মানিকগঞ্জে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে ‘স্কোয়াশ’ আবাদ
মানিকগঞ্জ থেকে আব্দুর রাজ্জাক
শীতকালীন সবজির তালিকায় নতুন যোগ হওয়া নাম ‘স্কোয়াশ’। এটি একটি বিদেশি সবজি। স্কচ আঞ্চলিক নাম হলেও এর প্রকৃত নাম স্কোয়াশ বলে জানা গেছে। ইতোমধ্যে ভোজনরসিকদের মাঝে আলোড়ন তুলতে সক্ষম হয়েছে এই নতুন সবজি। এদিকে ব্যাপক লাভজনক হওয়ায় মানিকগঞ্জে ক্রমশই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে স্কোয়াশ আবাদ। বেশ আগ্রহ দেখা দিয়েছে স্থানীয় কৃষকদের মাঝে ।
মানিকগঞ্জের ঘিওরে স্কোয়াশ চাষে ব্যাপক সফলতা অর্জন করেছেন পুরাণ গ্রামের মো. জয়নাল আবেদীন ঝন্টু ও বাষ্টিয়া গ্রামের মো. ফরমান মিয়া। জয়নাল আবেদীন ৭ বিঘা জমিতে আবাদ করেছেন স্কোয়াশ। সব মিলিয়ে খরচ পড়েছে এক লক্ষ টাকা। পাঁচ দফায় বিক্রি হয়েছে ২ লক্ষাধিক টাকার ওপরে। আরো এক দেড় লাখ টাকার মতো স্কোয়াশ বিক্রি করতে পারবেন বলে তিনি আশাবাদী। মাত্র ৯০ দিনেই লাখপতি হওয়ার এক উজ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তিনি। পাশের বাষ্টিয়া গ্রামের মো. ফরমান প্রথমবারের মতো স্কোয়াশ আবাদ করেছেন ২০ শতাংশ জমিতে। তিনিও বিক্রি করেছেন ২৫ হাজার টাকার মতো।
জয়নাল আবেদিন ঝন্টু বলেন, “২৫-৩০ দিনে ফুল থেকে সবজি ধরতে শুরু করে। ৪০-৪৫ দিনে মাথায় ক্ষেত থেকে সবজি তুলে বাজারে ওঠান। বাজারের প্রথম দিনে বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি জানান, নতুন সবজি পেয়ে ক্রেতাদের মাঝে ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়। রাজধানী ঢাকার কারওয়ান বাজার ও বাইপাইল সবজি আড়তে তিনি পাইকারী মণ প্রতি ৪শ থেকে সাড়ে চারশ টাকায় বিক্রি করেন।
বাষ্টিয়া গ্রামের মো. ফরমান মিয়া জানান, অল্প সময়ে ও অন্যান্য ফসলের চেয়ে কম খরচে স্কোয়াশ উৎপাদন করা যায়। তাছাড়া এক বিঘা জমিতে যে পরিমাণ কুমড়া লাগানো যায় তার চেয়ে দ্বিগুণ এ সবজি আবাদ করা সম্ভব। গাছের একেকটি গোঁড়ায় ৮ থেকে ১২টি পর্যন্ত স্কোয়াশ বের হয়।
জয়নাল আবেদীনের সফলতায় এ ফসল চাষের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন বানিয়াজুরী, বালিয়াখোড়া, মাইলাঘী, আশাপুর, সিংজুরী, রাধাকান্তপুরসহ আশপাশের গ্রামের অসংখ্য কৃষক। ভালো বীজের নিশ্চয়তা ও চাষের প্রয়োজনীয় পরামর্শ মিললে এটি এ অঞ্চলের প্রধান অর্থকরী ফসল হতে পারে বলে মনে করেন উপজেলা কৃষি বিভাগ।
বাজারে প্রতি কেজি স্কোয়াশ বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ২৫ টাকায়। স্কোয়াশ দেখতে লাউ আকৃতির, খেতে সুস্বাদু। উচ্চ ফলনশীল এই দুই জাতের ফসল ভাজি, মাছ ও মাংসে রান্না উভয়ভাবেই খাওয়ার উপযোগী এবং সুস্বাদু। বিশেষ করে চাইনিজ রেস্টুরেষ্টে সবজি এবং সালাদ হিসেবে এর ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
এ ব্যাাপারে ঘিওর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আশরাফ উজ্জামান বলেন, “স্কোয়াশ আমাদের এখানে নতুন আবাদ করা সবজি। এই সবজি আবাদে অন্যান্য ফসলের চেয়ে উৎপাদন ও মুনাফা দুটোই বেশি। স্কোয়াশ আবাদে কৃষককে যে কোন পরামর্শ কিংবা সহায়তা দিতে মাঠ কর্মীদের গুরুত্বের সাথে দেখতে বলা হয়েছে।”