বরুন্ডি গ্রামে আমন মৌসুমে ১২১ ধরণের স্থানীয় ধানের মাঠ দিবস

::হরিরামপুর, মানিকগঞ্জ থেকে সত্যরঞ্জন সাহা::

img_20161128_122241

মানিকগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার বরুন্ডি গ্রামের কৃষকরা ১২১ ধরণের স্থানীয় ধানের মধ্য থেকে বিগত ২৪ নভেম্বর ২০১৬ তারিখে অনুিষ্ঠত মাঠ দিবসের মাধ্যমে বিভিন্ন বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে ৮ ধরণের ধানজাত চাষাবাদের জন্য পছন্দ করেন।

বরুন্ডি গ্রামের কৃষকরা বিগত ৬ বছর যাবৎ এলাকা উপযোগী স্থানীয় ধানজাত বাছাইয়ের জন্য পরীক্ষণ পরিচালনা করছেন। কার্যক্রমের ধারাবহিকতায় তারা চলতি আমন মৌসুমে সম্পূর্ণ জৈব পদ্ধতিতে জাত সংরক্ষণসহ মোট ১২১ ধরণের স্থানীয় জাতের চাষ করেন। কৃষকরা জীবনকাল, আবহাওয়াগত প্রতিকূলতা সহিষ্ণুতা, উৎপাদনশীলতা ইত্যাদি বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে চলতি বছর কাইশ্যাবিন্নি, পুইট্যাআইজং, মকবুল, সাহেব, চাপশাইল, হাতিজোড়, তিলককুচি এবং আব্দুলহাই ধানগুলো নির্বাচন করেন।

মাঠ দিবস উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় বরুন্ডি কৃষক দলের সদস্যরা তাদের কার্যক্রম সম্পর্কে তুলে ধরেন। অনুষ্ঠানে কৃষাণি আলেয়া বেগম বলেন, এখানকার কৃষানিরা নিজেদের মধ্যে শাকসব্জির বীজ বিনিময়ের ফলে সব্জি বীজের জন্য বাজার কেন্দ্রিক নির্ভরতা কমেছে। গ্রামের বর্ষীয়ান কৃষক গুরুদাস সরকার বলেন, কৃষকদের নিজেদের উৎপাদিত কম্পোস্ট দিয়ে চাষাবাদের ফলে বর্তমানে ধান উৎপাদনে রাসায়নিক সার ব্যবহার অনেকটা কমেছে। দীর্ঘদিন যাবৎ গ্রামে ধানজাতবৈচিত্র্য নিয়ে প্রায়োগিক গবেষণার ফলে কৃষকরা নিজেদের পছন্দের ধানজাত সংগ্রহ করতে পারছেন এতে এলাকায় ধানবৈচিত্র্যতা ক্রমশ বাড়ছে। তিনি বলেন, বরুন্ডি মাঠে কাইশ্যাবিন্নি ধান ১৫ দিন পানির নিচে তলিয়ে থাকলেও ভাল ফলন হয়েছে। কৃষকরা এখন রাজভোগ, বেগম, মনিশাইলসহ বিভিন্ন ধরণের স্থানীয় জাতের চাষ করছেন।

মাঠ দিবসের আয়োজনে প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জনাব আলীমুজ্জামান মিয়া, উপপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, খামার বাড়ি, মানিকগঞ্জ। মনজুর আলম খান, জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা, মানিকগঞ্জ, মোঃ আবুল হাসান, সহকারী কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা, মানিকগঞ্জ সদর, বিমল রায়, আঞ্চলিক সমন্বয়কারী, বারসিক-মানিকগঞ্জ ও জিল্লুর রহমান, কৃষিবিদ, বারসিক-মানিকগঞ্জ রিসের্স সেন্টার। আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন বরুন্ডি কৃষক সংগঠনের সভাপতি কৃষক বৈদ্যনাথ সরকার।

happy wheels 2