খাবার পানির জন্য হাহাকার
![](https://barciknews.com/wp-content/uploads/2020/05/101439212_187381715816022_7061333552142483456_n.jpg)
শ্যামনগর সাতক্ষীরা থেকে ফজলুল হকঃ ঘূর্ণিঝড় আম্পানে দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে । আম্পানে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগরের উপকূলের বেড়িবাঁধগুলো। উপকূলের মানুষের পানির আধারগুলো নষ্ট হওয়ায় সুপেয় পানির জন্য হাহাকার চলছে । পুরো উপকূলজুড়ে চারিদিকে শুধু পানি আর পানি, কিন্তু সুপেয় পানি নেই কোথাও। জানা যায়, ঘূর্ণিঝড় আম্পানে সাতক্ষীরা শ্যামনগর উপকূলের গাবুরা, পদ্মপুকুর, কাশিমাড়ি, বুড়িগোয়ালিনীর অধিকাংশ বেড়িবাঁধ ভেঙে গিয়ে এলাকায় পানি প্রবেশের ফলে সুপেয় পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। আম্পানের কারণে বুড়ি গোয়ালিনী ইউনিয়নের বেড়িবাঁধের দাতীনাখালী ও দুর্গাবাটি এই দুটি স্থান ভেঙে যাওয়ায় আশপাশের ৯টি গ্রাম জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয় । ফলে এসব এলাকায় বসবাসরত প্রায় সাড়ে চার হাজার পরিবারের বাড়িতে কোথাও ২-৩ ফুট আবার কোথাও আরও বেশি নদীর পানি প্রবেশ করে । ফলে এসব বাড়ি বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে, দেখা দিয়েছে তীব্র পানীয় জলের সংকট । চলাচলের রাস্তা এবং পানির উৎস ক্ষতি হওয়ার কারণে সুপেয় পানির অভাবে দিন কাটাচ্ছেন তারা । বুড়ি গোয়ালিনীর মতো পুরো উপকূলজুড়ে একই চিত্র। স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন সিডিও ইয়ুথ টিম ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষের মাঝে পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট ও ভ্যানের মাধ্যমে বাঁধভাসি মানুষের সুপেয় পানির ব্যবস্থা করে যাচ্ছে প্রথম থেকে। সুন্দরবন স্টুডেন্টস সলিডারিটি টিমও সুপেয় পানি বিতরণের জন্য উপকূলীয় মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে । এদিকে বেসরকারি সংস্থা লিডার্স ও সুপেয় পানি বিতরণ করছে, সুশীলন রি-কল ২০২১ প্রজেক্টের নিজস্ব পানি বিশুদ্ধকরণ প্লান্ট থেকে ভ্যানের মাধ্যমে প্রতিদিন অতি ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় দুর্গত মানুষের মাঝে দুই হাজার লিটার করে খাবার পানি সরবরাহ করা হচ্ছে ।
![](https://barciknews.com/wp-content/uploads/2020/05/100624990_307516310263805_3825948028234104832_n.jpg)
দাতিনাখালী গ্রামের বনজীবি নারী সংগঠনের সভানেত্রী সেফালি বেগম বলেন, চারদিকে পানি আর পানি কিন্তু সেটা লবণ পানি । আমাদের এখন প্রধান সমস্যা সুপেয় পানির । এলাকার কোথাও কোন সুপেয় পানি নেই । এই সংকটে আমাদের প্রথম প্রয়োজন হলো সুপেয় পানি। তিনি আরো বলেন, সরকারিভাবে এবং বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, এনজিওরা পানি দিলেও সেটা আমাদের জন্য যথেষ্ট নয় । গাবুরা ইউনিয়নের চকবারা যুব উন্নয়ন আইএফএম কৃষক সংগঠনের সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, গাবুরায় বেড়িবাঁধ ভেঙে সুপের পানির পুকুরগুলোতে লোনা পানি প্রবেশ করেছে । এতে করে খাবার পানিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় কাজে মিষ্টি পানির জন্য ব্যাপক কষ্টে আছি। পানির অভাবে গোসল করতে পারছি না। গায়ে চুলকানি দেখা দিচ্ছে। তাছাড়াও যাতায়াত ব্যবস্থাও ভেঙে পড়ায় অন্য জায়গা থেকে পানি আনতে পারছি না ।
শ্যামনগর উপজেলার নির্বাহী অফিসার আ ন ম আবুজর গিফারী বলেন, আম্পানের কারণে বাঁধ ভেঙে পানির আধার নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এই অঞ্চলের মানুষেরা সুপেয় পানির অভাবে আছেন । আমরা ইতোমধ্যে স্বেচ্ছাসেবকদের মাধ্যমে বিভিন্ন এলাকায় পানি বিতরণ করছি। সেনাবাহিনীও পানি বিতরণ করছে |