সাম্প্রতিক পোস্ট

উদ্যোগী সখিনা খাতুন সংসারের চাকা সচল করলেন

সাতক্ষীরা শ্যামনগর থেকে চম্পা মল্লিক
উপকূলীয় অঞ্চলের মুন্সিগঞ্জ ইউনিয়নের কচুখালী গ্রামের সখিনা বেগম (৩৭)। স্বামী : রাশিদুল কাগজী (৪৫)। ২০০০ সালে বিয়ে হয় তাদের। দুই ছেলে ও এক মেয়ে সন্তান তাদের। সখিনার এবং রাশিদুলের বাড়ি আবার একই গ্রামে। রাশিদুল ছিলেন তখন বেকার ছিলেন। তাঁর সম্পত্তি বলতে ছিলো শুধু বসতঘরটি। সে সময় একটি সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে যুক্ত ছিলেন তিনি। গান, নাটক করতে ভালোবাসতেন রাশিদুল। বিভিন্ন শহর ও গ্রামে চলে যেতেন এই গান বাজনার কাজে। কখনো কিছু টাকা পেতেন আবার কখনো বা খালি হাতে ফিরে আসতেন। তবে এটাতে কোনো আপত্তি ছিলোনা সখিনার। কিন্তু কোনো আয় না থাকলে সংসার কিভাবে চলবে, বাচ্চাদেরকে কিভাবে মানুষ করবে সেটাই বারবার বুঝাতে চেয়েছিলেন সখিনা।

সংসার কিভাবে চলছে বা চলবে কিছুই খেয়াল করতেন না সখিনার রাশিদুল। এই পরিস্থিতিতে কোনো উপায় না দেখে এবং সন্তানদের মঙ্গলের কথা ভেবে সখিনা তাঁর চাচার কাছ থেকে দর্জি কাজটি শিখে নেন এবং টুকটাক কাজটি চালাতে থাকেন। বছর খানেকের মধ্যে এই কাজটি থেকে সখিনা ভালো একটি আয়ের উৎস খুঁজে পান। এরপর তিনি তার বাবার বাড়ি থেকে ১০ কাঠা জমি পান। সেখানে সখিনা তার নিজের আয়ের টাকা এবং বাবার বাড়ির সহযোগিতায় বাড়ি তৈরি করেন। এরপর স্বামীর উপর ভরসা না করে সখিনা এই ভিটাতে বিভিন্ন ধরনের সবজি চাষ ও প্রাথমিকভাবে কিছু হাঁস-মুরগিও পালতে থাকেন। সম্পূর্ণ সংসারটি চলতে থাকে সখিনার আয়ের উপর দিয়ে।

filter: 0; jpegRotation: 0; fileterIntensity: 0.000000; filterMask: 0; module:1facing:0; hw-remosaic: 0; touch: (-1.0, -1.0); modeInfo: ; sceneMode: Auto; cct_value: 0; AI_Scene: (-1, -1); aec_lux: 82.0; hist255: 0.0; hist252~255: 0.0; hist0~15: 0.0;


ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা, হাতখরচ, চিকিৎসা খরচসহ সবই বহন করতেন সখিনা। একপর্যায়ে রাশিদুল তার স্ত্রীকে কঠিন পরিশ্রম ও সংসারের যাবতীয় দায়িত্ব পালন করতে দেখে তিনি তার পাশে থেকে সহযোগিতা করতে শুরু করেন। নিজের ভুল বুঝতে পেরে এখন তিনি তার ভবঘুরে জীবনটাকে বদলে নিয়ে সংসারের প্রতি মনোযোগ দিয়েছেন। এখন অধিকাংশ সময়টা তিনি তার স্ত্রীকে কৃষিকাজসহ পরিবারের বিভিন্ন কাজে সহযোগিতা করেন।
এভাবে দিনে দিনে তাদের বাড়িটি নানা বৈচিত্র্যে ভরে উঠছে। বর্তমানে বাড়িটিতে রয়েছে ২৫০টি ক্যাম্বেল হাঁস, ৯০০টি লাল/ফার্মের মুরগি, ৬টি স্থানীয় জাতের মুরগি, একটি ছাগল, একটি গরু, স্থানীয় জাতের মাছের পুকুর ও নানা রকমের ফল ও সবজি। এছাড়াও সখিনা তিনি প্রতিমাসে তার দর্জি কাজ থেকে ৩ থেকে ৫ হাজার টাকা আয় করেন। আগের তুলনায় পরিবারটিতে স্বচ্ছলতা ফিরেছে এবং সকলেই অনেক সুখে শান্তিতে দিন অতিবাহিত করছেন।


সখিনার কঠিন প্রচেষ্টা ও সফলতা দেখতে গ্রামের অনেক নারী তাঁর বাড়িতে আসেন এবং পরামর্শ নেন। বাজারের ওপর সখিনার পরিবার খুব বেশি নির্ভরশীল নয়। তিনি বিশ^াস করেন, পরিবারের সকলের প্রতি সকলের যদি দায়িত্ব, মায়া, মমতা ভালোবাসা থাকে তাহলে সেই পরিবার কখনো পিছিয়ে থাকে না। তাই এভাবে সখিনা চান, পরিবারের সকলের ভালোবাসা ও সহযোগিতা এবং সঠিক পরামর্শ ও আলোচনার মাধ্যমে জীবনের অনেকটা দূর এগিয়ে যেতে।

happy wheels 2

Comments