সাম্প্রতিক পোস্ট

জমির আইলে মসলা চাষে সফল কৃষক নুরুল ইসলাম

ঘিওর, মানিকগঞ্জ থেকে সুবীর কুমার সরকার

মানিকগঞ্জ জেলার ঘিওরের কৃষক মো. নুরুল ইসলাম (৫৯) কৃষিকাজের হাতেখড়ি পেয়েছেন তার বাবা ও চাচার কাছ থেকে। দুই কন্যা কলেজে পড়াশোনার পাশাপাশি পরিবারের কৃষিকাজে সহায়তা করে। দীর্ঘদিনের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতা কাজে লাগিয়ে তিনি জমির আইলে রবি মৌসুমের মসলা চাষে সফলতা অর্জন করেছেন। নিজের পরিবারের চাহিদা মিটিয়ে বাজারে বিক্রি করেও তিনি ভালো আয় করছেন।

তিনি জানান, “আমি প্রতিবছর জমির আইলে বিভিন্ন মসলা চাষ করি, যেমন- ধনিয়া, কালিজিরা, মিষ্টি সজ, রসুনের সাথে উস্তে, পেয়াঁজের চারপাশে মসলা ফসল। এতে আমাদের পরিবারের মসলার চাহিদা মিটে, পাশাপাশি বাড়তি আয়ও হয়।”

কৃষক নুরুল ইসলাম আরও বলেন, “আমাদের ছোটবেলায় দেখেছি, বাবা-চাচারা রবি মৌসুমে ফসলি জমির আইলে মসলা চাষ করতেন। বর্ষার পরে জমিতে পলি পড়ার ফলে আলাদা সার না দিলেও ভালো ফলন হয়। এছাড়া, মাটির স্বাস্থ্য ভালো রাখতে খেসারি চাষ করি, যা জমির উর্বরতা বাড়ায়।”

তিনি ধান, পাট, তিল, খেসারি, দেশি আলু, টমেটো, চৈতা সরিষা, মাঘি সরিষা, উস্তে এবং অন্যান্য মৌসুমি ফসল চাষ করেন। মাটির স্বাস্থ্য ধরে রাখতে প্রতি বছর গোবর সার ব্যবহার করেন। তার মতে, “নিরাপদ খাদ্য উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বৈচিত্র্যময় ফসল চাষ গুরুত্বপূর্ণ।”

তার দুই কন্যা দেবেন্দ্র কলেজে পড়ার পাশাপাশি বাবাকে কৃষিকাজে সহায়তা করে। বাড়িতে গরু, ছাগল, হাঁস, মুরগি ও কবুতর পালন করেন, যার ফলে পরিবারের পুষ্টি চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি খরচও কমে যায়।

এ বছর তিনি ১০ বিঘা জমিতে ফসল চাষ করছেন, যার মধ্যে-৪০ শতাংশ দেশি আলু, ৩৫ শতাংশ উস্তে, ১৫ শতাংশ টমেটো, ১৫ শতাংশ পেয়াঁজ এবং বাকি জমিতে খেসারি ও সরিষা

এছাড়া, ৩৫ শতাংশ জমিতে রসুনের সাথে উস্তে চাষ করেছেন, এবং জমির আইলে মিষ্টি সজ, ধনিয়া ও কালিজিরা চাষ করেছেন। তার এই উদ্যোগ দেখে গ্রামের অন্যান্য কৃষকরাও জমির আইলে মসলা চাষ শুরু করেছেন।

কৃষি কার্যক্রমকে আরও দৃশ্যমান করতে বারসিক তার বাড়িকে “শতবাড়ি মডেল বাড়ি” হিসেবে চিহ্নিত করেছে। কৃষকদের ব্যবহারিক প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে তিনি অন্যদেরও মসলা চাষে উৎসাহিত করছেন।

happy wheels 2

Comments