রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে খুদে কূটনৈতিক সম্মেলন
বরেন্দ্র অঞ্চল প্রতিনিধি
বাস্তুসংস্থান সুরক্ষা ও স্থাযীত্বশীল উন্নয়নের লক্ষ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের সামনে দাঁড়িয়ে বেশ কিছু তরুণ। সবার চোখে স্বপ্ন, তারুণ্যের ছাপ আর বুকভরা উদ্যম। তারা এসেছেন আন্তঃছায়া জাতিসংঘ সম্মেলনে যোগ দিতে। চেষ্টা-যুক্তির মাধ্যমে শ্রেষ্ঠ কূটনীতিবিদের মেডেল অর্জনের লক্ষ্যে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের ১৮০ জন তরুণ শিক্ষার্থী বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি হয়ে যোগ দেন এ সম্মেলনে। বিতর্ক আলোচনা, পর্যালোচনার মধ্যে দিয়ে তারা বিশ্বের সকল দেশের পরিবেশ উন্নয়নের মধ্যে দিয়ে স্থায়ীত্বশীল উন্নয়নের স্বপ্ন দেখেন।
ব্যতিক্রমধর্মী আন্তঃছায়া জাতিসংঘ সম্মেলনের আয়োজন করেছিল বিশ্ববিদ্যালয় মডেল ইউনাইটেড নেশন্স অ্যাসোসিয়েশন (আরইউমুনা) ও বেসরকারি উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠান বারসিক। সম্প্রতি দু’দিনব্যাপী আয়োজিত এ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ সুখরঞ্জন সমাদ্দার ছাত্র-শিক্ষক সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে (টিএসসি)।
সম্মেলনে এবারের প্রতিপাদ্য ছিল ‘এনসিওরিং ইকুইটি থ্রু অ্যাচিভিং সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট গোলস’ (টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য অর্জনের মাধ্যমে নিরপেক্ষতা নিশ্চিতকরণ) এবং ‘ অনলি ইকোসিস্টেম ক্যান ইনসিউর ফুড সিকিউরিটি ফর অল লিভিং বিইংস’ (একমাত্র বাস্তুসংস্থান সুরক্ষাই সকল প্রাণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে)।
আয়োজনে আগত প্রতিনিধিরা চারটি কমিটিতে যোগদান করে বিভিন্ন দেশের হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন। স্থায়িত্বশী উন্নয়নের পূর্বশর্ত হিসেবে ইকোসিস্টেম সুরক্ষা, নিরেপেক্ষতার জন্যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক নানা সমস্যা, অসুবিধা, ভুলত্রুটি ও পরিবেশবান্ধব সমস্যার কথা তুলে ধরার পাশাপাশি আলোচনা-সমালোচনা এবং যুক্তির মাধ্যমে সেসব সমস্যার সমাধান করাই ছিল তরুণ প্রতিনিধিদের কাজ। তাদের কূটনৈতিক প্রতিভাকে সঠিকভাবে মূল্যায়ন করার জন্য ছিলেন ১৩ জন বিচারক।
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সচেতন তরুণ শিক্ষার্থীদের মাধ্যমে যাত্রা হওয়া স্বেচ্ছাসেবী এই সংগঠনটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই বিভিন্ন ধরনের সামাজিক ও পরিবেশ উন্নয়ন কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। ধারবাহিক কাজের অংশ হিসেবে তরুণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে বাস্তুসংস্থান ও সকল প্রাণের খাদ্য নিরাপত্তা, পরিবেশ সুরক্ষাসহ স্থায়িত্বশীল উন্নয়নে দিকগুলো সচেতনতা প্রচার ও তাদের আগামীর সঠিক নেতৃত্বে ভূমিকা রাখবে বলে বিশ্বাস।
সম্মেলনে অংশ নেওয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রপ সায়েন্স বিভাগের শিক্ষার্থী মুশফিকা ফেরদৌস মীম বলেন, ‘জাতিসংঘের আদলে এ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। গুরুত্বপূর্ণ কমিটি গঠনের মাধ্যমে বিভিন্ন সেশনে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক বিষয়বস্তু নিয়ে আলোচনা-সমালোচনা চলে। এ আয়োজনে সম্পৃক্ত হওয়ার মাধ্যমে আমরা জ্ঞানের সমৃদ্ধি ঘটাতে পেরেছি। আলোচিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আমাদের মাঝে সচেতনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।’
মডেল ইউনাইটেড নেশন্স অ্যাসোসিয়েশনের (আরইউমুনা) আয়োজন ও ভবিষ্যৎ চিন্তাধারা নিয়ে সংগঠটির প্রেসিডেন্ট ইমরুল হাসান বলেন, ‘আমরা মূলত শিক্ষার্থীদের সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি যুক্তি দ্বারা কোনো বিষয়ের সমাধানের পাশাপাশি শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্য সামনে নিয়ে এ ধরনের আয়োজন করে থাকি। কেননা, একটি দেশ তখনই এগিয়ে যাবে যখন দক্ষ জনশক্তি তৈরি হবে এবং তারা নিজের সম্পদ সুরক্ষা করতে শিখবে। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে সে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।’
সম্মেলন শেষে দুটি ক্যাটেগরিতে ১৪টি অ্যাওয়ার্ড পায় শ্রেষ্ঠ প্রতিনিধিরা। এছাড়া অংশ নেওয়া প্রতিনিধিদেও মধ্যে সনদ দেওয়া হয়।