উন্নত চুলা পরিবেশ ও স্বাস্থ্য ভালো রাখে

তানোর, রাজশাহী থেকে আনিতা বর্মণঃ

তানোর উপজেলায় অবস্থিত গোকুল-মথুরা গ্রামে পরিবেশ বান্ধব চুলা তৈরী বিষয়ক এক প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে ২৩ মে, মঙ্গলবার সকাল ১০ টায়। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান বারসিক এর সহযোগিতায় এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়েছে। কর্মশালায় হাতে কলমে চুলা তরৈী এবং ব্যবহাররে প্রশক্ষিণ দনে হরিদেবপুর  গ্রামের মোসা. কবুলজান বেগম। গোকুল-মথুরা গ্রামের শ্রী জিতেন্দ্রনাথ সুত্রধর এর বাড়িতে এই কর্মশালাটি আয়োজন করা হয়। এই কর্মশালায় অংশগ্রহণ করেন গ্রামের ২০ জন নারী ও ৩ জন পুরুষ। হাতে কলমে চুলা তৈরির মাধ্যমে এই চুলার সুবিধা এবং প্রস্তুত প্রণালী সর্ম্পকে আলোচনা করেন মোসা. কবুলজান বেগম। তিনি বলেন, “গ্রাম অঞ্চলে রান্নার কাজে বর্তমানে উন্নত চুলার ব্যবহার বাড়ছে। তাছাড়া বাড়িতে বাড়িতে এই চুলা তৈরি করে বাড়তি টাকা আয় ও করা যায়।” আমরা সাধারণত যে চুলা ব্যবহার করি তাতে

চলছে উন্নত চুলা তৈরির কর্মশালা

চলছে উন্নত চুলা তৈরির কর্মশালা

ধোঁয়া ও জ্বালানী অপচয় বেশি হয়। অন্যদিকে উন্নত চুলায় অল্প জ্বালানীতে বেশি রান্না সম্বভ এবং ধোঁয়া ও অনেক কম হয়।” উন্নত চুলা ব্যবহার কারীদের কাছ থেকে জানা যায় সাধারন চুলার চেয়ে এ চুলায় ৫০-৭০ ভাগ জ্বালানী খরচ কম হয়। বিভিন্ন দিক দিয়ে সুবিধার কারণে উন্নত চুলার ব্যবহারও দিন দিন বাড়ছে। শুধু তাই নয় একদিকে উন্নত চুলায় কম খরচে রান্না করা যেমন সম্ভব তেমনি অন্যদিকে একই সাথে পরিবেশ ও রাধুনির স্বাস্থ্য ভালো রাখা ও সম্ভব। আর এই কারণে বর্তমানে গ্রামের অধিকাংশ মানুষ উন্নত চুলা ব্যবহারে আগ্রহী হচ্ছে।

বাংলাদেশের বেশির ভাগ মানুষ রান্না-বান্নার কাজে বিভিন্ন গাছের কাঠ, পাটের লাঠি, লতা-পাতা, খড়, গোবরের তৈরি ঘুটা ইত্যাদি জ্বালানী হিসাবে ব্যবহার করে আসছে। কিন্তু সাধারণ চুলায় এগুলো বেশি পরিমাণ লাগে। পাশাপাশি এই চুলায় ধোঁয়া নির্গমনের পথ উন্মুক্ত থাকায় ঘরের পরিবেশ দূষিত করে এবং পরিবেশের ক্ষতি করে। শিশু ও মহিলা যারা অধিক সময়ব্যাপি রান্না ঘরে অবস্থান করেন, তারা পুরাতন পদ্ধতির চুলায় রান্না-বান্না করার ক্ষেত্রে দুষক ও বিষাক্ত পর্দাথের ঝুঁকিতে থাকেন এবং তারা তাদের স্বাস্থ্যের ক্ষতি করেন।

নিজেই উন্নত চুলা বানাচ্চেন একজন অংশগ্রহণকারী

নিজেই উন্নত চুলা বানাচ্চেন একজন অংশগ্রহণকারী

কিন্তু খুব স্বল্প সময় এবং খরচে খুব সহজেই একটি উন্নত চুলা তৈরি করা সম্ভব। প্রস্তুুত প্রণালী সর্ম্পকে কবুলজান বেগম বলেন, “প্রথমে এটেঁল মাটি, তুষ, খড় ও পানি দিয়ে মাটি গুলো ভালো ভাবে প্রস্তুুত করতে হবে। চুলার আকার ঠিক করে ২ ভাগে ভাগ করে নিন। এরপর কাদা দিয়ে একটি অংশের ভিটি তৈরি করুন। ভিটির মাঝে ফাঁকা রাখতে হবে। এটি হচ্ছে মূখ্য চুলা। এবার মূখ্য চুলার পাশে গৌণ চুলা তৈরি করুন, এটি প্রথম গর্তের চেয়ে ছোট হবে। এর উপর মাটির প্রলেপ দিয়ে চুলার আকৃতি তৈরি করতে হবে। দুই গর্তের মাঝে একটি নালা দিন, যেন মূখ্য চুলার থেকে গৌণ চুলায় আগুন যেতে পারে। গৌণ চুলার ভিটির ওপর সিমেন্টের পাইপ বসিয়ে দিন। যা রান্না ঘরের চালা দিয়ে ধোঁয়া বাইরে বের হয়ে যাবে এরপর পাইপের মাথায় একটি টুপি লাগিয়ে দিলেই তৈরি হয়ে যাবে উন্নত চুলা।”

র্কমশালায় জ্বালানি সাশ্রয়, ক্ষতকির র্কাবণ নঃিসরণ হ্রাস, ও পরবিশেরে ভারসাম্য রক্ষায় পরবিশে বান্ধব চুলা ব্যবহাররে উপর গুরত্বারোপ করা হয়। এর পাশাপাশি নারীরা একমত পোষণ করেন বলেন, পরিবেশ, স্বাস্থ্য ভালো রাখতে মা ও শিশু স্বাস্থ্য রক্ষা করতে আমরা সকলেই এই উন্নত চুলা ব্যবহার করব এবং অন্যদেরও উদ্বুদ্ধ করব।

 

happy wheels 2

Comments