প্রতি ইঞ্চি মাটি, গড়ব সোনার ঘাঁটি
সাতক্ষীরা থকে মননজয় মন্ডল:
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলা, প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে রক্ষা, বৈশ্বিক উষ্ণতা কমানো সর্বোপরি প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে বৃক্ষ সম্পদ ও বনায়নের অবদান গুরুত্বপূর্ণ। দিনে দিনে জলবায়ু পরিবর্তন হচ্ছে। আর এই পরিবর্তনে পৃথিবীর সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চল ও দেশগুলো সবচেয়ে বেশি হুমকির সন্মূখীন। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ একটি অন্যতম প্রধান দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বাংলাদেশের নানাবিধ প্রাকৃতিক দুর্যোগের হাত থেকে উপকূলকে রক্ষা করতে বনায়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সময়পযোগি কাজ।
‘প্রতি ইঞ্চি মাটি, গড়বো সোনার ঘাঁটি’ এই লক্ষ্যে মুজিব শতবর্ষে ২০ হাজার এলাকা উপযোগি গাছের চারা রোপণের উদ্যোগ নিলেন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক। সাতক্ষীরার উপকূলীয় শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ও বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নে বারসিক’র সহযোগিতায় স্থানীয় জনগোষ্ঠী ও যুব সংগঠন উপজেলা প্রশাসন ও স্থানীয় সরকারকে সমন্বয় করে প্রতিবেশীয় বনায়ন কার্যক্রম এর অংশ হিসেবে গাছের চারা বিতরণ করা হয়। এর আগে স্থানীয় জনগোষ্ঠী, জনসংগঠন ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিকট থেকে বনায়নের লক্ষ্যে চারার চালিকা ও চাহিদা নিরুপণ করা হয়। ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে সমন্বয় করে তালিকা চুড়ান্তকরণ করা হলে সে অনুযায়ী চারা সহযোগিতা বা বিতরণ করা হয়।
লবণ সহিষ্ণু ও প্রতিবেশ উপযোগি কদবেল, লেবু, পেঁয়ারা, তেতুল, আশফল, আমলকি, বেদানা, মেহগনি, অর্জুন, কাঞ্চন, লম্বু, নিম, গোল ও কেওড়া চারাগুলো স্থানীয় নার্সারি থেকে ক্রয় করা হয়। সংগৃহীত ফলজ বনজ ও ঔষধি গাছের চারাগুলো বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের, খোশালখালী, আবাদ চন্ডিপুর, পানখালী, চুনা, খাসকাটা, বনবিবিতলা, পাকড়াতলী, বুড়িগোয়ালিনী, কলবাড়ী, মাঝের আইট, আড়পাংগাশিয়া, মাদিয়া, বিলআটি, দূর্গাবাটি, পোড়াকাটলা, ভামিয়া, দাতিনাখালী গ্রাম পদ্মপুকুর ইউনিয়নের বন্যতলা ও পাখিমারা গ্রাম ও বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান এসকল চারা সহযোগিতা করা হয়। পারিবারিক পর্যায়ে বসতভিটা, আঙিনা, নদীর চর ও রাস্তার পাশে এ সকল গাছের চারা রোপণ করা হয়।
উল্লেখ্য বিগত ৫ জুন বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে ১০টি পরিবারে ৫০টি গাছের চারা বিতরণের মাধ্যমে ২০ হাজার গাছের চারা বনায়নের শুভ উদ্বোধন করেন বুড়িগোয়ালিনী ইউপি চেয়ারম্যান ভবতোষ কুমার মন্ডল। এসময় তিনি বলেন, ‘আমাদের উপকূলকে বাঁচাতে ও সবুজায়ন করতে বনায়নের কোন বিকল্প নেই। প্রতিবেশীয় বনায়নের মধ্য দিয়ে প্রকৃতি রক্ষা পাবে।’
বিশ্বব্যাপী করোনা ভাইরাসের ব্যাপকতাকে মাথায় রেখে যতদুর সম্ভব সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে এবং সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে সামগ্রিক বনায়ন কার্যক্রমে সহযোগিতা করেন উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় সরকারের প্রতিনিধি, প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটি, যুব সংগঠন সুন্দরবন স্টুডেন্টস সলিডারিটি টিম, সিডিও, জনসংগঠন ও স্থানীয় জনগোষ্ঠী।