প্রান্তিক নারীর প্রচেষ্টায় সবজি বাগান
রাজশাহী থেকে তহুরা খাতুন লিলি
গ্রীন সিটি ক্লিন সিটি হিসেবে পরিচিতি রাজশাহী মহানগড়। এই শহরে ছোট বড় মিলে বস্তির সংখ্যা ১১৪টি। দেশের অন্যান্য শহরের মতো রাজশাহীতেও দিনে দিনে বস্তির সংখ্যা বাড়ছে। বাড়ছে জনসংখ্যাও। নানা দুর্যোগ আর দুর্ঘটনায় ভিটেবাড়ি, কর্মসংস্থান হারিয়ে কিছু মানুষ গ্রাম থেকে এসে বাস করেন শহরে ভালো জীবনের প্রত্যাশায়। কিন্তু শহরে এসেও তাঁদের দুর্ভোগ আর দুর্যোগ থেমে থাকেনা। থাকার জায়গার সমস্যাসহ নানা সমস্যায় পড়তে হয় এই মানুষগুলো। কোন মতে খুপড়ি ঘরে জায়গা করে থাকেন অনেকে।
তেমন একজন নামোভদ্রা বস্তিতে বসবাসরত নারী আরিফা বেগম। তার স্বামী সাইফুল। ৬ বছরের সংসার। কোনমতে সরকারি রেলের খাস জায়গায় একটি ঘর তুলে বাস করছেন। ঘরের আশপাশে একটু ফাঁকা জায়গা আছে। দীর্ঘদিন থেকে সেই জায়গাটি পড়েছিলো। কোন কাজে আসতো না। কিন্তু গতবছর বারসিক’র সহায়তায় সেই জায়গাটিতে পুঁই শাক, কলমি, সবুজ শাক, লাল শাক, পেঁপে, লাউ, মরিচ, বেগুণসহ মৌসুমী সবজি লাগানো হয়। দিনে দিনে সেটি আরো সমৃদ্ধ হতে থাকে। ফলাফল ভালো পাওয়ায় আরিফা সেই বাগানের আরও যতœ শুরু করেন। অন্যদিকে তাঁর স্বামী সময় করে পরিচর্যা করেন বাগানের। বসতভিটায় সবজি আবাদ করায় আরিফা বেগমের বেশিরভাগ সময়েই আর কোন সবজি কিনতে হয় না। নিজ পরিবারের পুষ্টি চাহিদা পূরণ করতে পেরেছেন এবং কিছু সবজি প্রতিবেশীদের সাথে বিনিময়ও করেছেন। অন্যদিকে উদ্বৃত্ত শাকসবজি বাজারে বিক্রি করে আয়ও করেছেন। এবিষয়ে আরিফা বেগম বলেন, ‘বারসিক’র সহযোগিতায় সবজি ও বীজ পেয়েছিলাম যার জন্য সংসারে উপকার হয়েছে। এমনিতেই দোকানে করোনার জন্য বিক্রি কম। তবে সবজি আবাদ করার কারণে আমাকে নতুন করে সবজি কিনতে হয়নি। এতে আমার বেশ কাজে লেগেছে।’
আরিফা বেগমের দেখাদেখি নামোভদ্রা বস্তিতে অনেকে তাঁদের ঘরের আশপাশের পরিত্যাক্ত জায়গায় সবজি চাষ শুরু করেছেন। আরিফা বেগম নামো ভদ্রা বস্তির জন্য একজন দৃষ্টান্ত। আরিফা বেগম এসব সবজি চাষ করতে কোন ধরনের রাসায়নিক ও কীটনাশক দেন না। যার ফলে এই সবজি শরীর ও পরিবেশের জন্য কোন ক্ষতিও বয়ে আনবে না।