মানিকগঞ্জে শীতের সবজিতে কৃষকের মুখে হাসি
আব্দুর রাজ্জাক, মানিকগঞ্জ থেকে
মানিকগঞ্জে শীতের সবজিতে কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। নানা জাতের শীতকালীন সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন মানিকগঞ্জ জেলার কৃষকেরা। মানিকগঞ্জ সদর, সাটুরিয়া, দৌলতপুর, ঘিওর, হরিরামপুর, শিবালয় ও সিঙ্গাইর উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বিস্তীর্ণ জমি শীতকালীন সবজিতে ভরে গেছে। এসব জমিতে উৎপাদিত লাউ, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, লালশাক, মূলা শাক, পালং শাক জেলার চাহিদা মিটিয়ে রাজধানীর আশুলিয়া ও ঢাকাসহ বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে স্থানীয় কৃষকরা দেখছেন লাভের মুখ।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলার সাতটি উপজেলায় এবার ৭ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজির আবাদ হয়েছে। গত বছর আবাদের পরিমাণ ছিল সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর। এ বছর ১ লাখ ৮০ হাজার মেট্রিক টন সবজি উৎপাদন হবে।
জেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিন দেখা গেছে, জমিতে এখনও লাল শাক, ফুলকপি, বাঁধাকপি, বেগুন, লাউ তুলতে কৃষক কৃষাণিরা ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছেন। স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত এসব সবজি জেলার বিভিন্ন ছোট বড় বাজারে সরবরাহ করা হচ্ছে।
জান্না এলাকার কৃষক ইব্রাহিম মিয়া বলেন, “আমি এবার ৪০ শতাংশ জমিতে কপি চাষ করেছি। সার, বীজ সব মিলিয়ে আমার খরচ হয়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। এ মৌসুমে কপি বিক্রি করে আমি ৫০ হাজার টাকা লাভ করার আশা করছি।”
ঘিওরের মইলাঘী গ্রামের মোঃ মুন্নাফ মিয়া জানান, তিনি সারাবছরই সবজি চাষ করে থাকেন। অন্যান্য সবজির পাশাপাশি এবছর তিনি ১৩০ শতাংশ জমিতে লাউ, টমেটো ও শীমের চাষ করেছেন। এতে তার খরচ হয়েছে ৭০ হাজার টাকা। অগ্রহায়ণ থেকে চৈত্র মাস পর্যন্ত তিনি এই লাউ বিক্রি করতে পারবেন। এবছর আশানুরূপ লাউয়ের ফলন হয়েছে। ইতিমধ্যে তিনি প্রায় দেড় লাখ টাকার লাউ বিক্রি করেছেন। এ মৌসুমে তিনি প্রায় ৪/৫ লাখ টাকার লাউ বিক্রি করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন।
সিঙ্গাইরের কৃষক সিরাজুল ইসলাম জানান, ২০ হাজার টাকা খরচ করে ৩৫ শতাংশ জমিতে তিনি এবার বেগুন ও ফুল কপির চাষ করেছেন। এতে তার প্রায় ৪০/৫০ হাজার টাকা লাভের সম্ভাবনা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, “এবার জমিতে পোকার উপদ্রব কম থাকায় ফলন ভালো হচ্ছে।”
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক আলীমুজ্জামান মিয়া জানান, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে মানিকগঞ্জের কৃষকেরা বাম্পার ফলন পাবে বলে আশা করা যাচ্ছে।