হিরা বেগমের হাতের নকশি কাঁথা খুবই জনপ্রিয়
রাজশাহী থেকে মোছা. সুলতানা খাতুন:
‘সময়টা ২০১৬ সালের প্রথমদিকে। গ্রামের মধ্যে একটি নারী উন্নয়ন সংগঠন তৈরি হয়। আমি সেখানে সদস্য হই। নিজেদের সমস্যা আর সম্ভাবনার কথাগুলো নিয়ে আলোচনা হয়। নানা জনের নানা চাহিদা। আমরা প্রায় ১৫ জন হাতের কাজ শিখতে চাই। সেই থেকে শুরু আমার যাত্রা।’
উপরোক্ত কথাগুলো বলছিলেন রাজশাহীর পবা উপজেলার বিলনেপাল পাড়া গ্রামের হিরা বেগম। উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক নারীদের সম্ভাবনাগুলো কাজে লাগাতে তাদের হাতের কাজের, সুই সুচিসহ বিভিন্ন শিখন অভিজ্ঞতা বিনিময়ে সহযোগিতা করে। এরপর এই গ্রামের এখন দিনে দিনে প্রায় ২৫০ এর বেশি নারী হাতের কাজ করে নিজের আয় বৃদ্ধি করেছেন। সংসারে নানা ধরনের খরচের যোগান দিচ্ছেন। করোনাকালে মানুষের আয় কমেছে। কিন্তু এই নারীরা বাড়িতে বসেই নানা কাজ করে নিজেদের আয়ের পথ চলমান রেখেছেন।
সেরকমই একজন নারী হিরা বেগম। করোনাকালিন সময়ে বাড়িতে থেকে সেলায় মেশিনে কাঁথা সেলাই করে ভালো আয় করছেন বিলনেপাল পাড়া নারী সংগঠনের নারী মোসাঃ হিরা বেগম। তার পরিবারের সদস্য সংখ্যা তিন জন। স্বামী কৃষি কাজ করে ও ছেলে ¯œাতকে পড়ছে। তিনি কাঁথা সেলাই করে ছেলের লেখা পড়ার খরচ ও সংসারের বিভিন্ন কাজে স্বামীকে সহযোগিতা করতে পারেন। তার কাছ থেকে কথা বলে জানতে জানা যায়, কাঁথা সেলাই কওে তিনি মাসে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা মাসে আয় করেন। তিনি পটল, নকসি, কলাপাতা, নিমকি, তেঁতুল পাতাসহ বিভিন্ন ধরনের সেলাই করে থাকে। নিজ গ্রামের পাশাপাশি পাশ্ববর্তী গ্রাম থেকে মানুষ এসে তার কাছ থেকে কাঁথা সেলাই করে নিয়ে যান। তিনি কাঁথা সেলাই এর পাশাপাশি থ্রিপিস,ব্লাউজ, পেটিকোট বিভিন্ন ধরনের সেলাইয়ের কাজ পারেন।
হিরা বেগমের সেলাই করা কাঁথা খুবই জনপ্রিয় এখানকার মানুষের কাছে। তাই তাঁকে দেখে অনেক নারী কাঁথা সেলাই এ আগ্রহী হচ্ছেন। করোনাকালীন এই সময়ে হিরা বেগমের মতো আরও অনেক নারী আছেন যারা নানান উপায়ে পারিবারিক অর্থনীতিকে সচল করার চেষ্টা করে যাচ্ছেন।