বুচনা জাল দেশী মাছের নতুন ফাঁদ !

বুচনা জাল দেশী মাছের নতুন ফাঁদ !

দেবদাস মজুমদার,বিশেষ প্রতিনিধি, উপকূলীয় অঞ্চল

সাম্প্রতিক ঘূর্ণিঝড় রোয়ানুর প্রভাবে সৃষ্ট অতি বর্ষণ ও জোয়ারের প্লাবণে উপকূলীয় খাল, বিল ও মাঠঘাটে এখন পানির প্রবাহ বাড়ছে। জোয়ারের পানিতে ভেসে আসছে নানা জাতের দেশী মাছ। বর্ষা মৌসুমে এ মৌসুমে উপকূলে মাছ ধরতে দেশী প্রজাতির মাছ শিকারে নানা ধরনের জাল ও বাঁশের তৈরি চাই ব্যবহার হয়ে থাকে। তবে উপকূলে দেশী প্রজাতির মাছ শিকারে হাতে বোনা জাল ও বাঁশের কঞ্চির উপকরণে তৈরি একটি বিশেষ জালের ব্যবহার দিনদিন বাড়ছে। হাতে তৈরি এ মাছের ফাঁদের পরিচিতি স্থানীয় ভাষায় বুচনা জাল। সাধারণত যেখানে পানির প্রবাহ আছে সেখানে এ বুচনা জাল পেতে খুব সহজেই দেশী মাছ শিকার করা যায়। উপকূলে বর্ষা মৌসুমে ইদানিং দেশী মাছ শিকারে বুচনা জালের ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও মৎস্য বিভাগ কর্তৃক এ বুচনা জাল নিষিদ্ধ।
devdas-pic-3
উপকূলে বর্ষা মৌসুম শুরর আগেই বুচনা জালের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা সদরের দক্ষিণ বাজারে প্রতি সোম ও শুক্রবার এ বুচনা জালের হাট বসে। এ হাট হতে অনেক জাল ব্যবসায়ি পাইকারী বুচনা জাল ক্রয় করে উপকূলীয় হাট বাজারে বিক্রয় করে। এ ছাড়া মঠবাড়িয়া উপজেলা সদরের সাপ্তাহিক বুধবারের হাটে শহরের বালুর মাঠে বুচনা জালের পাইকারী ও খুচরা বাজার বসে। কাউখালী ও মঠবাড়িয়ার বুচনা জালের প্রতি সপ্তাহে কয়েক লাখ টাকার জাল কেনাবেচা হয়। মঠবাড়িয়ার ধানীসাফা, মাছুয়া ও তুষখালী বাজারেও সপ্তাহে বুচনা জালের হাট বসে।

মঠবাড়িয়ার হাটের বুচনা জাল বিক্রেতা মো. সোলায়মান মিয়া জানান, বুচনা জালের প্রচলন হওয়ায় বাঁশের তৈরি চাইয়ের ব্যবহার কমছে। এমনিতেই দিনদিন বাঁশের সংকট। তাছাড়া বুচনা জাল দিয়ে মিঠাপানিতে বর্ষা মৌসুমে মাছ ধরা অতিসহজ। বুচনা জাল সহজে বহনযোগ্য।
devdas-pic-1
কাউখালী দক্ষিণ বাজারের বুচনা জাল ব্যবসায়ি মো. ছালাম হাওলাদার জানান, জ্যৈষ্ঠ, আষাঢ, শ্রাবণ ও ভাদ্র এ চার মাসে বুচনা জাল দিয়ে মিঠা পানিতে দেশী মাছ ধরা হয়। প্রতিটি বুচনা জাল দুই শত থেকে আড়াই শত টাকায় কেনা বেচা হয়। গ্রামের নি¤œ আয়ের মানুষজন বুচনা জাল দিয়ে পুরো বর্ষা মৌসুমে গড়ে প্রতিদিন ৪০০/৫০০ টাকা আয় করেন।

এ ব্যাপারে মঠবাড়িয়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মো. ইকবাল হোসেন বলেন, “বুচনা জাল ও বাঁশের চাই দিয়ে মাছ শিকার সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। এতে দেশী অনেক মাছের পোনা নষ্ট হয়। যা দেশের মিঠা পানির দেশী মৎস্য সম্পদের জন্য ক্ষতিকর।” তিনি আরও বলেন, “বুচনা জাল ব্যবহার বন্ধে সকলকে সচেতন করতে মৎস্য বিভাগ থেকে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। মাছের ফাঁদ বুচনা জাল ও বাঁশের চাই জব্দ করতে শিঘ্রই অভিযান চালানো হবে।

happy wheels 2

Comments