গ্রামে গ্রামে ধার দিয়ে বেড়ান নূর আলী

আসাদুল ইসলাম, সাতক্ষীরা থেকে
‘এ ধার লাগবে ধার.. ধার.. ধার .. লাগবে ধার। শুনে মনে একটু খটকা লাগতে পারে, মানুষ ধার (ঋণ) দেওয়া থেকে দূরে থাকতে চাই। আর ইনি কি না প্রচার করে ধার দিয়ে বেড়াচ্ছেন। তাও আবার গ্রামের পর গ্রাম। কিন্তু খটকা লাগার কিছুই নেই। কারণ এটা সে ধার নয়। এটা দা, বটি, কাঁচি, ছুরি, সীল ও যাতায় ধার দিয়ে যন্ত্রপাতির কার্যক্ষমতা বৃদ্ধির প্রক্রিয়া। আর এই ধার দেওয়া আমাদের দেশের প্রাচীন পেশা। যেটাকে বলে ‘ধারওয়ালা’।
এমনই একজন ধারওয়ালা নূর আলী গাজী। গ্রামের পর গ্রাম ছুটে বেড়ান ধার দেওয়ার জন্য। কাঁধে ধার দেওয়ার যন্ত্রটি নিয়ে ছুটে যান গ্রাম-গ্রামান্তরে। আর রাস্তা দিয়ে বলতে বলতে যান, ধার লাগবে….. ধার।
story-pic-2-2
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার নূরনগর গ্রামের নূর আলী গাজী ১৯/২০ বছর ধরে ধার দিয়ে জীবন-জীবিকা অর্জন করছেন। ধার দেওয়া যন্ত্রটি বাই-সাইকেলের ফ্রেমে বিশেষভাবে আটকানো। তাতে একটি পাথর সংযুক্ত করে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে দা, বটি, কাঁচি ছুরিতে ধার দেন তিনি।
আর ধার দেওয়ার জন্য তিনি শ্যামনগর উপজেলাসহ কালিগঞ্জ, আশাশুনি, দেবহাটা, সাতক্ষীরা সদরের বিভিন্ন এলাকাতে ছুটে যান। সীল ৩০ টাকা, যাতা ৩০ টাকা, বটি ১০ টাকা, ছুরি ১০ টাকা ও যাতিতে ধার দেন ৫ টাকায়। এতে প্রতিদিন তিন-চারশ টাকা আয় হয় তার।
নূর আলী গাজী জানান, এই পেশাটি তার বাপ-দাদার পেশা। তাই পেশাটি তিনি ধরে রেখেছেন। এটা আগের মত আর চলে না। আগে সাত-আটশ টাকা এমনকি দিন হাজার টাকা রোজগার হতো। কিন্তু দিন দিন এ পেশায় রোজগার কমে যাচ্ছে। অনেকেই পেশা পরিবর্তন করছেন। ক’দিন পর মানুষ এই পেশার লোক খুজে পাবে না।

happy wheels 2