হরিরামপুরের চরাঞ্চলে বন্যাত্তোর স্বাস্থ্য ক্যাম্প চরবাসীদের জন্য একটি আর্শীবাদ

হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ থেকে মুকতার হোসেন

হরিরামপুর মূলভুমি থেকে এক ঘণ্টা পদ্মা নদী পাড়ি দিয়ে এবং ৭ কিলোমিটার পায়ে হেটে লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নে পৌছা যায়। সঙ্গত কারণেই শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে পিছিয়ে আছে এই ইউনিয়নের মানুষগুলো। চর এলাকায় রাতে ডাক্তার না থাকায় জরুরি অসুস্থতার জন্য বিশেষ করে বিপাকে পড়তে হয় শিশু, নারী ও বয়স্ক মানুষের। এলাকার মানুষ অসুস্থ হলে গ্রামের পল্লী চিকিৎসক এর মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকতে হয়। এছাড়া বড় ধরনের অসুখ হলে হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ সদর হাসপাতালে নিতে হয়।

IMG_20160905_1203&&&
সম্প্রতি বন্যা হওয়ার কারণে ইউনিয়নে শিশুসহ অন্যান্য মানুষের মধ্যে খুচলি পাচড়া, পাতলা পায়খানা, সর্দি জ্বর, গ্যাষ্ট্রিক, শরীর ব্যথা, হাত ও পায়ে গুটি গুটি ঘা, চোখ উঠাসহ ভাইরাস জনিত রোগ দেখা যায়। চরাঞ্চলের এ সব মানুষের স্বাস্থ্য ঝুঁকি থেকে রক্ষার জন্য হরিরামপুরের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স, এবং বারসিক যৌথভাবে দিনব্যাপী স্বাস্থ্য ক্যাম্প আয়োজন করে লেছড়াগঞ্জ ইউনিয়নে। স্বাস্থ্য ক্যাম্পে হরিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ ভারপ্রাপ্ত ডা. নায়েব আলী নায়েক ওষুধপত্র দিয়ে সহযোগিতা করেন। বন্যাত্তোর স্বাস্থ্য ক্যাম্প পরিচালনায় সহযোগিতা করেন, ডা. শাহ মোঃ মঞ্জরুল কবির (এমবিবিএস) ফার্মাসিষ্ট সেলিম মিয়া ও অফিস সহকারী সাইদুর রহমান। চরাঞ্চালের প্রায় ২০০ শতাধিক মানুষ ক্যাম্প থেকে চিকিৎসাপত্র ও প্রয়োজনীয় ওষুধপত্র দিয়ে সহযোগিতা করা হয় উক্ত স্বাস্থ্য ক্যাম্পে।

IMG_20160905_115RR
এ ধরনের স্বাস্থ্য ক্যাম্প আয়োজন করা খুব প্রয়োজন বলে মনে করেন এলাকার মানুষ। কেননা যারা সরকারি স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত কিংবা যোগাযোগ অবস্থার কারণে এই স্বাস্থ্যসেবা থেকে বঞ্চিত হয় তারা এই স্বাস্থ্য ক্যাম্পের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা লাভ করতে পারেন। হরিরামপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবুল বাসার সবুজ, নটাখোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাহাঙ্গীর হোসেনও মনে করেন দরিদ্রদের মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে পারে এ ধরনের স্বাস্থ্য ক্যাম্প। এই প্রসঙ্গে উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, “চর অঞ্চলের  প্রতিবছর বন্যা পরবর্তীতে মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা যায়, স্বাস্থ্য ঝুকি কমিয়ে সুস্থভাবে  জীবনযাপন করার জন্য এই ক্যাম্পটি অত্যন্ত গুরুত্বপুর্ণ ভুমিকা রাখবে।” ওষুধের পাশাপাশি তিনি প্রতিটি পরিবার পরিস্কার পরিছন্ন থাকার পরামর্শ দেন। চরের মানুষ যাতে সুষ্ঠভাবে স্বাস্থ্যসেবা পেতে পারেন সেজন্য নিয়মিতভাবে লেছড়াগঞ্জ উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে চিকিৎসা দেওয়ার জন্য নিয়মিতভাবে ডাক্তার রাখার আশ্বাস প্রদান তিনি। ডাঃ মোঃ নায়েব আলী নায়েক বলেন, “চর এলাকায় মানুষের স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে সরকারের পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকেও এগিয়ে আসতে হবে।”

উল্লেখ্য যে, উক্ত স্বাস্থ্য ক্যাম্পে পাটগ্রামচর, নটাখোলা, হরিহরদিয়া, বালিয়াচক, গঙ্গাদরদী ৫টি গ্রাম থেকে শিশু, নারী, পুরুষ জন মানুষ চিকিৎসা গ্রহণ করে। তারা চিকিৎসাপত্রের পাশাপাশি এন্টিবায়োটিক, এন্টিহিষ্টামিন, ভিটামিন,  ক্রিমিনাশক, আয়রণসহ মোট ১১ প্রকারের গ্রহণ করেন।

happy wheels 2