হরিরামপুরের নারীদের সফল উদ্যোগ

হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ থেকে সত্যরঞ্জন সাহা

 হরিরামপুরের নারীরা প্রমাণ করলেন চেষ্টায় সফলতা আসে, কাজে দক্ষতা ও অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি পায়। হরিররামপুর উপজেলার আন্দারমানিক, যাত্রাপুর, ঝিটকা কালই মনি ঋষি সম্প্রদায়, দাসকান্দি, কর্মকারকান্দি, কান্ঠাপাড়া, দিয়াপাড় ও পাটগ্রামচর গ্রামের ১২০ জন নারী পোশাক ও নকশীকাথা তৈরির হাতে কলমে প্রশিক্ষণ নিয়ে তারা নিজেদের জীবনকে পাল্টে দিচ্ছেন। এই উদ্যোমী নারীদের চেষ্টায় পরিবারের সকল কাজ সেরে বিকালে প্রশিক্ষণে বসে পোশাক তৈরির কাজ শিখেছেন। এদের কেউ শিক্ষার্থী, কেউ স্বামী পরিত্যাক্তা আবার কেউবা গৃহিনী।

 প্রথমে পরিবারকে সহযোগিতা করার জন্য ৫০ জন মিলে তারা সেলাই মেশিন কিনে বাড়িতে কাজ শুরু করেন। সফলতার সাথে কাজ করায় এলাকায় ব্যাপক সাড়া পড়ে যায়। প্রশিক্ষিত নারীদের কাজ দেখে আত্মীয় স্বজনরাও স্ব-উদ্যোগে বিভিন্ন এলাকায় পোশাক তৈরির প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেন। কিছুদিনের মধ্যে দিয়াপাড়, দড়িকান্দি, খালপাড় বয়ড়া গ্রামের নারীরাও পোশাক তৈরির প্রশিক্ষণ নেয় আরও ১৫ জন নারী। তারা সেলাই মেশিন কিনে বাড়িতে থ্রী-পীচ, ব্লাউজ, পেটিকোট সেমিজ, মেক্সি, শিশুদের জামা-প্যান্ট, ফতুয়া, ফ্রক, নিমা তৈরি করছেন।

Tailoring

যাত্রাপুর গ্রামের উদ্যোক্তা মনি আক্তার তার অভিজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, “পোশাক তৈরির প্রশিক্ষণ দিয়ে বাড়িতে নিজের পরিবারের ও এলাকার মানুষের কাজ করছি যা আমাদের সকলের জন্য ভালো হয়েছে। আমার পরিবারে লোকজন প্রথমদিকে আমাকে পোশাক তৈরির কাজ শিখতে নিষেধ করলেও পরবর্তীতে আমার সফলতা তাদের অনুপ্রাণীত করেছে।” তিনি বলেন, “এখন আমি এলাকার নারীদের কাজ শেখাতে পারব। স্বামীর আয়ের পাশাপশি আমার এই আয়ের টাকা দিয়ে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ, পারিবারিক চিকিৎসা, হাট বাজার খরচসহ সংসারের খরচ মেটাতে সক্ষম হচ্ছি। ঘরে বসে আমি মাসে ৪০০০ থেকে ৫০০০ টাকা পর্যন্ত আয় করতে পারছি।”

আন্দারমানিক গ্রামের আরেক উদ্যোগী নারী সাথী আক্তার বলেন, “পরিবারে আমার বাবা না থাকায়, মা খুবই কষ্টে সংসার পরিচালনা করতেন। তার উপর আমরা দুই বোন কলেজে লেখাপড়া করি। আমাদের নিজেদের উদ্যেগে বারসিক অফিসের সহযোগিতায় পোশাক তৈরির প্রশিক্ষণ পেয়ে বাড়িতে সেলাই মেশিন কিনে কাজ করে এখন সংসার ও লেখাপড়া ভালোভাবে চলছে। আর এ কাজের মাধ্যমে পরিবারে ও সমাজে আমাদের সম্মানও বৃদ্ধি পেয়েছে।”

happy wheels 2