সাম্প্রতিক পোস্ট

বিশ্ব মেছো বিড়াল দিবসে বন্য ও জলাভূমি সুরক্ষার তাগিদ

নেত্রকোনা থেকে মো. অহিদুর রহমান

বিশ্ব মেছো বিড়াল দিবস উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, পরিবেশ অধিদপ্তর, বারসিক, সেভ দ্যা এনিমেলস অব সুসং, শিক্ষা-সংস্কৃতি-পরিবেশ ও বৈচিত্র্য রক্ষা কমিটি নেত্রকোনা যৌথভাবে আলোচনা সভা ও র‌্যালির আয়োজন করে। নেত্রকোনা জেলা প্রশাসন সম্মেলন কক্ষে এই প্রথমবার বিশ্ব মেছো বিড়াল দিবস উদযাপিত হয়। এ বছরের প্রতিপাদ্য ছিল জনগণ যদি হয় সচেতন, মেছো বিড়াল হবে সংরক্ষণ”

আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সুসময় সরকার, সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আসামা বিনতে রফিক, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সজল কুমার সরকার, বারসিকের আঞ্চলিক সমন্বয়কারী মো. অহিদুর রহমান, বিএনপির জেলা যুগ্ম আহ্বায়ক এস.এম. মনিরুজ্জামান দুদু, আব্দুর রহমান ফাউন্ডেশনের সভাপতি দিলওয়ার খান, বৃক্ষপ্রেমিক আবদুল হামিদ কবিরাজ, বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক নাফিউর রহমান খান পাঠান, সেভ দ্যা এনিমেলস অব সুসং-এর সভাপতি সাংবাদিক রিফাত আহমেদ রাসেল, পরিবেশবিদ ফাইম রহমান খান পাঠান প্রমুখ।

আলোচনায় বক্তারা বলেন, বনভূমি ও জলাভূমির পরিমাণ কমে যাওয়ায় মেছো বিড়ালের আবাসস্থল সংকুচিত হচ্ছে এবং খাদ্যের অভাব দেখা দিচ্ছে। ফলে তারা খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে প্রবেশ করে মানুষের গৃহপালিত মুরগি ও হাঁস শিকার করছে, যার কারণে মানুষ তাদের আক্রমণ করে হত্যা করছে। অথচ মেছো বিড়াল একটি নিরীহ প্রাণী, পরিবেশের বন্ধু এবং বাস্তুতন্ত্রের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এ প্রাণী খাদ্যশৃঙ্খল বজায় রাখতে সহায়তা করে। প্রকৃতির এই উপকারী প্রাণী রক্ষায় মানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি আইনের কঠোর প্রয়োগ নিশ্চিত করতে হবে।

বারসিকের পক্ষ থেকে আঞ্চলিক সমন্বয়কারী নেত্রকোনা অঞ্চলের বিলুপ্তপ্রায় ও বিপন্ন প্রাণীদের একটি তালিকা উপস্থাপন করেন। তিনি জানান, এই অঞ্চলে গুইসাপ, বেজি, লজ্জাবতি বানর, সজারু, কাছিম, কচ্ছপ, শুশুক, চশমাপরা হনুমান, বন মোরগ, ভোঁদর, কাঠবিড়ালী, শকুন, পেঁচা, বনরুই, নীলগাই, বন্য শুকর, বন্য হাতি, অজগর, খরগোশসহ বিভিন্ন বন্যপ্রাণী দেখা যেত। তবে এর মধ্যে লজ্জাবতি বানর, কাছিম, চশমাপরা হনুমান, বাঘডাস, বনরুই, বনগরু, হুইট্টা হরিণসহ প্রায় ১০টি প্রাণী ইতোমধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে এবং বাকি প্রাণীগুলোও সংকটাপন্ন অবস্থায় রয়েছে।

আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর সঙ্গে সমন্বয় করে মেছো বিড়াল সংরক্ষণের দীর্ঘমেয়াদি পদক্ষেপ গ্রহণের তাগিদ দেন বক্তারা। তারা বলেন, আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে মেছো বিড়াল সংরক্ষণ করা সম্ভব, যা পরিবেশ ও জীববৈচিত্র্যের ভারসাম্য রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।

আমাদের মনে রাখতে হবে, প্রকৃতির প্রতিটি প্রাণীই পরিবেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, মেছো বিড়ালও তার ব্যতিক্রম নয়। তাই পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় এবং নিজেদের স্বার্থেই এ প্রাণীকে টিকিয়ে রাখতে হবে। উপকারী এই বন্যপ্রাণী রক্ষায় সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টা প্রয়োজন।

happy wheels 2

Comments