পেঁপে কোষ্ঠ্যকাঠিন্যের মহৌষধ
ভাঙ্গুড়া (পাবনা) থেকে মো. মনিরুজ্জামান ফারুক
পেঁপে একটি অতি পরিচিত ফল। শুধু ফল নয় একটি সুস্বাদু পুষ্টিকর সবজিও বটে। পেঁপে কাচা পাকা উভয়ই খাওয়া যায়। পেঁপে কাচা খেলে হয় সবজি আর পাকা খেলে হয় ফল। বাংলাদেশের সর্বত্র এর ব্যাপক চাষ হয়। বিশেষ করে দেশের গ্রামাঞ্চলের প্রায় অধিকাংশ বসত বাড়িতেই পেঁপে গাছ দেখা যায়। বাংলাদেশ ছাড়াও ভারত, আমেরিকা, ব্রাজিল প্রভৃতি দেশে পেঁপের চাষ হয়। কম বেশি সারাবছরই পেঁপে পাওয়া যায়।
পেঁপে একটি ছোট আকৃতির অশাখ বৃক্ষবিশেষ। এর লম্বা বোটাঁযুক্ত ছত্রাকার পাতা বেশ বড় হয় এবং সর্পিল আকারে কান্ডের উপরি অংশে সজ্জিত থাকে। পেঁপে গাছ সাধারণত ৩ থেকে ৭ ফুট পর্যন্ত লম্বা হয়। কাঁচা ফল সবুজ, পাকা ফল হলুদ বা পীত বর্ণের হয়ে থাকে। এর ইউনানী নাম পাপিতা, আরানড খরবূযা এবং আয়ুর্বেদিক নাম অমৃততুম্বী।
আমাদের দেশে সাধারণত দেশি ও হাইব্রিড এই দুই জাতের পেঁপে চাষ হয়। হাইব্রিড জাতের চেয়ে দেশি জাতের পেঁপে খেতে বেশি সুস্বাদু। পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ পেঁপে খেয়ে সহজেই শরীরের পুষ্টিচাহিদা মেটানো সম্ভব। এছাড়া বসত বাড়ির আঙ্গিনা, রাস্তার ধার ও পুকুর পাড়ে ফেলে রাখা জায়গায় পেঁপে চাষ করে আর্থিকভাবেও লাভবান হওয়া যায়। পেঁপে পথ্য হিসেবে অতুলনীয়। যাদের কোষ্ঠ্যকাঠিন্য রয়েছে এটি তাদের জন্য এক মহৌষধ। নিয়মিত ভাতের সাথে পেঁপে ভর্তা খেলে সহজেই কোষ্ঠ্যকাঠিন্য থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। এছাড়া রক্ত কাশে, রক্তার্শে, মূত্রনালীর ক্ষতে, দাদ কৃমি প্রভৃতি রোগে এটি কার্যকর। পাকা পেঁপে অর্শরোগে বিশেষ কাজ করে। পেঁপেতে প্রচুর পেপেন এনজাইম আছে যা মানুষের পাকস্থলীতে আমিষ হজমে সাহায্য করে।
জানা গেছে, একটি ১০০ গ্রাম পেঁপেতে রয়েছে, আমিষ ০.৬ গ্রাম, স্নেহ ০.১ গ্রাম, খনিজ পদার্থ ০.৫ গ্রাম, ফাইবার ০.৮ গ্রাম, শর্করা ৭.২ গ্রাম, সোডিয়াম ৬.০ মিলিগ্রাম, পটাসিয়াম ৬৯ মিলিগ্রাম, আয়রন ০.৫ মিলিগ্রাম খাদ্যশক্তি ৩২ কিলোক্যালরি ও ভিটামিন সি ৫৭ মিলিগ্রাম। এ ব্যাপারে পাবনা জেনারেল হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার (হোমিওপ্যাথ) ডা. জাকারিয়া খান মানিক বারসিকনিউজকে বলেন, ‘পেঁপেতে রয়েছে নানা পুষ্টিকর উপাদান। পরিপাকতন্ত্রের ওপর এর বিশেষ কার্যক্ষমতা রয়েছে। যাদের কোষ্ঠ্যকাঠিন্য রয়েছে নিয়মিত কাচা অথবা পাকা পেঁপে খেলে সহজেই নিরাময় লাভ সম্ভব।’
পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলা উপ-সহকারি কৃষি কর্মকর্তা তারিকুল ইসলাম বারসিকনিউজকে বলেন, ‘পেঁপে চাষে স্থানীয় কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করতে কৃষি বিভাগ কাজ করে চলেছে।’