প্রতিবেশী কৃষকদের পরামর্শক ইমদাদুল হক

সাতক্ষীরা থেকে সাইদুর রহমান

অন্য কারও ফসলের ক্ষতি হলে বা কাক্সিক্ষত উৎপাদন না হলে তাঁর মন খারাপ হয়ে যায়, তিনি বেরিয়ে পড়েন এর সমাধান খুঁজতে! বিগত ৩০ বছর ধরে এলাকার কৃষকদের ধান, আলু, হলুদ ও সরিষা চাষসহ বিভিন্ন চাষাবাদে এভাবেই পরামর্শ দিয়ে আসছেন সাতক্ষীরা সদর উপজেলার ব্রহ্মরাজপুর ইউনিয়নের জেয়ালা গ্রামের কৃষক ইমদাদুল হক। নিজের কাজের পাশাপাশি পাড়া-প্রতিবেশী কৃষকরাই তার আপনজন আর সকলের কাছেও তিনি প্রাকৃতজন।

১৯৮৬ সালে উচ্চ মাধ্যমিক পাশের পরই বসতবাড়ি সংলগ্ন আড়াই বিঘা জমিতে সম্মিলিত কৃষি খামার গড়ে তোলেন ইমদাদুল হক। ইমদাদুল হক বলেন, “প্রথম যখন কৃষি কাজ শুরু করি তখন আমার তেমন কিছুই ছিল না। কৃষি কাজ করে আমি দু’টি ছেলেকে পড়াশুনা করিয়েছি, ফিরিয়েছি আর্থিক স্বচ্ছলতা। এর পাশাপাশি আমি মানুষের প্রয়োজনে সবসময় নিজেকে নিয়োজিত করার চেষ্টা করে গেছি।”
photo-1
তার এই সম্মিলিত খামারে তিনি আলু, হলুদ, সরিষা, পেঁপে এবং শীতকালীন সবজি চাষে অর্জন করেছেন অভাবনীয় সাফল্য। একই সাথে পুকুরে চাষ করেন নানা প্রজাতির মাছ। ২০১২ সালে বাড়ির চারপাশের সীমানা ঘেঁষে পেঁপে চাষ করে পরিবারের চাহিদা মিটিয়েও তিন হাজার টাকার পাকা পেঁপে এবং দুই হাজার টাকার কাঁচা পেঁপে বিক্রি করেন। ২০১৩ সালে ৩ কাঠা জমিতে আলু চাষ করে তাক লাগিয়ে দেন স্থানীয় কৃষকদের। তিনি বলেন, “জমির পরিমাণ বেশি হওয়ার দরকার নেই। অল্প জমিতে সঠিকভাবে চাষাবাদ করেও লাভবান হওয়া সম্ভব”। জলাবদ্ধতার কারণে বর্তমানে কিছুটা অসুবিধা হলেও শীতকালীন সবজিসহ ফল এবং কচু চাষে ইউনিয়ন পর্যায়ে শীর্ষে রয়েছেন তিনি। তিনি সকলকে উদ্বুদ্ধ করেন নিরলসভাবে কাজ করে যাবার জন্য।

ইমদাদুল তাঁর নিরন্তর প্রচেষ্টা, উদ্যম এবং একাগ্রতার গুণে কাজ করে প্রমাণ করেছেন মানুষ ইচ্ছা করলে নিজের ভাগ্য পরিবর্তন করতে পারে। অন্যের সহযোগিতার ওপর মুখাপেক্ষী না থেকেই নিজেই নিজের ভাগ্য লিখতে পারেন।

happy wheels 2