‘শতবাড়ি’র মাধ্যমে সামাজিক সম্প্রীতি বৃদ্ধি পাবে

সিংগাইর, মানিকগঞ্জ থেকে শাহীনুর রহমান
‘প্রতি ইঞ্চি মাটি, গড়বো সোনার ঘাঁটি’-স্লোগানের আলোকে করোনা সংকট মোকাবেলায় বছরজুড়ে গ্রামীণ উন্নয়ন কর্মসূচির আওতায় সিংগাইর উপজেলার বলধারা ইউনিয়নের নবগ্রামে সম্প্রতি ‘শতবাড়ি উন্নয়ন’ বিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বলধারা ইউনিয়নের শতবাড়ি তৈরির জন্য বাছাইকৃত নবগ্রাম, কাস্তা, গোলাই, বাংগালা এই চারটি গ্রামের ১২ জন কৃষক কৃষাণিদের নিয়ে সভাটি অনুষ্ঠিত হয়।


মানিকগঞ্জ জেলা কৃষি উন্নয়ন সংগঠনের সভাপতি মো. করম আলী মাষ্টারের সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন বলধারা ইউনিয়ন কৃষি উন্নয়ন সংগঠনের সভাপতি আব্দুল লতিফ, জেলা নারী উন্নয়ন কমিটির সাধারণ সম্পাদক সেলিনা বেগম, লেমুবাড়ি বিনোদা সুন্দরী বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক ও প্রকৃতি প্রেমিক মো. আলামিন হোসেন, জৈব সৈার ও জৈব বালাইনাশক সংরক্ষণকারী কৃষক মহাদেব মন্ডল, প্রবীণ ও অভিজ্ঞ কৃষক সন্তোষ মন্ডল, মো. ইউসুফ আলী, ভানু বেগম প্রমুখ।এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন কৃষাণি মনোয়ারা বেগম কৃষক আব্দুল খালেক, পরেশ মন্ডল ও বারসিক কর্মকর্তা সারমিন আক্তার প্রমুখ।


বারসিক কর্মকর্তা শাহীনুর রহমানের সঞ্চালনায় জেলা কৃষি উন্নয়ন সংগঠনের সভাপতি মো. করম আলী মাষ্টার বলেন, ‘ছোট বেলায় দেখেছি মানুষ মানুষের বাড়ি যেত, সামাজিক কাজে সকলেই সমান অংশগ্রহণ করতো কিন্তু আধুনিকতার ছোঁয়ায় আজ সামাজিক সম্পর্কও চির ধরেছে। শতবাড়িগুলোর মাধ্যমে সামাজিক সম্প্রীতি বৃদ্ধি পাবে। কাজেই শতবাড়িগুলো যেন অন্য মানুষের কাছে আদর্শ হয়। সেভাবে সকলে মিলে দৃষ্টিন্দনভাবে বাড়িগুলো তৈরি করবো। এভাবে শতবাড়িগুলো হবে মানুষের শিক্ষণ কেন্দ্র।’


আলোচনায় আলামিন হোসেন বলেন, ‘প্রত্যেক শিশু ও বাড়ির প্রবীণ মানুেেদর প্রচুর পরিমাণে মৌসুমি ফল নিয়মিত খাওয়ানো প্রয়োজন। এতে তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি পাবে। আমি আমার বাড়িতে প্রায় সব রকম ফলের গাছ রোপণ করেছি যেন নিরাপদ পুষ্টি বিষমুক্ত ফল খেতে পারি।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিটি বাড়িকেই হতে হবে একটি সামাজিক সম্প্রীতি ও মানবিক বাড়ি। আমি পথচারীদের জন্য নিরাপদ ও আর্সেনিকমুক্ত পানি পান করার জন্য রাস্তার পারে পানির ট্যাব তৈরি করে দিয়েছি যা সবার জন্য উন্মুক্ত। তাছাড়া রাতে মানুষের নিরাপদ চলাচলের জন্য আলোর ব্যবস্থা করেছি।’


এর আগে বারসিক কর্মকর্তা বিমল রায় শতবাড়ি উন্নয়ন মডেল এর প্রেক্ষাপট, লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সম্পর্কে আলোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘কাউকে বাদ দিয়ে নয়; সবাইকে নানাভাবে যুক্ত করেই এই শতবাড়ির উন্নয়ন মডেল তৈরি করা হয়েছে। শতবাড়ি উন্নয়ন করোনাকালি সংকট মোকাবেলায় অবদান রাখবে। তাছাড়া প্রতিটি বাড়িই হবে একটি পুষ্টি বাড়ি, পুষ্টি ব্যাংক। করোনা পরবর্তী পুষ্টির চাহিদা পূরণে বাড়িগুলো সক্রিয় থাকবে। পাড়া প্রতিবেশী সকলেই শতবাড়ি থেকে উপকৃত হবে।’

happy wheels 2

Comments