আকাশভরা সূর্য, বিশ্বভরা প্রাণ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়, রাজশাহী থেকে তাহমিদ হাসান সজল:

“আকাশভরা সূর্য-তারা, বিশ্বভরা প্রাণ,
তাহারি মাঝখানে আমি পেয়েছি মোর স্থান,
বিস্ময়ে তাই জাগে আমার গান।”

– রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, আকাশ ভরা সূর্য-তারা বিশ্বভরা প্রাণ, গীতিবিতান।

প্রকৃতির প্রকৃতি আদতে আলো। এই আলোর বিন্যাস সমাবেশকেই আমরা রঙ বলি, আর আলোহীনতাকে বলি অন্ধকার। প্রাকৃতিকভাবে প্রাপ্ত আলোর সবচেয়ে বড় উৎসের নাম আমরা দিয়েছি- সূর্য। সূর্য থেকে যেহেতু আমরা আলো পাই, তাই সূর্যের প্রকৃতিই আলোর প্রকৃতি। অর্থাৎ, সূর্যের প্রকৃতি ও প্রকৃতির প্রকৃতি এক ও অভিন্ন।

পৃথিবীর আকাশে খালি চোখে সবচেয়ে বড় যে নক্ষত্রটি দেখা যায় তা হল সূর্য, যার আগমনে প্রকৃতি আলোকিত হয়ে উঠে এক নতুন সাজে। মানুষ যখন আগুন জ্বালানোও শিখেনি, সূর্যই ছিল আলো ও তাপের একমাত্র উৎস। সহস্রাব্দের পর সহস্রাব্দ পুব আকাশের এই অতিথির আগমন দিল মানুষের সমাজে একে চিরস্থায়ীত্বতার প্রতীক, শ্রেষ্ঠত্বর প্রতীক। সূর্যের বিশালতাকে স্বীকার করে নিয়ে, মুগ্ধ হয়ে অনেক সমাজেই একে অধিষ্ঠান করা হয়েছে দেবতার আসনে। বিশেষত, মিশরীয় সভ্যতার আমন রা যাকে হোরাস বলেও সম্বোধন করা হয়, গ্রীসের হেলিওস, রোমান সল এদের অবস্থান দেবকুলে খুবই উঁচুতে। বর্তমানে সূর্যের আহ্নিক গতি, বার্ষিক গতি সংক্রান্ত জ্ঞান সূর্যের এই মহামতি আসনকে আরো সমৃদ্ধ করেছে, বিশেষত সৌরশক্তির ব্যবহার আবিস্কারের পর।

পৃথিবীর খাদ্যশৃংখল মূলত সূর্যকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে। আমাদের বেঁচে থাকার জন্য সবচেয়ে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন তৈরী করা সম্ভব নয় সূর্যের আলোর উপস্থিতি ব্যতীত। প্রকৃতির যে রুপ দেখে আমরা মুগ্ধ হই তা মূলত সূর্যের আলোর উপস্থিতি, কোণ বা পরিমাণের কারসাজি। পৃথিবীর আহ্নিক গতি, বার্ষিক গতির সাথে সূর্যালোকের মিথস্ক্রিয়ার ফলে প্রকৃতির রুপ ক্ষণে ক্ষণে বদলায়। গ্রীক পুরানে সূর্যের এই বদলকে বোঝাতে কল্পনা করা হয়েছিল হেলিওস নামক দেবতার। যিনি প্রত্যুষে তার রথে করে সূর্যকে আকাশে হাজির করান এবং সারাদিন আকাশময় দাপিয়ে পশ্চিমে অস্ত যান।
সূর্যের সেই রঙ, বর্ণকে ক্যামেরার লেন্সে ধরার এক ব্যর্থ প্রচেষ্টা।

আলোকচিত্র-১: দিনের সূচনা

নতুন দিনের আশা নিয়ে পুব আকাশে সূর্যের আগমনের সাথেই দিনের সূচনা ঘোষিত হয়, শুরু হয় কর্মব্যস্ততা, প্রাণচাঞ্চল্য।

আলোকচিত্র-২: সকালের প্রশান্তি

ভোরের লালচে আভাযুক্ত আগমন দ্রুত মিলিয়ে যায়, সেই স্থান দখল করে নীল ও সাদা। মৃদু হাওয়ার সাথে এই নীল রঙ এক ধরনের প্রশান্তি এনে দেয়।

 

আলোকচিত্র-৩: শিশিরের রঙধনু

সময় গড়ানোর সাথে সাথে নীল পরিবর্তিত হয়ে আরো গাঢ় রঙ ধারণ করে। ঘাসের সবুজ রঙ শিশিরে মিলেমিশে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রঙধনু তৈরী করে।

 

আলোকচিত্র-৪: ঝলমলে সবুজ সকাল 

বেলা আরো গড়ালে সূর্যের তেজ আরো বৃদ্ধি পায়। ফলে সকালের ভেজা ঘাস ও ধানগাছ দ্রুতই ঝলমলে সবুজ রঙ ধারণ করে।

 

আলোকচিত্র-৫: রৌদ্রস্নাত  দুপুর  

মাঝ আকাশে সূর্যের অবস্থান করলে আমরা তাকে বলি দুপুর। এসময় সূর্যের আলোতে চারপাশ আদতেই জ্বলজ্বল করে, রৌদ্রস্নান করে পৃথিবী।

 

আলোকচিত্র-৬: হলুদাভ বার্ধক্য

দ্রুতই বিদায় নেয় সূর্যের এই যৌবনকাল। বার্ধক্য এর শুরুতেই পশ্চিম দিকে ঢলতে থাকে সে। খানিকটা কৌণিক আলোতে সবুজগুলো কিছুটা হলুদাভ হয়ে ধরা পরে।

আলোকচিত্র-৭: দ্বিধান্বিত উদাস বিকেল

বিকেল হতেই  দ্বিধান্বিত হয়ে উদাস মনে ভাবি, প্রকৃতি কোন আলোতে বেশি মনমুগ্ধকর?

আলোকচিত্র-৮: কর্মব্যস্ততার সমাপ্তি

পশ্চিমে সূর্যের ঢলে পরা ইঙ্গিত দেয় কর্মব্যস্ততার সমাপ্তির। বিদায়বেলায়ও সূর্য তার স্বীয় তেজ সমেত প্রস্থান করে।

 

আলোকচিত্র-৯: লাল সিঁদুরে সন্ধ্যা

মন খারাপ করা বিকেল ফুরিয়ে আসে মৃদু শীতল সন্ধ্যা। পশ্চিম আকাশে ঢলে পড়া সূর্য মাথার সিঁথির লাল সিঁদুর রঙ ধারণ করে।

 

আলোকচিত্র-১০: পরিশ্রান্ত রাত

দফগফদ্গফদ

*** সকল আলোকচিত্রের কপিরাইট লেখক এবং বারসিক নিউজ এর।

happy wheels 2