ভাসমান ধাপে সবজি ও মসলা জাতীয় ফসল উৎপাদন
সাঁথিয়া, পাবনা থেকে জালাল উদ্দিন ঃ
বর্ষাকালে দেশের সবজি ও মসলা জাতীয় ফসলের অভাব পূরণ করতে পাবনার সাঁথিয়ায় এই প্রথম কচুরী পানার ভাসমান ধাপে (মাদা) সবজি ও মসলা জাতীয় ফসলের চারা উৎপাদন শুরু হয়েছে। এ পদ্ধতিতে ফসল উৎপাদন দেখে অনেকেই উদ্বুদ্ধ হয়েছেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাঁথিয়ার ইছামতি নদীতে ( সাঁথিয়া পৌরসভাধীন) উপজেলা কৃষি অফিসের উদ্যোগে কচুরি পানা ও জলজ ঘাসের ৩০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ৬ ফুট প্রস্থ ৫টি ভাসমান ধাপে সবজি ও মসলা জাতীয় ফসলের চারা উৎপাদন করা হয়েছে। ১নং ধাপে লাল শাক, ২নং ধাপে গিমা কলমি, ৩নং ঢেঁড়স, ৪নং ধাপে লাউ এবং ৫নং ধাপে পালং শাক আবাদ করা হয়েছে। এ পদ্ধতিতে ফসল উৎপাদন দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে পৌরসভাধীন কোণাবাড়ীয়া গ্রামের কৃষক রেজাউল করিম, সোহেল রানা, অহিদুল ইসলাম, আঃ বাতেন ও কৃষানি শিলা খাতুন ভাসমান ধাপে সবজির আবাদ করেছেন।
সাঁথিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রঞ্জন কুমার প্রামানিক জানান, যে সমস্ত কৃষক একেবারেই নিঃস্ব বা যাদের জমি নেই তারা বাড়ীর পার্শ্বে কোন ডোবা, জলাভূমি ও নদীতে কচুরী পানা, জলজ ঘাস বা উদ্ভিদ একত্রিত করে ভাসমান ধাপে এ জাতীয় ফসল উৎপাদন করে স্বাবলম্বি হতে পারে। এছাড়া ধাপে আবাদ করতে চাষ করতে ও সেচ দিতে হয় না, পোকা-মাকড়ের ভয় নেই, ঘিরতে হয় না, সুষম রাসায়নিক সার ও কীটনাশক প্রয়োগ করতে হয় না। ফলে কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয় না। বলা চলে বিনা খরচেই আবাদ করা সম্ভব। তিনি আরো বলেন, আমাদের দেশে বর্ষাকালে ভারি বর্ষণে বিপুল পরিমাণ জমি পানিতে নিমজ্জিত হয়ে পতিত পড়ে থাকে। এছাড়া পানি নেমে জমি আবাদের উপযোগি হতে আগাম রবি ফসলের চাষও বিলম্বিত হয়। তাই এসব পতিত জমিগুলোকে সবজি ও মসলা জাতীয় ফসল চাষের আওতায় আনা গেলে বর্ষাকালে ও আগাম রবি মৌসুমে ঐ সব ফসলের ঘাটতি মেটানো সম্ভব।