ঐতিহ্যবাহী রাসমেলা শুরু হচ্ছে ২ নভেম্বরে
সাতক্ষীরা থেকে ফজলুল হক
সুন্দরবন সাগরের মোহনায় দুবলার চরে ৩দিন ব্যাপী রাসমেলা শুরু হতে যাচ্ছে আগামী ২ নভেম্বর। সর্ববৃহৎ প্রাচীন রাসমেলা সুন্দরবনের দুবলার চরে অনুষ্টিত হবে।
তথ্যসুত্রে জানা যায়, ১৯২৩ সালে গোপালগজ্ঞে ওড়াকান্দ্রি হরিচাঁদ ঠাকুরের অনুসারি হরিভজন নামে এক সাধু সুন্দরবনের দুবলার চরে রাস পূর্ণিমায় পুজা-পাবনাদি অনুষ্ঠান শুরু করে। এরপর থেকে প্রতিবছর শুরু হয় রাস মেলা।শত বছরের এ ঐতিহ্যবাহী রাসমেলা সুষ্টভাবে সম্পন্ন করার জন্য আইন শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী, বন বিভাগ, আয়োজক কমিটিসহ বিভিন্ন সংস্থা নানা পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। ২ নভেম্বর বঙ্গোপসাগরের মোহনায় সুন্দরবনের দুবলার চর সমুহে রাস পূর্ণিমায় রাধাকৃষ্ণের পূজা, পূর্ণ স্নান অনুষ্ঠান অনুষ্ঠিত হবে। সন্ধ্যায় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হবে এবং পরের দিন পূজা, কীর্ত্তন, লালন ও হাসানের সংগীত অনুষ্টিত হবে। ৪ই নভেম্বর সমুদ্র স্নানের মধ্য দিয়ে রাস মেলা শেষ হবে।
সাগরের মোহনা সুন্দরবন দুবলার বিভিন্ন চরে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ঐতিহ্যবাহী রাস উৎসব নিয়ে উপকূলবাসীসহ বিভিন্ন স্থানের মানুষের মাঝে রব পড়ে গেছে। রাসমেলায় যাওয়ার জন্য পূর্ণার্থী, দর্শনার্থী ও পর্যটকদের মাঝে ব্যাপক প্রস্তুতি চলছে। রাসমেলায় নিরাপদে যাওয়ার জন্য সুন্দরবন পশ্চিম বন বিভাগ আটটি পথ নির্ধারণ করেছে। এ সকল পথে বন বিভাগ, র্যাব,পুলিশ, বিজিবি ও কোস্টগার্ড টইল দল দর্শনার্থীদের নিরাপত্তার জন্য সর্বদা নিয়োজিত থাকবে বলে জানা গেছে।
অনুমোদিত পথগুলো হল- বুড়িগোয়ালিনী, কেবাদক থেকে বাটুলানদী-বলনদী-পাটকোষ্টা হয়ে হংসরাজ নদী হয়ে দুবলার চর। কদমতলা থেকে ইছামতি নদী, দোবেকী হয়ে আড়পাঙ্গাশিয়া-কাটাদোবেকী হয়ে দুবলার চর। কৈখারী স্টেশন হয়ে মাদারগাং, খোপড়াকালী ভাড়ানী, দোবেকী হয়ে আড়পাঙ্গাশিয়া-কাগাদোবেকী হয়ে দুবলার চর। কয়রা-কাশিয়াবাদ,খাসিটানা, বজবজ হয়ে আড়–য়া শিবসা-শিবসা নদী-মরজাত হয়ে দুবলার চর। নলিয়ান স্টেশন হয়ে শিবসা-মরজাত নদী হয়ে দুবলার চর। ঢাংমারী/চাঁদপাই স্টেশন হয়ে পশুর নদী দিয়ে দুবলার চর, বগী-বলেশ্বর-সুপতি স্টেশন-কচিখালী- শেলার চর হয়ে দুবলার চর। শরণখোলা স্টেশন-সুপতি স্টেশন-কচিখালী-শেলার চর হয়ে দুবলার চর।
জানা গেছে, দর্শনার্থী ও তীর্থযাত্রীরা ২রা নভেম্বর থেকে ৪ঠা নভেম্বর এ তিন দিনের জন্য অনুমতি প্রদান করা হবে এবং প্রবেশের সময় এন্ট্রি পথে নিদিষ্ট ফি প্রদান করতে হবে। দর্শনার্থীদের সুন্দরবনে প্রবেশের সময় জাতীয় পরিচয়পত্র অথবা ইউপি চেয়ারম্যানের নিকট থেকে প্রাপ্ত সনদপত্র সাথে রাখতে হবে। পরিবেশ দূষণ করে এমন বস্তু,মাইক বাজানো, বাজী ফুটানো থেকে বিরত থাকতে হবে।
তথ্যসুত্রে জানা যায়, রাসমেলায় পূর্ণিমা তিথিতে চরে নির্মিত মন্দিরে রাধাকৃষ্ণ,কমল কামিনি ও বনবিবির পূজা অনুষ্টিত হবে। পূর্ণিমা পূণ্য তিথিতে সকালে সাগর ঢেউয়ে পূ¯œান্নের জন্য লক্ষাধিক নারী ও পুরুষ বিভিন্ন ধরণের প্রসাদ নিয়ে মানত ও মনোবাসনা পূণ্যের জন্য চরে সারিবদ্ধ হয়ে বসবে। সাগরের ঢেউয়ের ¯œান শেষে সকল দর্শনার্থীরা বাড়ি ফেরা শুরু করবে। এ বছর ১৩৩ তম রাসমেলা অনুষ্টিত হবে। এ মেলায় ১০/১২ লক্ষাধিক লোকের সমাগম হবে বলে আশা করা যাচ্ছে।