন্ন এলাকা। এখানে খরার কারণে একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ জমি অনাবাদি পড়ে থাকে। সেই জমিগুলোতে জন্মায় বিভিন্ন ধরনের উদ্ভিদ। এর মধ্য অনেক উদ্ভিদ বিভিন্ন পুষ্টিগুণের জন্য এবং ঔষধি গুণের জন্য খাবার উপযোগি। তবে দিন দিন মাত্রাতিরিক্ত তাপমাত্রা, অনাবৃষ্টি ও খরার কারণে এবং মাত্রাতিরিক্ত আগাছানাশক স্প্রে করার কারণে দিন দিন কমে যাচ্ছে প্রয়োজনীয় এ উদ্ভিদ।


বারসিক ও ঝিনাপাড়া জনগোষ্ঠির যৌথ উদ্যোগে গত ২২ আগস্ট আয়োজন করা হয় ‘অচাষকৃত শাকের পাড়া মেলা’ অনুষ্ঠানের। অচাষকৃত শাকের গুনাগুণ জানা, এ সম্পর্কে প্রবীণদের জ্ঞান নতুন প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্য নিয়ে এ প্রতিযোগিতাপূর্ণ মেলার আয়োজন করা হয়। সেখানে গ্রামের বিভিন্ন বয়সের ৩৫জন নারী অংশগ্রহণ করেন। এলাকায় পাওয়া যায় এমন অচাষকৃত শাক মাঠ, ঘাট ও পতিত জায়গা থেকে তুলে এনে প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন।


এমন মেলায় অংশগ্রহণকারীর সবাই প্রথম অংশগ্রহণ করেছেন বলে জানালেন। এর মধ্যে ঝিনাপাড়া গ্রামের মোছাঃ ঐষিতা খাতুন (২৫) বলেন, ‘আমি ভাবিনি আমি আমাদের আশেপাশে বিনা চাষের ৪৫টি শাক পাওয়া যাবে। এই ৪৫টি পদের শাকের প্রতিটি আমরা খেতে পারি। এটা আসলে অনেক বড় ব্যাপার।’ তিনি ৪৫টি শাক উপস্থাপন করে প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে। ৪০টি শাক প্রদর্শন করে মোছাঃ আমেনা বেগম ২য় ও ৩৮টি শাক প্রদর্শন মোছাঃ ঝর্না বেগম ৩য় স্থান লাভ করেন।


মেলায় অংমগ্রহণ করেন ঝিনাপাড়া গ্রামের প্রবীণ নারী মোছাঃ পারুল বেগম (৬৫)। তিনি বলেন, ‘আমরা সপ্তাহে একদিন এ ধরনের শাক গুলো খাওয়ার চ্ষ্টো করি কিন্তু দিন দিন এগুলো কমেই যাচ্ছে। এখন আগের মতো বাড়ি কাছে নেই। এখন অনেক দূর যেতে হয় এ শাকগুলো সংগ্রহ করতে।’ বারসিক’র এ মেলা আয়োজনকে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘নতুনরা এ সম্পর্কে এখন জানে না এমন আয়োজনের মাধ্যমে তার অচাষকৃত শাক সম্পর্কে জানতে পারবে।’
অচাষকৃত শাক লো আগাছা নয় এগুলো খাদ্য ও ঔষধি উদ্ভিদ এগুলো সংরক্ষণ হলে খাদ্য নিরাপত্তা ও নিরাপদ খাদ্য দুটোই নিশ্চিত হবে।

happy wheels 2

Comments