করোনাকালেও নিরাপদ খাদ্য উৎপাদনে ব্যস্ত মাসুদ বিশ্বাস
ঘিওর, মানিকগঞ্জ থেকে সুবীর কুমার সরকার
ঘিওর উপজেলার শোলকুড়া গ্রামের কৃষক মাসুদ বিশ্বাস (৪২)। তিনি মহামারী করোনাকালে লকডাউনের সময় বাড়িতে এসে সাতটি মরিচের জাত নিয়ে গবেষণা করছেন। এ সময় তিনি গলা ছিলা মুরগির জাত বৃদ্ধিকরণ নিয়ে ডিম থেকে বাঁচ্চা ফুটিয়েছেন, দেশী ফল বাংগী ও কাঁঠাল চাষ করছেন। এছাড়া তিনি ট্রের ভেতর বালু দিয়ে আদা ও হলুদ চাষ করছেন, পটল ও সবজি জৈব উপায়ে চাষ করেছেন। এভাবে তিনি জৈব উপায়ে খাদ্য উৎপাদন করে এলাকার মানুষের নিরাপদ খাদ্য যোগানে ভূমিকা রেখেছেন। এই করোনাকালেও তিনি অনবরত কৃষিকাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। কখনও মাঠে ফসল রোপণ করছেন, কখনও বাড়িতে বিভিন্ন উপায়ে সবজি চাষ করছেন।
অন্যদিকে মাসুদ বিশ্বাস মাটির উর্বরতা শক্তি বাড়ানোর জন্য মুরগির বিষ্ঠাসহ জৈব সার করছেন। তাঁর মতে, সবজি ক্ষেতের মাটিতে বিভিন্ন রোগ জীবাণু থাকে, বিশেষ করে ফসলের কৃমি। তিনি মনে করেন, এসব জীবাণু প্রতিরোধ করা যায় মুরগীর বিষ্ঠা ব্যবহার করলে। মাসুদ বিশ্বাস মনে করেন, কৃষকরা যদি সবাই জৈব উপায়ে খাদ্য উৎপাদন করেন তাহলে দেশে নিরাপদ খাদ্যের অভাব হতো না। এছাড়া জৈব উপায়ে কৃষি কাজ করলে মাটিতে অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার হতো না। এতে করে মাটির বন্ধু কেঁচোসহ অন্যান্য উপকারী অণুজীব বেঁচে থাকতো।
মাসুদ বিশ্বাস বলেন, ‘প্রকৃতির লঙল কেঁচো। কেঁচো মাটির ভেতরে বায়ু চলাচল ঠিক রাখে এবং মাটির ভেতরে জৈবিক ক্রিয়া সচল রাখে। সে জন্য আমাদের সকলের উচিত প্রকৃতির লাঙলকে জমির মধ্যে টিকিয়ে রাখা।’ মাসুদ বিশ^াস নিজে এবং অন্যদের সব সময় এ বিষয়ে উদ্বুদ্ধ করে থাকেন। তাঁর মতে, রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহার করলে এসব কেঁচো মরে যায়।
কৃষকরা এদেশের খাদ্য যোগানদার। তারা মাঠে ফসল ফলিয়ে আমাদের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ভূমিকা রেখে চলেছেন। তাই তো তাঁরা বিশ্বব্যাপী মহামারী করোনা সংকটকালে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ফসল উৎপাদন করছেন এবং বাজারে তাদের উৎপাদিত ফসল বিক্রি করছেন। মাসুদ বিশ্বাসের মতো আরও অনেক কৃষক আছেন যারা জৈব উপায়ে খাদ্য উৎপাদন করে আমাদের সবার নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণে ভূমিকা রেখেছেন।