দীর্ঘস্থায়ী ও মজবুত বেড়ীবাঁধের দাবি উপকূলবাসীর
সাতক্ষীরা শ্যামনগর থেকে মননজয় মন্ডল :
ঈদের দিন সাতক্ষীরার শ্যামনগরের বুড়িগোয়ালিনী ও গাবুরা ইউনিয়ন ও খুলনা জেলার কয়রা উপজেলার উত্তর বেদকাশি ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকা পরিদর্শনের সুযোগ হল। নদীর বাঁধের অবস্থা খুবই ভয়াবহ। ভাঙন এলাকা মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। নদীর বাঁধ বাঁধতে এখনো ১০/১৫ দিন ময় লাগবে জানান বুড়িগোয়ালিনী ইউনিয়নের সদস্য কামরুল হাসান। শাকবাড়ীয়া নদীর কিনারে বসবাসকারী সুনিল মন্ডল (৫৫) বলেন, পো ঠাকুর দাদার ভিটা ছেড়ে কোনদিন যাব না। নদী ভাঙনকে আমরা ভয় করিনা। নদীর প্রবল জোয়ারে তার ঘর ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। তবুও তিনি নতুন করেই আবার বাঁচার স্বপ্ন দেখেন।
প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপকূলীয় মানুষের নিত্যসঙ্গী । নদী ভাঙ্গন সুদীর্ঘ সময় ধরে মানুষের জীবনের সাথে মিশে থাকা একটা কালো অধ্যায়। পানি উন্নয়ন বোর্ডের পর্যবেক্ষণ অনুযায়ী সারাদেশে প্রা তিনশ‘ভাঙনপ্রবণ’ এলাকা স্পষ।ট রয়েছে। প্রায় প্রতিবছরই সেখানে কম বেশি ভাঙন দেখা যায়। তবে বর্ষা মৌসুমে এই ভাঙ্গনের তীব্রতা বেশি দেখা যায়।
উপকূলীয় বেড়ীবাঁধ ভাঙন প্রকৃতিগত বিষয় হলেও এ দুর্যোগের মাধ্যমে প্রতিবছর জানমালের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। নদী ভাঙন বার বার উপকূলে আঘাত হাতে ভাসিয়ে নিয়ে যায় ঘরবাড়ী বসতভিটা। হারাতে হয় জীবন ও জীবিকার নানান রশদ। তবুও হাল ছাড়েনা উপকূলবাসী। যুগ যুগ ধরে নিরন্ত প্রচেষ্টা চালিয়ে টিকে আছে উপকূল এলাকার সংগ্রামী মানুষেরা। ঘুর্নিঝড় আসে , ভাঙ্গে নদীর বাঁধ, প্লাবিত হয় এলাক। সবকিছু হারিয়ে আবারও ঘুরে দাঁড়ানোর সংগ্রাম অব্যাহত রাখে মানুষেরা। পরপর কয়েকটি বড় ঘুর্ণিঝড় লন্ডভন্ড করে দিয়ে গেছে উপকূল কিন্তু মানুষ থেমে যায়নি।
সিডর, আইলা, মহাসেন, বুলবুল সর্বশেষ আম্ফান উপকূলকে-উপকূলের মানুষদের চরমভাবে ক্ষতবিক্ষত করে দিয়ে গেল কিন্তু মানুষ আবার নতুন স্বপ্ন বুকে নিয়ে ঘুরে দাড়াচ্ছে। সবাই মিলে ঝাঁপিয়ে পড়ছে বেড়িবাঁধ নির্মাণ ও ভাঙনরোধ করার কাজে। উপকূল এলাকার বেড়িবাঁধগুলো খুবই নাজুক অবস্থার মধ্যে রয়েছে। ইউনিয়ন পরিষদের উদ্যোগে ও সরকারী সহযোগিতায় বাঁধগুলো নির্মাণ হলেও তা স্থায়ী হয়না। এক্ষেত্রে অদৃশ্য কারণেই বাঁধগুলো সঠিকভাবে নির্মাণ হয়না বলে স্থানীয় মানুষদের দাবি। এক্ষেত্রে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সেনাবাহিনীর উদ্যোগে ওয়াপদার রাস্তাগুলো মেরামত করা হলে তা দীর্ঘস্থায়ী ও মজবুত হবে বলে উপকূলবাসীর বিশ্বাস।